• শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২০ পূর্বাহ্ন

রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের অনুকুলে ১৮ লাখ টাকা দিল কে?

Reporter Name / ১২০ Time View
Update : মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২১

আরবিসি ডেস্ক : রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের দুর্নীতি করে লুটপাট করা টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। বোর্ডের অনুকূলে সোনালী ব্যাংকে মোটা অংকের এই টাকাগুলো জমা করা হয়েছে। টাকা জমা হওয়ার বিষয়টি মঙ্গলবার (০৭ ডিসেম্বর) ব্যাংক থেকে শিক্ষাবোর্ডকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কে টাকা জমা দিয়েছেন তা কেউ স্বীকার করছেন না।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর সোনালী ব্যাংকের রাজশাহীর গ্রেটার রোড শাখায় টাকা ১৮ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩১ টাকা জমা করা হয়েছে। টাকা জমা দেওয়ার সময় আবেদনে একটি মামলার বিবরণ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এই মামলার কারণেই টাকাগুলো জমা দেওয়া হলো। যে মামলার বিবরণে টাকাগুলো জমা দেওয়া হয়েছে তার প্রধান আসামি রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ।

এ মামলার মোট আসামি ১৪ জন। ১৮ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলাটি করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ঠিক সমপরিমাণ টাকাই ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়েছে। এ মামলার এক আসামির নাম শওকত আলী। তিনি একজন ঠিকাদার। ব্যাংকে টাকার জমাকারী হিসেবে তাঁর নামই লেখা হয়েছে। তবে শওকতের দাবি, তিনি টাকা জমা দেননি। তাঁর নাম ব্যবহার করা হয়েছে।

টাকা জমা হওয়ার খবর নিশ্চিত করে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক তারিক হাসান বলেন, দুদকের একটি মামলার বিবরণ দিয়ে টাকাগুলো জমা করা হয়েছে। জমাকারী হিসেবে শওকত আলী নাম লেখা আছে। কিন্তু আমরা তাঁকে চিনি না। কাউন্টারে অনেক মানুষই টাকা জমা দেয়, সবাইকে চিনে রাখা সম্ভব নয়। টাকা জমা হওয়ার পর শিক্ষাবোর্ডকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। আজই চেয়ারম্যানকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। দুর্নীতির অভিযোগের কারণে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অনুসন্ধান শেষে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় একটি মামলা করে। মামলায় সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদসহ ১৪ জনকে আসামি করা হয়। এরমধ্যে চারজন ঠিকাদার এবং অন্যরা শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারী।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, ওই মামলায় এরইমধ্যে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি টাকা ফেরত দিয়ে মামলা থেকে আসামিদের দায়মুক্তির জন্য আবেদনও করা হয়েছে। কে আবেদন করেছেন তা দুদক স্পষ্ট করে জানায়নি। এখন মামলা বিচারাধীন অবস্থায় টাকা ফেরত দিয়ে দায়মুক্তির সুযোগ নেই বলেও জানিয়েছেন দুদক কর্মকর্তা। তবে রায়ের সময় আদালত এটি বিবেচনা করতে পারেন।

ঠিকাদার শওকত আলী বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের পাওয়া কয়েকটি কাজ না করেও বিল তুলে নেওয়ার অভিযোগে মামলাটি করা হয়। তবে সব কাজই করা হয়েছিল। এখন কে টাকা ফেরত দিয়েছে সেটা আমি বলতে পারব না। আমি টাকা দিইনি।’

শিক্ষাবোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমি অসুস্থ, ঢাকায় থাকি। আমি কোন টাকা ফেরত দিইনি। কে টাকা জমা দিয়েছেন তাও জানি না। মামলার অন্য আসামিরাই এখন মামলা দেখে, তাঁরা দিয়েছে কি না সেটাও জানি না।’

মামলার আরেক আসামি শিক্ষাবোর্ডের উপ-কলেজ পরিদর্শক নেসার উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘কে টাকা জমা দিয়েছে তা আমিও জানি না। আমি তো শুধু মামলার দিন আদালতে হাজিরা দেই। করোনার কারণে অনেকদিন হাজিরাও দেওয়া লাগেনি।’

আরবিসি/০৭ ডিসেম্বর/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category