আরবিসি ডেস্ক : চলতি ডিসেম্বর মাসের শেষার্ধে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে একটি বা দু’টি মৃদু (৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা মাঝারি (৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) শৈত্য প্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
ডিসেম্বর মাসের আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে এ তথ্য দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশেষজ্ঞ কমিটির নিয়মিত সভা থেকে ডিসেম্বর মাসের আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
সভায় নভেম্বর মাসের আবহাওয়ার বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত পর্যালোচিত হয়। এতে দেখা যায় নভেম্বর মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৭৯.৬ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে ডিসেম্বর মাসে দেশের দক্ষিণ ও উত্তরপূর্বাঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি এবং বাকি অংশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে।
ডিসেম্বর মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে- এ মাসে বঙ্গোপসাগরে একটি বা দু’টি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে যার মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে, তবে সেটার বাংলাদেশ উপকূলে আসার সম্ভাবনা কম।
ডিসেম্বর মাসে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবে। তবে মাসের গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকতে পারে।
এ মাসে দেশের নদী অববাহিকায় ভোররাত থেকে সকাল পর্যন্ত হালকা বা মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। নদ-নদীগুলোতে স্বাভাবিক পরিস্থিতি থাকতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে পূর্বাভাসে।
কেমন ছিল নভেম্বর : নভেম্বর মাসে সার্বিকভাবে সারাদেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগে বৃষ্টিপাতের কোনো রেকর্ড পাওয়া যায়নি।
৯ নভেম্বর সকাল ৬টায় দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। ১০ নভেম্বর এটা দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়। ১১ নভেম্বর সকাল ৬টায় এটা একই এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হয়। নিম্নচাপটি পরবতীতে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ১১ নভেম্বর রাত ৯টা নাগাদ ভারতের উত্তর তামিলনাড়ু-দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল অতিক্রম করে উত্তর তামিলনাড়ু ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করে। এরপর এটা আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দূর্বল হয়ে প্রথমে সুস্পষ্ট লঘুচাপ,ও পরবর্তীতে লঘুচাপে পরিণত হয় এবং পরিশেষে গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। নিম্নচাপটির প্রভাবে ১২-১৫ নভেম্বর ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগে বিচ্ছিন্নভাবে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
নভেম্বরে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ও দিনসংখ্যা
১৪ নভেম্বর সকাল ৬টায় দক্ষিণ আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়, যা একই দিন সন্ধ্যা ৬টায় আন্দামান সাগরের কেন্দ্রভাগে অবস্থান নেয়। ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় এটা উত্তর আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় এবং ১৬ নভেম্বর সকাল ৬টায় দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নেয়। ১৮ নভেম্বর সকাল ৬টায় এটা দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়। ১৮ নভেম্বর দুপুর ১২টায় একই এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হয়। এরপর নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ১৯ নভেম্বর সকাল ৬ টায় ভারতের পুদুচেরি ও চেন্নাইয়ের মধ্য দিয়ে উত্তর তামিলনাড়ু-দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল অতিক্রম করে। এরপর এটা আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দূর্বল হয়ে প্রথমে সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও পরবর্তীতে লঘুচাপে পরিণত হয় এবং পরিশেষে গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে ।
নভেম্বরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা ০.৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ০.৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিল। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস (কক্সবাজার ও ফেনী) ও ১১.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস (তেতুলিয়া)।
আরবিসি/০৩ ডিসেম্বর/ রোজি