স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর বাগমারায় জেলেদের ইজারা নেওয়া বিলে প্রভাবশালীরা মাছ ধরছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা প্রভাব খাটিয়ে জাল দিয়ে মাছ ধরে বিক্রি করছেন। তাদের দাপটের কাছে জেলেরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। এই বিষয়ে স্থানীয় মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি অমূল্য চন্দ্র হালদার বাদী হয়ে মঙ্গলবার থানায় ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পুলিশও তদন্ত শুরু করেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বড়বিহানালী ও দ্বীপপুর ইউনিয়নের কিছু অংশে থাকা বিলসুতি বিলের সরকারি অংশ মাছচাষের জন্য ইজারা দেওয়া হয়। স্থানীয় জেলেদের নিয়ে গঠিত বিলসুতি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি ছয় বছরের জন্য বিলটি মাছ চাষের জন্য গ্রহণ করে। আগামি ২০২৩ সালে ইজারার মেয়াদ শেষ হবে। ইজারা নেওয়ার পর থেকে সমিতির সদস্য এলাকার মৎস্যজীবীরা সেখানে মাছ চাষ করে আসছেন। এবারও প্রায় এক কোটি টাকার বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা ছাড়া হয় সমিতির পক্ষে। খাবার দেওয়া ও পরিচর্যার পর মাছগুলো বেড়ে ওঠে।
পানি কমতে থাকায় মাছ ধরা শুরু হয়েছে। এদিকে বড়বিহানালী ইউনিয়নের বেড়াবাড়ি গ্রামের আবদুর রহমান, ছামান আলী, ইব্রাহিম হোসেন, রুবেল হোসেন, আজাদুল ইসলামসহ ছয় প্রভাবশালী মৎস্যজীবীদের ইজারা নেওয়া বিলে মাছ ধরতে শুরু করেন। তারা প্রভাব খাটিয়ে বিলে জাল দিয়ে মাছ ধরে সেগুলো বিক্রি করছেন। গত দুদিন ধরে তারা মাছ ধরছেন। বিষয়টি জানার পর সমিতির সদস্যরা বাধা প্রদান করলে তাদের ভয়ভীতি দেখানো হয় বলে অভিযোগ করা হয়। নিরুপায়ে সমিতির পক্ষে অমূল্য চন্দ্র হালদার বাদী হয়ে ছয়জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় মৎস্য বিভাগকেও জানানো হয়েছে।
সমিতির সভাপতি অমূল্য চন্দ্র অভিযোগ করেন, গত দুইদিন ধরে সাত থেকে আট লাখ টাকার মাছ লুট করা হয়েছে। তারা আর্থিকভাবে ক্ষতির শিকার হওয়ার পাশাপাশি হুমকীর মুখে পড়েছেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা ওয়াজেদ আলী, বাবুল হোসেন ও কাদের আলী বলেন, পূর্ব প্রস্তুতি নিয়েই তারা মাছ লুট করছেন। মাছগুলো স্থানীয় বিভিন্ন আড়তে বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।
মাছ ধরার কথা স্বীকার করে অভিযুক্তদের মধ্যে আবদুর রহমান বলেন, সরকারি জমিতে নয়, নিজেদের পৈত্রিক জমি থেকে তারা মাছ ধরছেন। এই সংক্রান্ত তাঁদের প্রমাণ রয়েছে। তাঁরা অভিযোগ নিয়ে মোকাবিলা করতে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেন।
বাগমারা থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর একজন তদন্ত কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের মাছ ধরতে বারণ করা হয়েছে। এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরবিসি/১৬ নভেম্বর/ রোজি