স্টাফ রিপোর্টার : দেশে করোনা ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সংক্রমণ ক্রমাগত বৃদ্ধিতে সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের (জাবি) সশরীরে ক্লাস বন্ধ করেছে। এই সিদ্ধান্তের পর ক্যাম্পাস বন্ধের বিষয়ে শঙ্কায় রয়েছেন রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, দ্রুত বুস্টার টিকা নিশ্চিত করে ক্যাম্পাস খোলা রাখার বিকল্প ব্যবস্থা করা। তবে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের পরিকল্পনা সরকারি নিদের্শনায় অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেয়া।
এর আগে করোনার কারণে ১৮ মাস বন্ধ থাকায় সেশন জটের মুখে পড়ে বিশ^বিদ্যালয়। বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদভূক্ত বিভাগগুলো এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। চার বছরের অনার্স কোর্সে সময় লাগছে ছয় বছর, মাস্টার্সে তিন বছর। এরই মধ্যে হতাশায় শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া ও আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে। এই অবস্থায় আরেকবার ক্যাম্পাস বন্ধ হলে শিক্ষার্থীরা ব্যাপকভাবে একাডেমিক ও মানসিক ক্ষতির সম্মূখীন হবে বলে মনে করছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক আকতার বানু আলপনা বলেন, মাত্রই সব কিছু স্বাভাবিক হওয়া শুরু করল। সরকার থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আপ্রাণ চেষ্টা করছে সেশন জট কমাতে। এই অবস্থায় ক্যাম্পাস আবার বন্ধ হলে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দেবে। শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া ও আত্মহত্যার ঘটনা চলতেই থাকবে। এই অবস্থায় ক্যাম্পাস বন্ধের বিকল্প নিয়ে ভাবতে হবে।
বিশ^বিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ফাবাশি^র হক বলেন, দীর্ঘ ১৮ মাসের ক্ষতির পর দ্বিতীয়বার ক্যাম্পাস বন্ধের যৌক্তিকতা দেখি না। আর যদি সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায় তবে বিকল্প ব্যবস্থা রাখতে হবে। এক বছরের মাস্টার্সে তিন বছর লাগাটা চরম হতাশা। আরেকবার ক্যাম্পাস বন্ধের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব নয়।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আসফার তাসনিম বলেন, এই বিশ^বিদ্যালয়ের বেশিরভাগের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না। দ্রুত একটা চাকরি করা বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর প্রথম প্রায়োরিটি। এখন যদি আবার বন্ধ হয়ে যায় হবে, তবে স্বপ্নগুলো সব শেষ হয়ে যাবে। কি যে অবস্থা হবে সেটা বলে বোঝানো যাবে না।
ফিনান্স বিভাগের শিক্ষার্থী হিমেল ফারাবী বলেন, ওমিক্রণের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ করে দেয়া কোন সমাধান হতে পারে না। শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় সবার টিকা নেয়া আছে। তাই আমার মতে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবকিছু চালিয়ে নেয়া উচিত হবে।
এর আগে গণমাধ্যমকে এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য মো. সুলতান-উল-ইসলাম জানিয়েছেন এখনই ক্যাম্পাস বন্ধের চিন্তা নেই তবে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, যথাসম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস-পরীক্ষা আমরা চালিয়ে যেতে চাই। তারপরও সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেব। তবে আমি সকলকে সচেতন হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনুরোধ করছি।
আরবিসি/০৮ জানুয়ারি/ রোজি