স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী মহানগর পুলিশের ২১৮ কর্মকর্তা রদবদলের পর এবার কনস্টেবল পর্যায়ে গণবদলির আদেশ জারি হয়েছে। গত পয়লা জানুয়ারি একযোগে ৬৬৭ জন পুলিশ কনস্টেবলকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।
বদলি হওয়া কনস্টেবলরা রাজশাহী মহানগর পুলিশের ১২টি থানা ও থানার অধীনে থাকা পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। তারা একেকজন নিজ কর্মস্থলে সর্বনিম্ন ৫ বছর থেকে সর্বোচ্চ ১৩ বছর পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ গত ১ জানুয়ারি তিন দিনের সফরে রাজশাহী এসেছিলেন। সেদিনই এই আদেশ দেন রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক। তবে সফর শেষে আইজিপি রাজশাহী থেকে চলে যাওয়ার পর গণবদলদির আদেশের বিষয়টি জানাজানি হয়। এই গণবদলির লিখিত আদেশে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কনস্টেবলদের নতুন কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার জন্য আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক জানান, দীর্ঘ সময় একই থানা বা পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন এমন কনস্টেবলদের বদলি করা হয়েছে। এতে নতুনরাও সুযোগ পাবেন এবং পুরনোরা কাজের প্রতি আরও সচেষ্ট হবেন। পুলিশের কার্যক্রমে আরও স্বচ্ছতার জায়গা তৈরি হবে। সব মিলিয়ে মহানগর পুলিশের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান পুলিশ কমিশনার।
এর আগে গত ২০ ডিসেম্বর রাজশাহী মহানগর পুলিশের বিভিন্ন থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ২১৮ জন পুলিশ কমকর্তাকে রদবদল করা হয়। পুলিশ উপপরিদর্শক (এসআই), সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই), শহর উপপরিদর্শক (টিএসআই) এবং সহকারী শহর উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) পদে এই রদবদল আনা হয়। এর মধ্যে ১০৫ জন এসআই, ১১০ জন এএসআই, একজন টিএসআই এবং দুজন এটিএসআই ছিলেন। তাদের আরএমপির এক থানা থেকে অন্য থানা কিংবা ফাঁড়িতে বদলি করা হয়। এরপর একইভাবে ১ জানুয়ারি ৬৬৭ পুলিশ কনস্টেবলকেও এক থানা থেকে অন্য থানা কিংবা পুলিশ ফাঁড়িতে বদলি করা হয়েছে।
গত ৯ ডিসেম্বর বোয়ালিয়া থানার অধীনে থাকা মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) ইফতেখার আল আমিনের গোপনাঙ্গ কর্তন করেন তার স্ত্রী রূপসী দেওয়ান। তার বিরুদ্ধে একাধিক নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কের অভিযোগ ওঠে। পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক থেকে না সরিয়ে আনতে পেরে স্বামীর গোপনাঙ্গ কর্তনের মতো ভয়ানক কাণ্ড ঘটান তার স্ত্রী।
এ ঘটনায় গ্রেফতারের পর স্ত্রী রূপসী দেওয়ান জিজ্ঞাসাবাদে বলেন, স্বামীর পরকীয়ার কথা বাইরের কাউকে বললে কেউই তা বিশ্বাস করতো না। যে কারণে প্রতিশোধ নিতে তিনি এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। মূলত এ ঘটনার পর রাজশাহী মহানগর পুলিশের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়। আরএমপি কমিশনার এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থাসহ বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।
আর পুলিশ কর্মকর্তার গোপনাঙ্গ কর্তনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে আরএমপির বিভিন্ন থানা ও ফাঁড়ি পর্যায়ে কর্মরত অনেক পুলিশ কর্মকর্তা শৃঙ্খলাবিরোধী এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে তাদের বিরত রাখতে গণবদলি শুরু হয়েছে।
আরবিসি/০৬ জানুয়ারি/ রোজি