চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: আবু জার। বয়স ২৭। বাড়ী গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের কাঞ্চনতলা গ্রামে। স্নাতক ডিগ্রী পাশ করে বেকার জীবনের যন্ত্রনায় ধুকে ধুকে চলছিল জীবন। এমন সময় বেকারত্ব দূর করতে টমেটো চাষে ঝুঁকে পড়েন।
গত মৌসুমে টমেটো চাষ করে বেশ লাভবান হন তিনি। এক মৌসুমের জন্য ভোলাহাট উপজেলার বিলগুলদহা মাঠে টমেটো চাষ করতে ৪ বিঘা জমি ৪৫ হাজার টাকায় লীজ গ্রহন করেন। গাছ ফুলে ফলে ভরে গেছে। টমেটো বাজারজাত করার উপযোগি হয়ে উঠায় বেশ ফুরফুরে রয়েছেন আবু জার। সরাসরি টমেটো জমিতে গিয়ে কথা হয় শিক্ষিত বেকার যুবক আবু জারের সাথে। তিনি জানান বেকারত্ব দূর করে স্বাবলম্বী হওয়ার গল্প।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালে স্নাতক ডিগ্রী পাশ করে সরকারী-বেসরকারী চাকুরির জন্য দেশে বিভিন্ন জায়গায় হন্যে হয়ে ঘুরে কোন কুল কিনারা না পেয়ে কি করলে বেকার জীবনের যন্ত্রনা থেকে মুক্ত পায়। চিন্তা ভাবনা করতে গিয়ে সময়পযোগি সবজি টমেটো চাষ করলে আর্থীক ভাবে বেশ লাভবান হওয়া যাবে।
এ ভাবনা থেকে মানুষের জমি লীজ নিয়ে গেল মৌসুমে টমেটো চাষ শুরু করি। গেল বছর বেশ ভালোই লাভবান হয়েছিলাম। এ মৌসুমে আবারও মানুষের ৪ বিঘা জমি ৬ মাসের জন্য ৪৫ হাজার টাকায় লীজ গ্রহণ করে টমেটো চাষ শুরু করি। গাছে ফুলে ফলে ভরে গেছে। কিন্তু সমস্যা হলো কিছু জাত খারাপের জন্য ফলন কিছুটা খারাপ হবে। গাছ তুলে ফেলে দিতে হচ্ছে। তারপরও ফল নিয়ে বেশ আশাবাদি।
তিনি বলেন, জমি লীজ, সার, কীটনাশক, সেচসহ বিভিন্ন প্রকার পরিচর্চায় এখন পর্যন্ত ৪ বিঘা জমিতে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ ফসল থেকে ৪ লাখ টাকা আয় হবে বলে আশা করছেন। প্রথম ২৬ নভেম্বর শনিবার ১’শ ক্যারেট টমেটো জমি থেকে তুলে বাজারজাত করা হয়েছে। প্রথম দফায় এ টমেটো থেকে প্রায় ১ লাখ টাকা আয় হয়। তিনি বলেন, জমিতে আমরা টমেটোর দাম খুব কম পেয়ে থাকি। সরসরি দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরকারি ভাবে বাজারজাতের জন্য পরিবহণ সুবিধা পেলে আরো লাভবান হতে পারতাম বলে জানান।
তিনি বলেন, নিজস্ব ও বিভিন্ন এনজিও সংস্থা থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে টমেটো চাষ করছি। সরকার যদি আমার মত শিক্ষিত বেকার যুবকের জন্য এ সব উদ্যোগের জন্য কম সুদে ঋণের ব্যবস্থা করে উদ্বুদ্ধ করত তাহলে বেকারত্বে সংখ্যা কমে যেত।
আবু জার আরো বলেন, আমিসহ প্রায় ১৬-১৭ জন অসহায় মানুষ আমার টমেটোর জমিতে টমেটো তোলা ও অন্যান্য সময় কাজ করে দিনে ২’শ টাকা করে আয় করে। তিনি টমেটো চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে দেখতে একদিন আরো ভালো কিছুর ব্যবসা করে এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবেন বলে জানান।
ভোলাহাট উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাশিরুল ইসলাম জানান, ভোলাহাট উপজেলায় এ মৌসুমে ১ হাজার ৩৫০ বিঘা জমিতে টমেটো চাষ হচ্ছে। এর উৎপাদন লক্ষমাত্র ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৯৫৭ মে.টন ধরা হয়েছে।
তিনি বলেন এ বছর জাত দেখে কিছু জমিতে ফলন কম হবে। জাতের অবস্থা ভালো হলে ফলন উৎপাদন লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যেত। এ মৌসুমে তেমন রোগবালাই নেই আবহাওয়াও ভালো আছে বলে জানান।
আরবিসি/২৮ নভেম্বর/ রোজি