স্টাফ রিপোর্টার : বাগমারায় মাদক নিমূলে পুলিশের অভিযান ফের জোরদার হয়েছে। পুলিশের উদ্ধৃর্তন কর্তৃপক্ষের কড়া নিদের্শে বাগমারা থেকে মাদক নিমূলে পুলিশ বিশেষ অভিযান শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
বাগমারা থানা পুলিশের তথ্য মতে, পুলিশের এসব অভিযানে চলতি বছরের জানুয়ারী মাস থেকে ফেব্রুযারি ১০ তারিখ পর্যন্ত বাগমারা থানা পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানে এ পর্যন্ত মাদক কেনাবেচা ও সেবনের অভিযোগে ২৭ জনকে আটক করা হয়েছে। দায়ের হয়েছে মাদক বিরোধী প্রায় ডজনখানেক মামলা।
এ সময়ের মধ্যে পুলিশ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে প্রায় তিন কেজির অধিক গাঁজা, তিনশ গ্রাম হেরোইন, বিশ পিচ ইয়াবা ও ৫৬ বোতল ফেন্সিডিল।
শনিবার বাগমারা থানার ওসি(তদন্ত) আফজাল হোসেন মাদক বিরোধী এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, মাদক বিরোধী পুলিশের অবস্থান আরো কঠোর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হবে। এ জন্য পুলিশের উচ্চ পর্যায় থেকে বিশেষ নির্দেশনা এসেছে বলে তিনি জানান।
চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের শুরতে মাদকের বড় চালানটি উদ্ধার করা উপজেলার মচমইল এলাকা থেকে। ওই অভিযানে নেতৃত্ব দেন বাগমারা থানার ওসি তদন্ত আফজাল হোসেন। তিনি সে সময় মচমইল থেকে প্রায় দেড় কেজি গাঁজা উদ্ধার করেন। এর আগে জানুয়ারী মাসে চকমহব্বতপুর গ্রাম থেকে আবারো দেড় কেজির মত গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এবার এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন ওসি (তদন্ত) আফজাল হোসেন।
তিনি এই উপজেলায় মাদকের বেশি কেনাবেচা ও ব্যবহার হয় তাহেরপুর ও ভবানীগঞ্জ পৌর এলাকায়। এসব ছাড়াও ইউনিয়ন গুলোর মধ্যে গনিপুর, শুভডাঙ্গা, আউসপাড়া ও গোয়ালকান্দি এলাকায় মাদকের ব্যাপকতা রয়েছে।
গত জানুয়ারি মাসে তাহেরপুরের বিষুপাড়া ও চৌকির পাড়া এলাকা থেকে ২৫ গ্রাম হেরোইন ও ১৫ পিচ ইয়াবা উদ্ধার করা হয় এবং ওই সময়ের মধ্যে ভবানীগঞ্জ চাঁনপাড়া হলপট্টি এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৫৬ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার ও তিন মাদক কারবারিকে আটক করতে সক্ষম হয়।
এ দিকে মাদক বিরোধী পুলিশের এমন অভিযানে স্থানীয় অভিভাবক মহল ও এলাকার জনপ্রতিনিধিরা কিছুটা সাধুবাদ জানালেও স্থানীয় সচেতন মহল পুলিশের এসব অভিযানকে লোক দেখানো বলেই মন্তব্য করেছেন।
তাদের মতে, বিশাল বাগমারার ১৬ টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় এখন পাড়া মহল্লায় মাদকের প্রসার দ্রুত বিস্তার লাভ করে চলেছে। তাদের মতে, বাগমারাকে মাদক পাচারের অন্যতম রুট হিসাবে ব্যবহার করে এই উপজেলার মধ্যে দিয়ে মাদকের বড় বড় চালান পাচার করা হয়।
অথচ পুলিশ দিনরাত এখানে টহল দিলেও ওই সব মাদকের বিন্দুমাত্র উদ্ধার করতে পারেনা। বিগত এক মাসের অধিক সময়ে এই বিশাল উপজেলা থেকে পুলিশ যে সামান্য পরিমান মাদক উদ্ধার করেছে তা পর্বতের মূষিক প্রসব বলেও মন্তব্য অনেকের।
অনেক অভিভাবকের মতে, করোনাকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এখানে ব্যাপক হারে স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীরাও মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। এসব মাদক নিমূলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ, অভিভাবক সহ স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যায়ে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
এসব বিষয়ে বাগমারা থানার ওসি (তদন্ত) আফজাল হোসেন বলেন, বাগমারাকে মাদক মুক্ত করতে আমরা জোর অভিযান শুরু করেছি। এই অভিযান আরো বেগবান করা হবে। মাদক নির্মূল সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে তিনি পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য জনপ্রতিনিধিসহ সচেতন মহলের প্রতি আহবান জানান।
বাগমারা থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ একই অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, বাগমারাকে অনেকটাই মাদক মুক্ত করা হয়েছে। এখানে বড় কোন মাদক সিন্ডিকেট নেই। আমরা মাদক নির্মূলে জোর তৎপরতা শুরু করেছি। আগামীতে মাদক জিরো টলারেন্সে নিয়ে আসতে পারব আশা করি।
আরবিসি/১৩ ফেব্রুয়ারি/ রোজি