আরবিসি ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ভারতের দিকে যাচ্ছে। ঝড়ের কেন্দ্রে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ আগের মতোই ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটারই আছে। সাগর উত্তাল থাকায় দেশের চার সমুদ্র বন্দরকে গতকালের মতোই ২ নম্বর দূরবর্তী হুশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এর সঙ্গে নতুন করে নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
জাওয়াদ আগামীকাল রবিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুর নাগাদ শক্তি হারিয়ে নিম্নচাপ আকারে ভারতের উপকূলে উঠতে পারে। এর প্রভাবে ইতোমধ্যে ভারত ও বাংলাদেশের খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় মাঝারি ধরনের বৃষ্টি শুরু হয়েছে, অনেক এলাকার আকাশ এখন মেঘলা।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ ভারতের দিকে যাচ্ছে। ফলে ভারতে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টির ফলে ঝড়টি শক্তি হারিয়ে নিম্নচাপ আকারে ভারতের উড়িষ্যা উপকূলের উপর দিয়ে যেতে পারে। এর কিছু প্রভাব বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল ছাড়া প্রায় সব এলাকায় বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৮৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
ঝড়ের কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার; যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করার জন্যও বলা হয়েছে।
এদিকে দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল এবং পটুয়াখালী অঞ্চলগুলোফ উপর দিয়ে পূর্ব বা উত্তর-পূর্ব দিক দিয়ে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে সেই সাথে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লমুচাপটি আরও উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।
এর প্রভাবে খলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বর্জসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং দেশের অন্যায় আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
আরবিসি/০৪ ডিসেম্বর/ রোজি