স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীতে বাংলাদেশ-ভারত ৫ম সাংস্কৃতিক মিলনমেলা-২০২২ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ৪ দিনের মিলনমেলায় অংশগ্রহণ শেষে মঙ্গলবার নিজ দেশে ফিরে গেলেন ভারতীয় অতিথিরা। জানালেন রাজশাহীর আতিথেয়তা ও সৌন্দর্য্যরে অসাধারণ মুগ্ধতার কথা। সাংস্কৃতিক মিলনমেলার আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটনের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেনও তারা।
উল্লেখ্য, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পৃষ্ঠপোষকতায় দুটি দেশের এই সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের আয়োজন করে ‘ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ।’ গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীতে অতিথিরা। সেদিন স্থলবন্দর এবং বিমানবন্দরেই উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয় অতিথিদের। এরপর শনিবার থেকে শুরু হয় উৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা। চার দিনের এ অনুষ্ঠান শেষে মঙ্গলবার ভারতে ফিরে গেলেন তারা। মঙ্গলবার ভারতের ত্রিপুরার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল, সাহেব চ্যাটার্জী সহ কয়েকজন অতিথিকে শাহ মখদুম বিমানবন্দরে বিদায় জানান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা।
ভারতের ত্রিপুরার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (জেল, অগ্নিনির্বাপণ ও জরুরি সেবা) রামপ্রসাদ পাল বলেন, আমের মৌসুমে এলে আর আম খাওয়া লাগত না। রাজশাহীর মানুষের আচার-ব্যবহার আমের চেয়েও মিষ্টি। এই আতিথেয়তার স্বাদ নিয়ে গেলাম। যতদিন বাঁচব, মনে থাকবে। রাজশাহীর মানুষের আতিথেয়তা ও ভালোবাসা আমরা কখনো ভুলবো না।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের ভারতবর্ষে তো বহু সংস্কৃতি, বহু ভাষা, বহু রকম মানুষ। কিন্তু আমাদের ত্রিপুরা, যেখানে বেড়ে উঠেছি তার সঙ্গে বাংলাদেশের একটুও পার্থক্য নেই। পার্থক্য যদি বলি, তাহলে এখানকার আতিথেয়তার কথাই বলতে হয়। এটা অসাধারণ।’
তিনি আরো বলেন, আমাদের সাথে এ দেশের ভাষা, সংস্কৃতিসহ নানা ক্ষেত্রে অনেক মিল রয়েছে। রাজশাহীতে আসার পর থেকে যে আতিথেয়তা ও আপ্যায়ন পেয়েছি, তা ভাষায় প্রকাশ করার নয়। সবকিছু মিলে আমি মুগ্ধ। রাজশাহী অনেক পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর শহর।
ভারতের দৈনিক আজকাল পত্রিকার সাংবাদিক ও আজকের পত্রিকার কলকাতা প্রতিনিধি তরুণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজশাহী অনেক সুন্দর, শুধু খবরের কাগজেই পড়েছি। নিজের চোখে এবার দেখে গেলাম এ শহর কতটা সাজানো-গোছানো আর সুন্দর।’
রাজশাহী এসে মুদ্ধতার কথা জানিয়েছেন কলকাতার অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশটাকেই আমি অনেক ভালবাসি। রাজশাহী শহরে এসে তো আমি অভিভূত। এত আয়োজন! এত আতিথেয়তা সত্যিই অসাধারণ। এক কথায় আমি সত্যিই মুগ্ধ।’
ভারতের কবি, লেখক ও সংগীতশিল্পী মঞ্চ নবনীতা রায় চৌধুরী বললেন, ‘এই মিলনমেলায় এসে বুঝলাম রাজশাহীতে সংস্কৃতির চর্চা হয়। এখানকার মানুষ সংস্কৃতিপ্রিয়। পুরনো শহর বলেই হয়ত এখানকার মানুষ সংস্কৃতিপ্রিয়। সত্যি বলতে কি, কোন কালচারাল অনুষ্ঠানে যে এত মানুষ হাজির হয় তা এই প্রথম রাজশাহীতেই দেখলাম।’
আর টেকনো ইন্ডিয়ার কর্মকর্তা তপন কুমার ঘোষ বলেন, ‘রাজশাহী শহরের মানুষের ব্যবহার অসাধারণ। গাড়ি থেকে যতটুকু দেখলাম, তাতে খুব পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন একটা শহর দেখলাম। তিন দিন অসাধারণভাবে কেটে গেল। এখানকার লোকেরা এত ভাল, অতিথি পরায়ন তা বুঝলাম। খুবই মধুর একটা স্মৃতি থেকে গেল জীবনে। এটা সব সময় মনে পড়বে।’
অনুষ্ঠানে এসে যে শুধু ভারতীয় অতিথিরাই মুগ্ধ হয়েছেন তা নয়। মুগ্ধ দেশের সংস্কৃতিকর্মী ও শিল্পীরা। রোববার রাতে সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চেই সে কথা বলে গেলেন চিরকুট ব্যান্ডের ভোকাল সুমি। বললেন, ‘রাজশাহী এসে স্বল্প সময়েই এত আতিথেয়তা, ভালবাসা পেলাম যে এ শহরটাকে ‘ভালবাসার রাজধানী’ ঘোষণা করা উচিত।’
আরবিসি/০১ মার্চ/ রোজি