আরবিসি ডেস্ক : আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমাতে নতুন কৌশল অবলম্বন করছে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ব্রিটেনের মতো তেল আমদানিকারক দেশগুলো। বিশ্বের শীর্ষ জ্বালানি রফতানিকারকদের জোট ওপেকের সদস্যদের উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানানোর পর তাতে সাড়া না মেলায় আমদানিকারকরা নতুন পথে হাঁটছেন।
জ্বালানি তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমেরিকা ৫ কোটি ব্যারেল তেল বিশ্ব বাজারে ছেড়ে দিতে চলেছে। একই পথে হেঁটে ভারতও নিজেদের মজুত থেকে ৫০ লাখ ব্যারেল তেল ছাড়ছে।
ওপেকের তেল রফতানিকারক দেশগুলোকে বারবার উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানানো হলেও তাতে সাড়া মেলেনি। রফতানিকারকরা উৎপাদন বাড়ালে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কিছুটা কমত বলে প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু বর্তমানে চাহিদার তুলনায় তেলের উৎপাদন কম হওয়ায় তরতরিয়ে দাম বাড়ছে।
কয়েকদিন আগে বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে ব্যারেল প্রতি ৮৬ ডলারে পৌঁছেছিল। পরে তা কমে ৭৯ ডলারে এলেও মঙ্গলবার ফের তা ৮২ ডলারে উঠে যায়। দামের এই উত্থান-পতনে মঙ্গলবার বিশ্ব বাজারে অতিরিক্ত তেল ছাড়ার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
কিন্তু বিশ্ব জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রফতানিকারক দেশগুলো তেলের উৎপাদন যদি আরও কমিয়ে দেয়, তাহলে আমদানিকারকদের এমন পদক্ষেপে আদতে তেলের দামের ওপর খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না। সে ক্ষেত্রে চড়া দামেই তেল কিনতে হবে সবাইকে।
তবে চাপের মুখে ওপেকের সদস্য দেশগুলো যদি তেলের উৎপাদন বাড়ায়, তাহলে রিজার্ভ থেকে ছেড়ে দেওয়া তেল আরও কম দামে বাজার থেকে কেনা যাবে। ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, ভারতের উপকূলীয় এলাকা— ম্যাঙ্গালুরু, পাদুর, বিশাখাপত্তনমে ৩ দশমিক ৮ কোটি ব্যারেলে ৫৩ দশমিক ৩ লাখ টন তেল মজুত আছে।
বিশ্বজুড়ে চলমান করোনাভাইরাস মহামারিতে চাহিদা তলানিতে গিয়ে ঠেকলে তেলের উৎপাদন কমিয়ে দেয় ওপেকভুক্ত দেশগুলো। পরবর্তীতে প্রায় সব দেশেই লকডাউন প্রত্যাহার করা হলেও তেলের উৎপাদন বাড়ায়নি তারা। যে কারণে বিশ্ববাজারে তেলের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। এর ফলে ভারতসহ বিশ্বের তেল আমদানিকারক অনেক দেশ চাপের মুখে পড়েছে। এই সংকটের লাগাম টানতে আগামী সপ্তাহে ভারত নিজেদের মজুত থাকা তেল ছাড়তে পারে।
আরবিসি/২৪ নভেম্বর/ রোজি