রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ৮ ছাত্রসংগঠন। সোমবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাকসু আন্দোলন মঞ্চের পক্ষে এই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
স্মারকলিপি দেয়া সংগঠনগুলো হল- বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, নাগরিক ছাত্র ঐক্য, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী এবং বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন।
‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩ এর অধ্যাদেশ অনুযায়ী সিনেটে নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধি থাকার কথা উল্লেখ থাকলেও বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজশাহী বিশ্ববিশ্বদ্যালয়ে তিন দশক যাবৎ বন্ধ রয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ(রাকসু) এর প্রতিনিধি নির্বাচন। নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধি ছাড়া সিনেট ও সিন্ডিকেট এর কার্যক্রম কোনো ক্রমেই আইনসম্মত বা বৈধ হতে পারে না।’
স্মারকলিপিতে নেতারা বলেছেন, ‘আমরা কয়েক বছর ধরেই রাকসু নির্বাচনের দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছি। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে গত প্রশাসন রাকসু সংলাপ কমিটি গঠন করেন। সেই সংলাপ কমিটি ছাত্র সংগঠনগুলোর সাথে সংলাপ সম্পন্ন করলেও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে ব্যর্থ হয়। বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণের পর রাকসু নির্বাচনের কোনো উদ্যোগ না নিলেও রাকসুর নাম ব্যবহার করে রাকসুর তহবিল এর অর্থ খরচ করে ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী’ এবং ‘মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’ উপলক্ষে ক্রীড়া উৎসব-২০২১ এর আয়োজন করে! নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধির মতামত ছাড়াই রাকসুর তহবিল ব্যবহার করা সম্পূর্ণ অনৈতিক এবং অগণতান্ত্রিক। বিষয়টির সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা প্রদান করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত রাকসুর তহবিল ব্যবহার বন্ধ রাখার দাবি জানাচ্ছি।
নেতারা আরও বলেছেন, ‘গত ১৭ই ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে রাকসু আন্দোলন মঞ্চের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল সকল রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের অংশগ্রহণে উন্মুক্ত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় অংশগ্রহণকারী সকল সংগঠনের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ এই বিষয়ে একমত পোষণ করেন যে, বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে, সুষ্ঠু ধারার রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক চর্চা এবং নেতৃত্বের বিকাশ ঘটাতে ৭৩ এর অধ্যাদেশ অনুযায়ী এই বিজয়ের মাসেই রাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে রাকসু নির্বাচন বন্ধ থাকায় প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারীতা, জবাবদিহিতাহীনতা এবং নানান অনিয়ম ও দুর্নীতির মতো কলঙ্কজনক ঘটনা দেশ-বিদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ও মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করে চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান রক্ষা করতে এবং সৎ দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্ব ও সুনাগরিক তৈরি করতে ছাত্র সংসদের কোনো বিকল্প নেই।
পাশাপাশি স্মারকলিপিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ও মর্যাদা ফিরে আনতে নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অবিলম্বে রাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নিশ্চিত করে পূর্ণাঙ্গভাবে সিনেট কার্যকরের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য জোড়ালো দাবিও জানিয়েছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, ছাত্র উপদেষ্টা এবং প্রক্টর দপ্তরে এই স্মারকলিপির অনুলিপি জমা দিয়েছেন তারা।
স্মারকলিপি প্রদানকালে রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মহব্বত হোসেন মিলন ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আমানুল্লাহ খানসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরবিসি /২০ ডিসেম্বর/ রোজি