স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার সোনাডাঙ্গা ইউনিয়নের শেরকোল শিমলা উচ্চ বিদ্যালয়ের কক্ষ গ্রামীণ ব্যাংকের কাছে ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কক্ষটি ভাড়া দিয়ে লাভবান হলেও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি এলাকার স্বার্থে ও প্রতিষ্ঠানের সুবিধার জন্য একটি কক্ষ ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২০০৬ সাল থেকে শেরকোল শিমলা উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ গ্রামীণ ব্যাংক সোনাডাঙ্গা শাখাকে ভাড়া দেওয়া হয়। ভাড়া নেওয়ার পর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ লোহার গ্রিল দিয়ে বড় আকৃতির কক্ষটি ঘিরে নিয়ে তাঁদের প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন।
এ জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ব্যাংক মাসিক ৬ হাজার টাকা ভাড়া পরিশোধ করে। কিন্তু বিদ্যালয়ের কক্ষ সংকুলান না হওয়ার কারণে গত ২০১৫ সালে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে আরেকটি ভবন নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ৩৭৯ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উভয় প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চলছে। ভবনের দেয়ালে বড় অক্ষরে গ্রামীণ ব্যাংক, সোনাডাঙ্গা শাখা লেখা রয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংকের অফিস কক্ষের পাশের কক্ষগুলোতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। এ ছাড়া ব্যাংকে ঋণ দেওয়াসহ বিভিন্ন দাপ্তরিক কার্যক্রম চলার দৃশ্য চোখে পড়ে। নারীরা ব্যাংকে এসে ঋণ কার্যক্রম সেরে চলে যাচ্ছেন।
বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তাদের শ্রেণিকক্ষের পাশে ব্যাংক থাকায় পাঠদানে সমস্যা হয়। বিভিন্ন রকম বিড়ম্বনায় পড়তে হয় তাদের।
স্থানীয় কয়েকজন অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চলা বেমানান। আশপাশে মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় বাধ্য হয়ে আমাদের সন্তানদের এখানেই পড়াতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে গ্রামীণ ব্যাংক সোনাডাঙ্গা শাখার ব্যবস্থাপকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয় কর্মকর্তা জামিলুর রহমান বলেন, আমরা ভাড়া বাবদ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে মাসিক ছয় হাজার টাকা পরিশোধ করি। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের কক্ষটিতে ব্যাংকের কার্যক্রম চলছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ কক্ষ ভাড়া দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এলাকার লোকজনের দাবি ও পরামর্শে একটি বড় কক্ষ ভাড়া দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ভাড়া নেওয়া কক্ষ ঘিরে নেওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের সমস্যা হয় না। প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, ভাড়ার টাকা প্রতিষ্ঠানের কাজে ব্যয় করা হয়।
নাসিরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও সোনাডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজাহারুল হক বলেন, ওই বিদ্যালয়ের কক্ষে গ্রামীণ ব্যাংক অফিস আছে সেটা অনেক বছর আগে থেকে জানি কিন্তু কি কারনে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ এমন কাজ করেছেন সেটা জানি না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম মাহমুদ হাসান বলেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এভাবে কক্ষ ভাড়া দিতে পারেন না। তাঁরা কেনো ভাড়া দিয়েছেন তা জানতে চাওয়া হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরবিসি/০৭ মার্চ/ রোজি