স্টাফ রিপোর্টার : এবার দুই কৃষকের লাল গাামছার সংকেতে দুর্ঘটনার কবল থেকে রক্ষা পেল রাজশাহী-ঢাকাগামী অন্ত:নগর বনলতা এক্সপ্রেস। মঙ্গলবার সকালে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার রামচন্দ্রপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এলাকায় রেললাইন ভাঙা দেখতে পেয়ে লাল গামছা টাঙিয়ে ট্রেনটিকে দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করেন স্থানীয় দুই কৃষক।
রাজশাহী রেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ ট্রেনটিতে প্রায় সাড়ে আটশো জন যাত্রী ছিলেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে জিয়াউর রহমান ও হাবলু মিয়া নামে স্থানীয় দুই কৃষক রেললাইনের পথ দিয়ে কৃষি কাজে যাচ্ছিলেন। এ সময় তারা লাইনের এক অংশে ভাঙা দেখতে পান। সকালে রেললাইন দিয়ে অনেক ট্রেন চলাচল করে। এ জন্য তারা তাৎক্ষণিকভাবে বুদ্ধি করে লাইনের মাঝখানে নিজেদের লাল গামছা টাঙিয়ে দেন। এরপরও সেখানে বনলতা এক্সপ্রেস টেনটি চলে আসে। তবে রেললাইনে লাল গামছাও সংকেট দেখে চালক ট্রেনটি থামিয়ে দেন। এরপর প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে রেল লাইন মেরামত করার পর ট্রেন চলাচল আবার স্বাভাবিক হয়।
পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ‘স্থানীয় দুই কৃষকের বুদ্ধিমত্তায় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে ঢাকাগামী বনলতা এক্সপ্রেস। লাইন মেরামত করার পর বর্তমানে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজশাহীর চারঘাট ও বাঘা উপজেলার রেললাইনের ত্রুটির কারণে মাঝে মধ্যেই ট্রেন দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়। এতে স্থানীয়রা ও ট্রেন যাত্রীরা চরম উৎকণ্ঠা মধ্যে থাকেন। স্থানীয়রা জানান, ওই এলাকায় প্রতি সপ্তাহেই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে ট্রেন। ভাগ্যগুণে যাত্রীরা বেঁচে গেলেও যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় রকমের প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও সমাজকর্মী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘রাজশাহীর চারঘাট ও বাঘা উপজেলার রেললাইনগুলো ব্রিটিশ আমলে তৈরি। শতবর্ষী এই লাইনে সারা দিনে ৩২ বার ট্রেন চলাচল করে। অনেক সময় রেললাইনে বেশি চাপ পড়ায় লাইনগুলোর বিভিন্ন স্থান ভেঙে যাওয়াতে ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়ছে। বড় ধরনের প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে রেল লাইনগুলো দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন।’
রাজশাহী রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী (আইএন) আবু জাফর বলেন, ‘এ এলাকার লাইনগুলো অনেক পুরোনো। স্টিলের ও কাঠের স্লিপারের কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে। কংক্রিটের স্লিপার হলে দুর্ঘটনা কমে আসবে। আমরা নতুন লাইন স্থাপনের জন্য প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে। বরাদ্দ পেলে বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রসঙ্গত, এরআগে গত ২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানীতে রেল লাইনের পাত ভাঙা থাকায় লাল কাপড়ের সংকেত দিয়ে ৫০০ গজ দূরে থামিয়ে দেওয়া হয় উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেন। ফলে ওইদিন রক্ষা পান ট্রেনের হাজারো যাত্রী। এ ঘটনায় ট্রেন রক্ষাকারী স্থানীয় গেটম্যানকে সম্মাননা প্রদানের ঘোষণা দেন রেল কর্তৃপক্ষ।
আরবিসি/১৫ ফেব্রুয়ারি/ রোজি