• শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩৩ অপরাহ্ন

বিশ্বের ১৭ দেশে পৌঁছে গেছে ওমিক্রন

Reporter Name / ৮৮ Time View
Update : সোমবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২১

আরবিসি ডেস্ক : দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন বিশ্বের ১৭টি দেশ ও অঞ্চলে পৌঁছে গেছে। আফ্রিকা অঞ্চলের দেশটি থেকে আসা দর্শনার্থীদের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া থেকে জার্মানি এবং কানাডায় ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। এর ফলে নতুন প্রজাতির এই ধরনের বিস্তার রোধের প্রচেষ্টা কঠিন হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন মহামারি বিশেষজ্ঞরা।

ইসরায়েল এখন পর্যন্ত এই ভ্যারিয়েন্টে একজনের আক্রান্ত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে। আফ্রিকার দেশ মালাবি থেকে তেলআবিবে আসা এক যাত্রীর শরীরে ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। ইতালিতেও এই ভ্যারিয়েন্টে প্রথম একজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তবে পরীক্ষায় ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার আগে ওই ব্যক্তি দেশজুড়ে কয়েক দিন ধরে ঘুরেছেন বলে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

করোনার নতুন এই প্রজাতির বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা রীতিমতো প্রতিযোগিতা করছেন। ইতোমধ্যে বিশ্বের অনেক দেশের সরকার দক্ষিণ আফ্রিকা এবং এর আশপাশের দেশগুলোর দর্শনার্থীদের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ওমিক্রন করোনাভাইরাসের বিদ্যমান টিকার সুরক্ষাকে ফাঁকি দিতে পারে অথবা নতুন করে সংক্রমণের ঢেউ শুরু করতে পারে আশঙ্কায় অনেক দেশ নিজেদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে।

যেসব দেশে পৌঁঁছেছে ওমিক্রন

দক্ষিণ আফ্রিকা: গত বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়। চলতি সপ্তাহে অন্তত ১ হাজার ১০০ জন করোনা পজিটিভ রোগীর নমুনা পরীক্ষায় ৯০ শতাংশের ওমিক্রন ধরা পড়েছে। দেশটির প্রায় সব প্রদেশেই এই ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়েছে।

বতসোয়ানা: আফ্রিকার এই দেশটিতে ১৯ জনের ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে।

যুক্তরাজ্য: এখন পর্যন্ত তিনজনের ওমিক্রন নিশ্চিত হয়েছে ব্রিটেন। যাদের সবার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্রমণের সম্পর্ক আছে।

জার্মানি: দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে মিউনিখ বিমানবন্দরে আসা যাত্রীদের মধ্যে দু’জনের ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে।

নেদারল্যান্ডস: দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসা যাত্রীদের মধ্যে ১৩ জনের ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে।

ডেনমার্ক: দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আগত দু’জনকে ওমিক্রন আক্রান্ত হিসেবে পাওয়া গেছে।

বেলজিয়াম: দেশটিতে একজনের ওমিক্রন ধরা পড়েছে।

ইসরায়েল: ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে একজনের ওমিক্রন নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়া অপর একজনকে এই ধরনে আক্রান্ত হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে।

ইতালি: দেশটিতে একজনকে এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত পাওয়া গেছে। পরীক্ষায় ধরা পড়ার আগে তিনি দেশজুড়ে ঘুরে বেরিয়েছেন বলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।

চেক প্রজাতন্ত্র: স্থানীয় গণমাধ্যমে একজনকে ওমিক্রন আক্রান্ত হিসেবে শনাক্তের তথ্য জানানো হয়েছে।

হংকং: ওমিক্রন আক্রান্ত দু’জনকে হোটেল কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়া: অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যে দুজনের ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। দু’জনই দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্রমণ করেছিলেন।

কানাডা: সম্প্রতি নাইজেরিয়াফেরত দু’জনের এই ধরন শনাক্ত হয়েছে।

অস্ট্রিয়া: দেশটির টাইরোলে দক্ষিণ আফ্রিকাফেরত একজনের ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। আরও ৩০ জনকে এই ধরনে আক্রান্ত হিসেবে সন্দেহ করছে কর্তৃপক্ষ।

সুইজারল্যান্ড: প্রায় এক সপ্তাহ আগে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসা একজনের ওমিক্রন ধরা পড়েছে।

ফ্রান্স: আটজনকে এই ধরনের আক্রান্ত হিসেবে সন্দে করা হচ্ছে।

পর্তুগাল: ১৩ জনের শরীরে এই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের শক্তিশালী প্রমাণ মিলেছে।

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের রূপান্তরিত ধরন ওমিক্রন ‘অত্যন্ত উচ্চ ঝুঁকি’ তৈরি করতে পারে বলে সোমবার সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। পাশাপাশি ভাইরাসের এই ধরনকে মোকাবিলায় বিশ্বকে দ্রুত প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক এই সংস্থা।

সোমবার জেনেভায় ডব্লিউএইচওর সদর দফতর থেকে ওমিক্রন নিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। বিবৃতিতে ১৯৪টি সদস্যদেশকে টিকাদান কর্মসূচির গতি আরও বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে ডব্লিউএইচও। সংক্রমণের নতুন ঢেউ দেখা দিলে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে; সে বিষয়ে পরিকল্পনাও দ্রুত নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ‘মূল করোনাভাইরাস ও তার অন্যান্য রূপান্তরিত ধরনের তুলনায় ওমিক্রনের স্পাইক প্রোটিনের সংখ্যা অনেক বেশি। সংস্থাটির আশঙ্কা, এটি মহামারির পুরো চিত্র আরও বিপর্যয়কর করে তুলতে পারে।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিবৃতিতেও তার প্রতিফলন পাওয়া গেছে। সংস্থাটি বলেছে, ‘এই ধরনটির প্রভাবে দৈনিক সংক্রমণের হার আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে পারে এবং সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পেতে পারে করোনায় গুরুতর অসুস্থ রোগীর সংখ্যাও।’

‘যদি এমন হয়, সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসার চাহিদা ব্যাপকভাবে বাড়বে বিশ্বজুড়ে, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়বে করোনায় মৃত্যুর হারও। যেসব দেশে টিকাদান কম হয়েছে, সেই সব দেশের বয়স্ক লোকজন বিশ্বে এই মুহূর্তে সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছেন’, বিবৃতিতে বলেছে ডব্লিউএইচও।

আরবিসি/২৯ নভেম্বর/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category