আরবিসি ডেস্ক : এবার এক সুতোয় বাঁধা পড়তে চলেছে দুই বাংলা। শিগগির শিলিগুড়ির নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) থেকে ঢাকার মধ্যে যাত্রীবাহী তৃতীয় ট্রেন মিতালী এক্সপ্রেস পথচলা শুরু করবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকারের রেল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে ট্রেনের সময়সূচি ও ভাড়া সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা দ্রুত এই ট্রেন সেবা চালুর দাবি জানিয়ে আসছেন। ফলে ভারতের উত্তরবঙ্গে পর্যটনের জোয়ার আরও বাড়বে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
ভারতের উত্তরবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ স্থাপনে শিলিগুড়ির নিউ জলপাইগুড়ি থেকে বাংলাদেশের ঢাকা পর্যন্ত রেল চলাচলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দুই দেশের সরকার। গত বছরই এই ট্রেন পরিষেবা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ওই সময় পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণা হওয়ায় তা স্থগিত হয়।
কিন্তু তারপর থেকে করোনা সংক্রমণের কারণে এই ট্রেন পরিষেবা চালুর উদ্যোগ থমকে যায়। অবশেষে কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকায় আবারও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ স্থাপনের তৃতীয় ট্রেন মিতালী এক্সপ্রেস চালানোর ব্যাপারে তোড়জোড় শুরু করেছে দু’দেশের সরকার।
তবে ভারতের রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। এমনিতেই উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়িতে প্রতি বছরই ভ্রমণে আসেন অনেক বাংলাদেশি। এখন চিকিৎসার প্রয়োজনে এবং উচ্চ শিক্ষার জন্যও বাংলাদেশ থেকে অনেকে শিলিগুড়িতে আসছেন। এই ট্রেন পরিষেবা চালু হলে এ ধরনের মানুষের অনেকটাই সুবিধা হবে।
আগে থেকেই ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে দুটি ট্রেন চালু রয়েছে। একটি মৈত্রী এবং অন্যটি বন্ধন এক্সপ্রেস। তবে এরপর এ দু’দেশের মধ্যে এটি হবে তৃতীয় যাত্রীবাহী ট্রেন।
মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেসের মতো উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগকারী প্রথম ট্রেনটি মিতালি এক্সপ্রেসও সফল হবে বলে আশা দু’দেশের। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত মোট যাত্রাপথ ৫৩০ কিলোমিটার। এই পথ অতিক্রম করতে সময় লাগবে ৯ ঘণ্টা। পথে বাংলাদেশের রয়েছে ৪৪৬ কিলোমিটার পথ বাকিটা ভারতের। এই পথে বাংলাদেশে পড়বে পার্বতীপুর, টাঙ্গাইলসহ মোট ১৫টি রেলস্টেশন। কিন্তু ট্রেন কোথাও থামবে না।
তবে বাংলাদেশের রেলের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ট্রেনের এই সফরে রয়েছে হলদিবাড়ি, চিলাহাটি স্টপেজ। প্রতি সপ্তাহে দুদিন করে এই ট্রেন চলাচল করবে। ভারতে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে সপ্তাহে রবি ও বুধবার ছাড়বে এবং বাংলাদেশের ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে সোম ও বৃহস্পতিবার ছাড়বে।
বাংলাদেশ থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত বাংলাদেশে এই ট্রেনের ভাড়া ধার্য করা হয়েছে এসি বার্থে ৪ হাজার ৯০৫ টাকা, এসি সিটে ৩ হাজার ৮০৫, এসি চেয়ারে জনপ্রতি ভাড়া ধার্য করা হয়েছে ২ হাজার ৭০৫ টাকা।
হিমালয়ান হসপিটালিটি অব ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, প্রতি বছরই ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রচুর ভারতীয় যায় এবং বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পর্যটক উত্তরবঙ্গে আসে। এই ট্রেন পরিষেবা চালু হলে তাদের অনেকটাই সুবিধা হবে।
পাশাপাশি প্রতি বছর উত্তরবঙ্গে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পর্যটক উত্তরবঙ্গের পাহাড়, ডুয়ার্স অঞ্চল এলাকায় ভ্রমণে আসে। তবে এক বছর ধরে শুনছি এই ট্রেন পরিষেবা চালু হবে তাই আমরা পর্যটন ব্যবসায়ীরা চাই শিগগির ট্রেন যাত্রার দিন ঘোষণা করা হোক।
অন্যদিকে, এ প্রসঙ্গে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা সব্যসাচী দে বলেন, এখনো ভারতের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত কোনো বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। তবে আশা করছি শিগগির ভারতীয় রেল এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তর এই ট্রেনের যাত্রা নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করবে।
আরবিসি/২১ মার্চ/ রোজি