আরবিসি ডেস্ক : মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলের সংঘাতে-বিধ্বস্ত কায়াহ প্রদেশে ৩০ জনের বেশি মানুষকে হত্যার পর তাদের মরদেহ পুড়িয়ে দিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। শুক্রবার মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকারদের মধ্যে শিশু, নারী এবং বৃদ্ধরাও রয়েছেন। স্থানীয় এক বাসিন্দা, গণমাধ্যম এবং স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থার বরাত দিয়ে শনিবার ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
কায়াহ প্রদেশের কারেন্নি হিউম্যান রাইটস গ্রুপ বলছে, তারা শনিবার প্রুসো শহরের মো সো গ্রামের কাছে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সেনাবাহিনীর হাতে নিহত বৃদ্ধ, নারী ও শিশুসহ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের পোড়া মৃতদেহ দেখতে পেয়েছে।
স্থানীয় এই মানবাধিকার সংস্থা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, আমরা মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী অমানবিক ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী বলেছে, তারা ওই গ্রামে বিরোধী সশস্ত্র বাহিনীর অজ্ঞাতসংখ্যক ‘অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে’ গুলি করে হত্যা করেছে। এই অস্ত্রধারীরা অন্তত সাতটি গাড়িতে ছিলেন এবং সেনাবাহিনী থামার নির্দেশ দিলেও কর্ণপাত করেনি বলে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে।
তবে এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে মন্তব্যের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
কারেন্নি হিউম্যান রাইটস গ্রুপ ও স্থানীয় গণমাধ্যমের শেয়ার করা ছবিতে দেখা যায়, অঙ্গার হয়ে যাওয়া মরদেহ পুড়ে যাওয়া ট্রাকে পড়ে আছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর দেশটিতে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা বেসামরিক মিলিশিয়াদের অন্যতম বৃহত্তম সংগঠন দ্য কারেন্নি ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স বলছে, নিহতরা তাদের সদস্য নয়, সংঘর্ষ থেকে পালিয়ে আশ্রয়ের সন্ধান করা বেসামরিক লোকজন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দ্য কারেন্নি ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের একজন কমান্ডার রয়টার্সকে বলেছেন, আমরা সেখানে বিভিন্ন আকারের মরদেহ দেখে মর্মাহত হয়েছি। নিহতদের মধ্যে শিশু, নারী এবং বয়স্ক লোকজনও আছেন।
নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে স্থানীয় এক গ্রামবাসী বলেছেন, শুক্রবার রাতের আগুনের ঘটনা সম্পর্কে তিনি জানেন। গোলাগুলি হওয়ায় তিনি ঘটনাস্থলে যেতে পারেননি।
ফোনে রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি আজ সকালে দেখতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমি পুড়ে যাওয়া মরদেহ এবং চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শিশু এবং নারীদের পোশাক দেখেছি।’
আরবিসি/২৫ ডিসেম্বর/ রোজি