স্টাফ রিপোর্টার: স্বামী-স্ত্রীর অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ায় স্বামীকে ১০ বছরের কারাদন্ড ও ৫ লাখ টাকা অর্থ দন্ড দেয়া হয়েছে। বাদী পক্ষের আনীত অভিযোগ এবং স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গহন শেষে এ রায় ঘোষণা করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টায় রাষ্ট্র পক্ষ এবং আসামী পক্ষের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন সাইবার ট্রাইব্যুনাল রাজশাহী এর বিচারক জিয়াউর রহমান। দন্ডিত আসামী রাজশাহী জেলার চারঘাট থানার কাকড়ামারী এলাকার মো: মজেল আলীর ছেলে মো মানিক (৩৫)।
মামলার সূত্র থেকে জানা যায়, দন্ডপ্রাপ্ত আসামি মানিক ধর্ষণ মামলাসহ আরো ৩ মামলার আসামী। মামলার বাদীর সাথে তার মানিকের ছয় বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মানিক নিজের তথ্য গোপন করে ওই চারঘাট থানার ঝিকরা গ্রামে বিয়ে করে। বিয়ের পর মানিকের স্ত্রী এ বিষয়ে জানতে পারলে সাংসারিক জীবনে অশান্তি দেখা দেয়।
এ নিয়ে আসামী মানিক তার স্ত্রীকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করলে ২০১৫ সালের ১৮ আগস্ট ভূক্তভোগী নারী স্বামীকে একতরফা তালাক দেয়। এরই জের ধরে ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারী আসামী মানিক তার স্ত্রীর সাথে ধারণ করা অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এরই প্রেক্ষিতে ভূক্তভোগী নারী গত ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৬ তারিখে চারঘাট থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০১৬ এর সংশোধনী ২০১৩ এর ৫৭(২) ধারায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
আদালত তার রায়ের নির্দেশনায় উল্লেখ করেন, অত্র মামলায় অপরাধের ধরণ, প্রকৃতি, সমাজ ও রাষ্ট্রের ওপর প্রভাব ইত্যাদি বিবেচনায় অভিযুক্ত আসামী মানিককে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন-২০০৬ এর ৫৭ ধারার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ৫ লাখ টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা যুক্তিসংগত বিবেচিত হয়। ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ৫৪৫ ধারার বিধান মতে মামলার ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ হিসেবে ভোক্তভোগী পাওয়ার হকদার।
রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ইসমতারা বলেন, আদালতের নিকট উপস্থাপিত সকল তথ্য প্রমাণ উপস্থাপনের পর আসামি মানিকের অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। সেই সাথে তাকে ৫ লাখ টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। সাজাপ্রাপ্ত আসামি মানিকের সাজা পরোয়ানা ইস্যু করা হয়েছে এবং মামলার আলামত রাষ্ট্রের অনুকুলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
আরবিসি/০২ ডিসেম্বর/ রোজি