• সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন

চিকিৎসার নামে নৈরাজ্য বন্ধের দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন

Reporter Name / ৯৯ Time View
Update : শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়াও গজিয়ে উঠা ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা সেবার নামে নৈরাজের প্রতিবাদে রাজশাহীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে উত্তরের বৃহৎ সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ।
শনিবার রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে অবিলম্বে চিকিৎসাসেবার নামে নৈরাজ্য বন্ধের দাবি জানানো হয়। এ কর্মসূচিতে রাজশাহীর বিভিন্ন পেশাজীবী ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা অংশ নিয়ে চিকিৎসা সেবার নামে চিকিৎসকদের নানা অপকর্মের চিত্রও তুলে ধরেন।

মানববন্ধন চলাকালীন বক্তারা বলেন, মানুষ এখন চিকিৎসা ব্যবস্থায় প্রতিনিয়ত হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। চিকিৎসায় চিকিৎসকদের বর্ধিত ফি নিয়েও অসহায় হয়ে পড়েছেন। বেসরকারি ক্লিনিক, প্যাথলজিতে চিকিৎসকরা রোগীদের কাজ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করছেন। কর্মসূচি থেকে মানুষের আয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ফি নেওয়ার দাবি জাননো হয়।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের পাশাপাশি এখন দায়িত্বরত আনসাররাও বেপরোয় হয়ে উঠেছে। এখানে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা প্রতিনিয়ত হয়রানরীর শিকার হচ্ছেন। কখনো কখনো শারিরিকভাবেও তাদের লাঞ্চিত করা হচ্ছে। এতে রামেক হাসপাতালের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। কর্মসূচি থেকে রামেক হাসপাতালে হয়রানী বন্ধ করার দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, রামেক হাসপাতালে খাবারের মান বৃদ্ধি করতে হবে। ভুল চিকিৎসা বন্ধ করতে হবে। হাসপাতালের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা অবিলম্বে বন্ধ করে চিকিৎসাসেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, রামেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের চিকিৎসকরা মানুষের অসুস্থতাকে পূঁজি করে নানাভাবে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এ বিভাগের চিকিৎসক ডা. রইস উদ্দিনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে বক্তারা বলেন, করোনা পরীক্ষা কিংবা রোগ নির্নয় না করেই তিনি হার্টের রোগীর রিং পরিয়েছন। তার ভুল চিকিৎসায় সম্প্রতি নগরীর একজন প্রকৌশলীর মৃত্যুও হয়েছে। বক্তার অবিলম্বে অর্থলোভী এ চিকিৎসকের অপসারণ দাবি করেন। বক্তারা বলেন, এই রইস উদ্দিনের বিরুদ্ধে অর্থ লোপাটের অভিযোগ রয়েছে। তিনি ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত রামেকের কার্ডিওলজি বিভাগের সরকারি কোষাগারে কোন রাজস্ব না দিয়ে লোপট করেছেন। এ নিয়ে মন্ত্রনালয়েও অভিযোগ রয়েছে। অথচ এখনো তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় মানববন্ধন থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।

বক্তারা বলেন, এখন চিকিৎসকদের ফি অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিভিন্ন বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগন্টিক সেন্টারগুলো এখন অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার মেশিনে পরিনত হয়েছে। চিকিৎসাসেবার নামে এসব অপকর্ম ও নৈরাজ্য বন্ধের দাবি জানান বক্তারা। অন্যথায় আগামীতে বৃহৎ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

বক্তারা আরো বলেন, চিকিৎসার জন্য প্রতিনিয়ত হাসপাতালে ছুটছেন মানুষ, কিন্তু কাঙ্খিত সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। সাধারণ মানুষ তাদের টেস্ট করাতে পারছেন না। মানববন্ধন থেকে চিকিৎসকদের প্রতি রোগীবান্ধব হয়ে রোগীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া রাজশাহীর চিকিৎসাসেবায় সিভিল সার্জন , স্বাস্থ্য পরিচালক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষে দৃস্টি আকর্ষণ করে বলা হয়, অবিলম্বে রাজশাহীর হাসপাতাল ও ক্লিনিক রোগীবান্ধব করতে হবে। অব্যবস্থা দুর না হলে শিগগিরই আন্দোলনের হুশিয়ারিও দেওয়া হয়।

রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মো. লিয়াকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান, সাংগাঠনিক সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, রাজশাহী চেম্বারের সাবেক পরিচালক হারুনার রশিদ, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি নুরুল ইসলাম মতিন, আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের রাজশাহীর নেত্রী সেলিনা বেগম, এ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল আলম, বজলুর রহমান, প্রকৌশলী খাজা তারেক, যুবনেতা কেএম জুয়ায়েদ হোসেন জিতু, সমাজ সেবক গোলাম নবী রনি, পরিবেশবীদ মিজানুর রহমান, সমাজ সেবা অধিদফতরের সাবেক উপপরিচালক মোজাম্মেল হক, ছাত্র নেতা জাহিদ হাসান প্রমুখ।

রাজশাহী/২৫ ডিসেম্বর/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category