আরবিসি ডেস্ক : খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিন (ক্রিস্টমাস) আজ। দুই হাজার বছর আগে এই শুভদিনে পৃথিবীকে আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্ট। বেথেলহেমের এক গোয়াল ঘরে কুমারীমাতা মেরির কোলে জন্ম হয়েছিল যিশুর। দিনটিকে ঘিরে রাজধানীর গির্জাগুলোয় ইতোমধ্যে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের পৃথক পৃথক বার্তায় খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও উৎসবমুখর পরিবেশে দিনটি উদ্যাপন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে খ্রীস্টান সম্প্রদায়। সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশের খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীরা দিবসটি উৎসব ও ধর্মীয় উদ্দীপনার মধ্যে উদ্যাপন করবেন। তবে করোনা মহামারীর কারণে এই দিনটি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং সর্বত্র মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে সীমিত আকারে উদ্যাপিত হবে।
বড়দিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। আজ ২৫ ডিসেম্বর শুভ ‘বড়দিন’ উদ্যাপন উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি দেশের খ্রীস্ট ধর্মাবলম্বীসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘খ্রীস্ট ধর্মাবলম্বীরা সারাবিশ্বে যীশু খ্রিস্টের শুভ জন্মদিনকে যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মাধ্যমে ‘বড়দিন’ হিসেবে উদ্যাপন করে থাকেন। যিশু খ্রিস্ট ছিলেন সত্যান্বেষী, মানবজাতির মুক্তির দূত এবং আলোর দিশারী। স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের পাশাপাশি পৃথিবীকে শান্তির আবাসভূমিতে পরিণত করতে তিনি বহু ত্যাগের বিনিময়ে সৃষ্টিকর্তার মহিমা ও খ্রিস্টধর্মের সুমহান বাণী প্রচার করেন। তিনি পথভ্রষ্ট মানুষকে সত্য ও ন্যায়ের পথে আহ্বান জানিয়ে গেছেন।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, যিশু খ্রিস্ট মানুষের মধ্যে ভালবাসা, সেবা, ক্ষমা, মমত্ববোধ, সহানুভূতি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠাসহ শান্তিপূর্ণ অবস্থানের শিক্ষা দেন। জাগতিক সুখের পরিবর্তে যিশু খ্রিস্ট ত্যাগ, সংযম ও দানের মাধ্যমে পরমার্থিক সুখ অর্জনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। জাতিতে জাতিতে সম্প্রীতি ও ঐক্য স্থাপনসহ অশান্ত বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যিশু খ্রিস্টের শিক্ষা ও আদর্শ খুবই প্রাসঙ্গিক বলে আমি মনে করি।
প্রধানমন্ত্রীর বাণী ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের নিরাপদ আবাসভূমি। ‘বড়দিন’ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’ এ মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে আমরা সবাই একসঙ্গে উৎসব পালন করি। আমাদের সংবিধানে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে সকলে মিলে মুক্তিযুদ্ধ করে আমরা বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি। তাই এই দেশ আমাদের সকলের। বাংলাদেশ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের নিরাপদ আবাসভূমি।
‘বড়দিন’ উপলক্ষে তিনি খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের সকল সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, এই দিনে খ্রীস্টান ধর্মের প্রবর্তক যিশু খ্রিস্ট বেথেলহেমে জন্মগ্রহণ করেন। পৃথিবীতে ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা প্রবর্তন ছিল যিশু খ্রিস্টের অন্যতম ব্রত। মহামতি যিশু বিপন্ন ও অনাহারক্লিষ্ট মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেন। তার জীবনাচারণ ও দৃঢ় চারিত্রিক গুণাবলীর জন্য মানব ইতিহাসে তিনি অমর হয়ে আছেন।
আরবিসি/২৫ ডিসেম্বর/ রোজি