• বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ন

রাজশাহী ওয়াসার পানিতে ভয়ংকর ব্যাকটেরিয়া

Reporter Name / ২২২ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীতে পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের সরবরাহকৃত (ওয়াসা) পানি পরীক্ষায় ভয়ংকর ‘কলিফর্ম’ ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি মিলেছে। সম্প্রতি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে রাজশাহীর ওয়াসায় পানির পরীক্ষা করা হয়। তাতেই এ ফলাফল মেলে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ওয়াসার পানিতে এ ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি শূন্য থাকার কথা। সেখানে ওই পানিতে ‘কলোনি ফর্মিং ইউনিট’ এক হাজার পর্যন্ত পাওয়া গেছে। যা স্বাস্থ্যের মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। এ ব্যাকটেরিয়ায় পেটের পীড়ার অন্যতম কারণ বলে জানান তারা।

এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এম. মনজুর হোসেন বলেন, ‘কলিফর্ম’ একটি ভয়ংকর ব্যাকটেরিয়া। এ ব্যাকটেরিয়া মিশ্রিত পানির কারণে মানুষের খাদ্যে বিষক্রিয়া হয়ে থাকে। খাওয়ার পানিতে এ ব্যাকটেরিয়ার কোনো সহনীয় মাত্রা নেই।

রাজশাহীর ওয়াসা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সাল থেকে রাজশাহীতে পানি সরবরাহের কাজ করছে ওয়াসা। শহরে দৈনিক ১২৫ মিলিয়ন লিটার পানির চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে ওয়াসা দৈনিক ১০৪ মিলিয়ন লিটার পানি সরবরাহ করছে। নগরীর বেশিরভাগ খাবারের হোটেলগুলোতে ওয়াসার পানি সরবরাহ করা হয়। তবে একটু উন্নতমানের হোটেলগুলোতে বোতলজাত পরিশোধিত পানির ব্যবস্থা রয়েছে।

জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের রসায়নবিদ শফিকুল ইসলাম বলেন, পুরো রাজশাহীজুড়ে চলছে সড়ক নির্মাণকাজ। রাস্তা প্রশস্তকরণ থেকে শুরু করে পুনরায় খুঁড়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। ভারি ভাইব্রেটিং রোলার দিয়ে কম্পনের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে রাস্তা। এতে মাটির নিচে থাকা পাইপ ফেটে যাচ্ছে। এসব পানির লাইন পরে হয়তোবা প্লাস্টিক দ্বারা মুড়ে দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, এসব ছিদ্র দিয়ে সুয়ারেজ লাইনের পানি ওয়াসার পাইপলাইনে ঢুকে পড়ে। এ পানিতে গবাদিপশু এমনকি মানুষের বর্জ্য মিশে থাকার সম্ভাবনা ৮০-৯০ শতাংশ। এসব বর্জ্য থেকে ‘কলিফর্ম’ ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয়। পরীক্ষায় ওয়াসার পানিতে কলোনি ফর্মিং ইউনিট পাঁচ থেকে এক হাজার পর্যন্ত পাওয়া গেছে। যা খাওয়ার পানিতে থাকার কথা নয়।

রাজশাহী ওয়াসা কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাকির হোসেন (অতিরিক্ত সচিব) বলেন, আমাদের নিজস্ব পানি পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। তারপরও আমরা নিজ উদ্যোগে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে ওয়াসার সরবরাহকৃত পানি পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছি। সেখান থেকে জানতে পেরেছি পানির মধ্যে রয়েছে ক্ষতিকর ‘কলিফর্ম’ ব্যাকটেরিয়া। যা কাম্য ছিল না।

তিনি বলেন, আমরা প্রায়ই পানি সরবরাহ লাইনের বিভিন্ন পয়েন্টে ওয়াশ আউটের মাধ্যমে পানির লাইন পরিষ্কার করে থাকি। সকাল থেকে আবারও এর প্রতিকারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নূর ইসলাম বলেন, ওয়াসাকে বারবার বলা হয়েছে পানির পাইপ তিন ফুট নিচে বসানোর জন্য। কিন্তু তারা তা করে না। তিন ফুট নিচে থাকলে রাস্তা নির্মাণ কিংবা যে কোনো কাজ করলে পানির পাইপ ভাঙে না। তারপরও কোনো স্থানে যদি পানির পাইপ ভাঙা পড়ে সেখানে তাৎক্ষণিকভাবে সারানো হয়।

আরবিসি/১৮ নভেম্বর/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category