স্টাফ রিপোর্টার : শীতের শেষে প্রকৃতিতে এখন হাজরো ফুলের সমারোহ। এরইমধ্যে অভিষেক ঘটেছে ঋতুরাজ বসন্তের। তাইতো আগুন লেগেছে ফাল্গুনে। ফুলেল বসন্ত, মধুময় বসন্ত, যৌবনের উদ্দামতা বয়ে আনার বসন্ত আর আনন্দ, উচ্ছ্বাস ও উদ্বেলতায় মন-প্রাণ কেড়ে নেওয়ার দিনে নানা উৎসব চারিদিকে। এরই সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়েছে ভালবাসাও। তবে করোনার কারণে রঙিন বসন্ত আজ অনেকটায় ছিলো মলিন।
আগের মতো সেই বর্ণাঢ্য আয়োজন লক্ষ্য করা যায় নি রাজশাহীতে। নেই প্রাণের উচ্ছ্বাসে চলা বসন্ত বরণ উৎসব। তবে বাঙালির প্রাণের সেই বর্ণিল উৎসব রূপ নিয়েছে কেবলই আনুষ্ঠানিকতায়।
সোমবার সকাল থেকে রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজে চলে বসন্ত বরণ উৎসব। কবিতা আর গানে নেচে-গেয়ে বরণ করে নেওয়া হয় ঋতুরাজ বসন্তকে। দিনব্যাপী এ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রাণবন্ত করে তুলে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক ও অভিভাবকরা যোগ দেন সেই অনুষ্ঠানে। শহরে আর বড় কোনো আয়োজন চোখে পড়েনি।
এছাড়া করোনাকালের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ নিজ-নিজ আয়োজনে মেতেছেন। প্রাণ উজাড় করে যে যার মতো করে বসন্তকে বরণ করে নিচ্ছেন। শোভাযাত্রা, কবিতাপাঠ, নাচ আর গানের ছন্দে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের ছন্দপতনে মলিন হয়েছে বাসন্তি উৎসব। এরপরও যেন থেমে নেই বছর ঘুরে এ উপলক্ষ পাওয়া রাজশাহীর সংস্কৃতিমনা মানুষগুলোর। ফাল্গুনী উৎসবে তাই যেন লেগেছে স্বপ্নজয়ী তারুণ্যের ঢেউ। বরাবরের মতো বসন্তের মূল আকর্ষণ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, বিশেষত চারুকলায়। কিন্তু করোনার কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ। একাডেমিক কার্যক্রমও বন্ধ। কিন্তু হল খোলা থাকায় সীমিত পরিসরে শিক্ষার্থীরা বসন্তবরণের আনুষ্ঠানিকতা পালন করছেন। তাই এবারের বসন্তে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বসন্তবরণে সেই প্রাণের স্পন্দন নেই। শুকনো পাতার মড় মড় ধ্বনি ভেঙে শিক্ষার্থীরা আড্ডা-গানে দিন পার করছেন।
এদিকে সকাল গড়িয়ে দুপুর হতেই মহানগরীর বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে ঢল নামে তরুণ-তরণীসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষের। এবার বসন্তবরণ ও ভালোবাসা দিবস একই দিনে হওয়ায় ভিন্নমাত্রা পেয়েছে বাসন্তী উৎসব। মেয়েদের পরনে হলুদ রঙের শাড়ি, খোপায় গাঁদা ফুল, আবার কারও কারও খোপায় রঙিন ফুলের রিং, কারও খোপায় আবার দেখা গেছে ফুলের গাজরা। ছেলেদের পরনে হলুদ অথবা সফেদ রঙের পাঞ্জাবি। এমনি বাহারি রঙের পোশাক পরে বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে নগর যুবাদের। ফাঁকে ফাঁকে মোবাইলের ক্ষুদ্র ক্যামেরায় উঠেছে সেলফি। তাদের পাশে আছে মধ্যবয়সী নর-নারী ও কোমলমতি শিশুর দল।
সকাল থেকে রাজশাহীর বড়কুঠি পদ্মাপাড়ে, টি-বাঁধ, পদ্মা গার্ডেনসহ অন্যান্য বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে হালকা ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। কেউ বন্ধু-বান্ধবীদের নিয়ে, কেউ প্রিয়তম, আবার কাউকে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে দেখা গেছে।
আরবিসি/১৪ ফেব্রুয়ারি/ রোজি