স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর কাটাখালি পৌরসভার মেয়র মেয়র আব্বাসকে নিয়ে শুরু সমালোচনার ঝড়। এরপর থেকেই মেয়র আব্বাস রয়েছেন লোকচক্ষুর অন্তরালে। তবে যেকোনো মুহূর্তে গ্রেফতার হতে পারেন মেয়র আব্বাস। রাসিক কাউন্সিলর মোমিনের করা মামলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতারের সম্ভাবনা রয়েছে তার।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের নগর মুখপাত্র ও অতিরিক্ত সহকারী পুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, বিষয়টি অমাদের পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা দেখছেন। তদন্ত ও প্রমাণ সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ। তিনি বলেন, মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার তদন্ত চলছে। অডিও ক্লিপটির সত্যতা যাচাইয়ে একজন এক্সপার্টিজের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া গতকাল (২৬ নভেম্বর) মেয়র আব্বাস নিজেই লাইভে এসে ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে তা প্রমাণ করেছেন। এতে প্রমাণিত হয়েছে তিনি দোষী।
তিনি বলেন, তার গ্রেফতারের জন্য দুটো আলামতই যথেষ্ট। একটা হচ্ছে- অডিও ক্লিপ ও দ্বিতীয়টি তার ফেসবুকে এসে মাফ চাওয়া। এই দুটো জিনিসই যথেষ্ট। বর্তমানে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। তার অবস্থান খোঁজার জন্য আমাদের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তা নিচ্ছি। আশা করছি যেকোনো মুহূর্তে মেয়র আব্বাসকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো।
মেয়র আব্বাসকে গ্রেফতারের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কোনো অনুমতিপত্রের প্রয়োজন আছে কিনা জানতে চাইলে ওসি নিবারণ বলেন, যদি সন্ত্রাস দমন আইনের মামলা হতো তাহলে স্থানীয় সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে তাকে গ্রেফতার করতে হতো। কিন্তু তার অপরাধটি সিআরপিসি জাতীয় মামলা। এ মামলায় ‘সেনশন অর্ডার বা পূর্বানুমতির’ প্রয়োজন নেই। তারপরও পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি চিঠি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে দেওয়া হয়েছে। তবে সেটির বাধ্যবাধকতা নেই, শুধুমাত্র জানিয়ে রাখা আরকি।
মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে অনাস্থা পত্রের বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, পৌর কাউন্সিলরদের প্রদান করা অনাস্থা পত্র ও পৌর রেজুলেশনের কাগজাদি আমি গ্রহণ করেছি। এখন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আইন অনুযায়ী এ বিষয়ে পর্যালোচনা করা হবে। এরপর তার একটি প্রতিবেদন ঢাকায় পাঠানো হবে।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, গত কয়েক দিন পূর্বে আমার কাছে মেয়র আব্বাসের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার কাগজটিও হাতে এসেছে। সেটির একটি পজিটিভ প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছি। এখন মন্ত্রণালয় থেকে পরবর্তী নির্দেশনা আশার পর সে অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আশা করছি পজিটিভ রেজাল্ট আসবে।
এদিকে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় গ্রেফতার হতে পারেন। এনিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি আসার অপেক্ষা রয়েছে মাত্র। তবে শিউর তিনি এক সপ্তাহের মধ্যেই গ্রেফতার হবেন।
এছাড়াও মেয়র আব্বাসকে গ্রেফতারের বিষয়ে কথা হয় রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকারের সঙ্গে।
তিনি বলেন, গ্রেফতারতো সে হবেই এবং তার অবস্থা গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীরের মতোই হবে। সে কোনো ছাড় পাবে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও তার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে। শহীদ কামারুজ্জামানের সুযোগ্য পুত্র মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন সাহেবকে সে অশালীন মন্তব্য করেছে। শুধু তাই নয়, সে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। তাই তার ক্ষমা নেই। তার অন্যায় ও দুর্নীতির প্রমাণসহ আমরা একটি ফৌজদারি মামলা করতে যাচ্ছি।
এর আগে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মেয়র আব্বাসের জেলা সদস্য পদ আজীবনের জন্য বাতিলের সুপারিশ করে কেন্দ্রে জানানো হয়েছে। আজ সকালে সেই চিঠি ডাকযোগে কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন নেতারা।
আরবিসি/২৭ নভেম্বর/ রোজি