• শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৯ অপরাহ্ন

আবরার হত্যা মামলার রায় বুধবার

Reporter Name / ৯৮ Time View
Update : মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২১

আরবিসি ডেস্ক : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্বিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হবে বুধবার (৮ ডিসেম্বর)।

এদিন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালতে রায় ঘোষণার কথা রয়েছে।

এই আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আবু আব্দুল্লাহ ভূঁয়া জানান, বুধবার দুপুর ১২টার দিকে বিচারক এই মামলার রায় ঘোষণা করবেন।

রায়ের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ সময় আদালত বন্ধ থাকার পরও এই মামলাটি দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ হয়েছে। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে চার্জশিটভুক্ত ৬০ জন সাক্ষীর ৪৬ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। বিশাল এই সাক্ষ্য-জেরা চ্যালেঞ্জিং হলেও রাষ্ট্রপক্ষ থেকে দ্রুততার সঙ্গে মামলাটি শেষ করতে চেষ্টা করেছি। এখন আশা করছি, রায়ে আসামিদের সর্বোচ্চ সাজাই হবে।

অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের আশা তারা ন্যায়বিচার পাবেন। আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ বলেন, আমরাও চাই আবরার হত্যার ঘটনায় ন্যায়বিচার হোক। তবে, এই মামলায় অনেককে আসামি করা হয়েছে যাদের হত্যাকাণ্ডে কোনো ভূমিকা ছিল না। শুধু একটি সিসিটিভি ফুটেজের ওপর ভিত্তি করেই এই মামলায় জড়ানো হয়েছে। আশা করছি, আসামিরাও ন্যায়বিচার পাবে।

১৪ নভেম্বর এই মামলায় রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করে। ওইদিনই বিচারক রায়ের জন্য ২৮ নভেম্বর দিন ধার্য করেন। তবে, রায় প্রস্তুত না হওয়ায় বিচারক সেদিন রায়ের তারিখ পিছিয়ে ৮ ডিসেম্বর ধার্য করেন।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে-বাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরের দিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ। ওই বছরের ১৩ নভেম্বর ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক ওয়াহেদুজ্জামান। আর রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষী করা হয় ৬০ জনকে।

চার্জশিট দাখিলের পর ২০২০ সালের ১৫ মার্চ মামলা‌টি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এ স্থানান্তরের আদেশ দিয়ে গেজেট প্রকাশ করে আইন মন্ত্রণালয়। একই বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি চার্জগঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান। করোনা পরিস্থিতির কারণে বিচারকাজে বিঘ্ন ঘটে। শেষ পর্যন্ত বিচার শুরুর এক বছর দুই মাসের মধ্যে পুরো কার্যক্রম শেষে গত ১৪ নভেম্বর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্কের মাধ্যমে বিচারকাজ শেষ হয়। বিচার চলাকালে মামলার বাদী আবরারের বাবা বরকত উল্লাহসহ মোট ৪৬ সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।

এই মামলার তদন্ত চলাকালে অভিযুক্ত ২৫ আসামির মধ্যে ২১ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তারা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিওন, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা, শাখা ছাত্রলীগ সদস্য মুনতাসির আল জেমি, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির ও ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত এবং এস এম মাহমুদ সেতু। পরে হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্তদের সংগঠন থেকে তাদের বহিষ্কার করে ছাত্রলীগ।

গ্রেফতারদের ম‌ধ্যে ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মিজানুর রহমান মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত ও এস এম মাহমুদ সেতু ছাড়া বাকি সবাই এজাহারভুক্ত আসামি।

মামলার আট আসামি আদালতে স্বীকা‌রো‌ক্তিমূলক জবানব‌ন্দি দেন। তারা হলেন- ইফতি মোশাররফ সকাল, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, অনিক সরকার, মুজাহিদুর রহমান, মেহেদি হাসান রবিন, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মনিরুজ্জামান মনির ও এএসএম নাজমুস সাদাত।

মোর্শেদ অমত্য ইসলাম নামে পলাতক এক আসা‌মি পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জা‌মিন আবেদন করেন। আদালত জা‌মিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান।

তাই এখন পলাতক রয়েছেন আর তিন আসা‌মি। তারা হলেন- মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ। এর মধ্যে মোস্তবা রা‌ফিদের নাম এজাহারে ছিল না।

আরবিসি/০৭ ডিসেম্বর/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category