নওগাঁ প্রতিনিধি: বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের সমতলের ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে সমাজের মূল ধারার মানুষকে সংবেদনশীল করার লক্ষ্যে নওগাঁর মহাদেবপুরে আদিবাসী সমাবেশ ও সংস্কৃতি মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার মহাদেবপুর উপজেলার ধনজইল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
দিনব্যাপী এই মেলায় সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মানুষের বৈচিত্র্যময় জাতিসত্তার জীবন-জীবিকা ও সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়।
দাতা সংস্থা হেক্স-ইপারের সহাতায় পল্লী সহযোগী বিষয়ক সংস্থা (আরকো) তাদের ইটুজিআই প্রকল্পের আওতায় এই সমাবেশের আয়োজন করে। সকালে আদিবাসী সমাবেশ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাহিত্যিক হরিশংকর জলদাস।
আরকোর সভাপতি শাহিন মনোয়ারা হকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর ও বদলগাছী) আসনের সাংসদ ছলিম উদ্দিন তরফদার।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, হেক্স-ইপারের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডোরা চৌধুরী, আরকোর নির্বাহী পরিচালক সজল কুমার চৌধুরী, মহাদেবপুরের নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সবিন চন্দ্র মুণ্ডা প্রমুখ।
হরিশংকর জলদাস বলেন, বঙ্গ নামের এই ভূমির আদি বাসিন্দারা আজকে ভালো নেই। তারাই আজকে সকল ক্ষেত্রে প্রান্তিক হয়ে পড়েছেন। সমাজের মূল স্রোতধারার সাথে তাল মেলাতে না পেরে তারা দিন দিন আরও প্রান্তিক হয়ে যাচ্ছে। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মুক্তির প্রধানতম পথ হচ্ছে শিক্ষিত হওয়া। তারা নিজেরা শিক্ষিত না হলে যতই সরকার ও উন্নয়ন সংস্থাগুলো কাজ করুক না কেন কোনো লাভ হবে না।
মেলায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ তাদের কৃষ্টি-সংস্কৃতি তুলে ধরতে ৯টি স্টলে তাদের সম্প্রদায়ের কৃষি কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, জীব-জন্তু শিকারের হাতিয়ার, গয়না, কাপড়, তৈজষপত্র, খাবার, কলা, স্থাপত্য ও ভৌত-অভৌত পরিকাঠামো, অবকাঠামো, কারুকার্য ও অন্যান্য ঐতিহ্য সম্বলিত জিনিসপত্র প্রর্দশন করেন। এছাড়াও আরকোর সহাতায় তাদের কর্ম এলাকায় বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর উৎপাদিত উপকরণ ১টি স্টলে প্রদর্শন করা হয়।
বিকেলে সাংস্কৃতিক পর্বে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংখ্যাধিক্য বিবেচনায় সাঁওতাল, উরাও, পাহান, মুন্ডাসহ ১০টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী জাতিসত্তার সাংস্কৃতিক দল ও দুটি বাঙালি সাংস্কৃতিক দল তাদের নিজ নিজ সাংস্কৃতি তুলে নাচ ও গান পরিবেশন করেন। দুটি বাঙালী দল জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পরিবেশন করে।
আরবিসি/০১ ডিসেম্বর/ রোজি