• শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৩ পূর্বাহ্ন

কাঁটা বিছানো পথ পেরিয়ে দুর্বার মৃত্যুঞ্জয়

Reporter Name / ১১৪ Time View
Update : মঙ্গলবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

আরবিসি ডেস্ক : লো ফুল টস বলটায় নাঈম শেখ টাইমিং মেলাতে পারলেও কোনো জোর ছিল না। ১ বলে ৫ রানের প্রয়োজনে তার ব্যাট থেকে আসলো শুধুই এক রান। ৩ রানের দুর্দান্ত জয়ের উদযাপন বল ফেরত আসার আগেই শুরু হয়ে যায় বোলার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর। চট্টগ্রামের খেলোয়াড়রা তাকে ঘিরে বৃত্ত তৈরি করে মেতে ওঠেন বিজয় উদযাপনে।

বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের নিয়মিত ওপেনার নাঈম ম্যাচের শেষ বল খেলবেন এমনটা কল্পনাও করা যায় না! কিন্তু ঢাকা ফ্র্যাঞ্চাইজিতে তিনি এতটাই ‘অপ্রয়োজনীয়’ যে ব্যাটিংয়ে নামতে হয় আট নম্বরে! কেন সেই চিত্রটা পাওয়া যাবে একটু পরই।

পেসার মৃত্যুঞ্জয়ের সামনে ছিল কাঁটা বিছানো পথ। ১৪৮ রানের পুঁজি নিয়ে ঢাকাকে আটকে রাখতে শেষ ৬ বলে ডিফেন্ড করতে হবে ৯ রান। নন স্ট্রাইকিং প্রান্তে ছিলেন তামিম। স্ট্রাইকে কাইস আহমেদ। প্রথম বলে কাইসকে বোল্ড করে শুরুর বাজি জিতে যান মৃত্যুঞ্জয়। ক্রিজে আসেন নাঈম। জাতীয় দলের এই ওপেনার এখনো থিতু হতে পারেননি ঢাকা দলে। কখনো ব্যাটিং করেন টপ অর্ডারে, কখনো মিডল অর্ডারে। আজ একেবারে লেট অর্ডারে! কেন পারেননি সেই দায়টা বর্তায় তার নিজের ওপরই।

মাথা খাটিয়ে বোলিং করা মৃত্যুঞ্জয় তাকে নাচিয়ে ছাড়লেন। অফ স্টাম্পের বাইরের বল সুইং করে ভেতরে ঢোকানোর পর ফুলার ডেলিভারিতে চোখ ধাঁধিয়ে দেন। নাঈম ব্যাটে বলও লাগাতে পারলেন না। চতুর্থ বলে কোনোরকমে নেন ১ রান।

এবার মুখোমুখি মৃত্যুঞ্জয় ও তামিম। এর আগে মৃত্যুঞ্জয়ের ৯ বলে ৫ রান করা তামিমের জন্য সমীকরণটা সহজ ছিল কি? ২ বলে দরকার ৭। ৬ চার ও ৩ ছক্কা মারা তামিম তখন পুরোপুরি মারমুখী। কিন্তু ওয়ানডে অধিনায়ককে তরুণ পেসার যে ইয়র্কারটি দেন তার উত্তর ছিল না। বলটা ঠিকমতো ধরতেও পারলেন না ২১ রানে তামিমের স্টাম্পিংয়ের সুযোগ হাতছাড়া করা আকবর।

মিস ফিল্ডিংয়ে প্রান্ত বদল করলে নাঈম আবার স্ট্রাইকে। শেষ বলে একটি চার হলে ম্যাচ টাই, ছক্কা হলে ঢাকার জয়। কিন্তু মৃত্যুঞ্জয় তালগোল পাকালেন শেষটায়। হাই নো দিয়ে সমীকরণ ৪-এ নামিয়ে আনলেন। কিন্তু নাঈম ফুল টস বলটাও কাজে লাগাতে ব্যর্থ। শেষ বলে আবার মৃত্যুঞ্জয় ঝলক। নাঈমকে কোনো সুযোগ না দিয়েই উড়লেন এই পেসার।

ম্যাচের শুরু থেকেই দুর্দান্ত ছিলেন যুব বিশ্বকাপ জয়ী স্কোয়াডে থাকা এই পেসার। পাওয়ার প্লেতে পঞ্চম ওভারে বোলিংয়ে এসে মাত্র ৫ রান খরচ করেন। ফ্রি লাইসেন্স দিয়ে ব্যাটিংয়ে পাঠানো মাশরাফিকে দারুণ এক স্লোয়ারে বোল্ড করে পেয়ে যান প্রথম সাফল্য। পরবর্তীতেও বাঁহাতি পেসার দেখান ধারাবাহিকতা। তামিম ও মাহমুদউল্লাহর রানের চাকা থামিয়ে নিজের দ্বিতীয় ওভারে দেন মাত্র ৪ রান।

বিপিএলে নিজের অভিষেক ম্যাচে ডেথ ওভারে হ্যাটট্রিক করে মৃত্যুঞ্জয় জিতিয়েছিলেন চট্টগ্রামকে। আজও ডেথ ওভারে একই কারিশমা দেখালেন। থিতু হওয়া ব্যাটসম্যান তামিমকে শুধুই আটকেই রাখেননি, নিয়মিত ডট বলে চাপ বাড়িয়েছেন। তাতে হাতের মুঠোয় আসা ম্যাচটা হাতছাড়া হয়ে যায় তামিম, মাশরাফি, মাহমুদউল্লাহদের। শেষটা রাঙিয়ে মৃত্যুঞ্জয় হয়ে ওঠেন অনবদ্য, অসাধারণ, অকল্পনীয়।

আরবিসি/০৮ ফেব্রুয়ারি/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category