• রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন

পবায় প্রচারে সরগরম ভোটের মাঠ

Reporter Name / ১১০ Time View
Update : মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার: সারাদেশের ন্যায় রাজশাহীর পবা উপজেলায় তৃতীয়ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ইউপি নির্বাচন। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ৭টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রার্থীরা। পোস্টার, ব্যানারে ছেয়ে গেছে ইউপির অলি-গলি, বাসা-বাড়ি, চায়ের দোকান ও বিভিন্ন স্থাপনায়। পাশাপাশি বিভিন্ন দপ্তরে পোষ্টার ছিড়া, আগুনে পুড়ানো, হুমকী-ধামকি ও মারপিটের অভিযোগ করেছে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা।

দিনক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে। প্রতীক হাতে পেয়েই নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন প্রার্থীরা। উৎসবমুখর পরিবেশে পথসভা ও গণসংযোগে প্রার্থীরা উন্নয়নের ধারা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন। উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ছে উপজেলাজুড়ে তাদের সমর্থকরা মিছিল, গণসংযোগ, পথসভা, উঠান বৈঠকসহ নানাভাবে তাদের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করেন।

নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই প্রার্থীরা খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে কোমর বেঁধে নির্বাচনী মাঠে দিন-রাত সময় দিচ্ছেন। তারা ভোটারদের কাছে গিয়ে তাদের আদর্শের বয়ানসহ ইউনিয়নে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছেন। চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রার্থীরা দলবেঁধে প্রচার প্রচারণায় নির্বাচনী এলাকা সরগরম করে তুলছেন। তারা অটোরিকশা, ইজিবাইক, নসিমন ও রিকশায় মাইক বেঁধে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন।

নির্বাচনী প্রচারে জমে উঠেছে গ্রামগঞ্জ। জমজমাট প্রচার ও গণসংযোগ চলছে গ্রামগঞ্জ ও হাটবাজারে। নির্বাচনী প্রচারণায় মুখর চায়ের আড্ডা। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ছুটছেন চেয়ারম্যান-মেম্বার প্রার্থীরা। এবারের ইউপি নির্বাচন বিএনপি প্রার্থী না দিলেও মাঠে রয়েছে আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীরা। তবে বিএনপির অনেক প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনী লড়াইয়ে রয়েছেন।
তবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সমস্যা বাড়ছে। নৌকা প্রার্থীর সঙ্গে বিদ্রোহী ও অপর স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকদের বিরোধ বেড়েই চলেছে। মঙ্গলবার বিএনপির স্বতন্ত্রপ্রার্থী সোহেল রানা তার আনারস প্রতিকের পোষ্টার ছিড়া, আগুনে পুড়ানো, ভয়-ভীতির অভিযোগ করেছে উপজেলা রিটানিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট।

অভিযোগে বলেন, নৌকার প্রতিকের প্রার্থীসহ তাদের সমর্থকরা ভেড়াপোড়া বাজার, ভালাম উচ্চ বিদ্যালয় ও তালগাছি হাটে ভোটের পোষ্টার ছিড়ে পুড়িয়ে ফেলেছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে এই ইউনিয়নের প্রতিটি কেন্দ্রই ঝুকিপূর্ণ হবে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।
এদিকে পারিলা ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন এই উপজেলায় আওয়ামী লীগের মনোনীত একমাত্র নারী প্রার্থী ফাহিমা বেগম। মঙ্গলবার বিকালে হাট রামচন্দ্রপুরে নৌকার পক্ষে নির্বাচনী কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা মহিলা লীগ সভানেত্রী মর্জিনা পারভীন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি সোহরাব হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নবীবুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সহদপ্তর সম্পাদক নজরুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন নৌকার প্রার্থী ফাহিমা বেগম। উপস্থিত ছিলেন পারিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। পরে নির্বাচনী পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়।

অপরদিকে তৃতীয় দফা ইউপি নির্বাচনের প্রচারণায় প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় পার করলেও উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন নৌকা প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী বজলে রেজবি আল হাসান মুঞ্জিল। তবে ওই ইউনিয়নেও সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী প্রতিদ্বন্দ্বি সদস্যরা ভোটের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।

গত ১১ নভেম্বর প্রতীক বরাদ্দ শেষে শুরু হয় প্রচারণা। পবা উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হচ্ছে। এই উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে ছয়টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ২৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন যারা-হড়গ্রাম ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতিকে এ্যাডভোকেট মো.আবু আসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী অটোরিক্সা প্রতিকে মো. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পাটির হাতুড়ি প্রতিকে ফজলুর রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ নৌকা প্রতিক মো. ফারুক হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোড়া প্রতিকে মো. তাজুল ইসলাম।
দামকুড়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতিকে মোহাম্মদ সাহাজাহান আলী, স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোড়া প্রতিকে আব্দুস সালাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোটরসাইকেল প্রতিকে তরিকুল ইসলাম চুন্নু, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ নৌকা প্রতিক মো. রফিকুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী চশমা প্রতিকে মো. রেজাউল করিম সরকার।

পারিলা ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ নৌকা প্রতিক মোসা. ফাহিমা বেগম, স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতিকে সাইফুল বারী ভুলু, স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোড়া প্রতিকে সাঈদ আলী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতিকে রাজু হোসেন।
ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ নৌকা প্রতিকে মো. শাহাদাৎ হোসাইন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতিকে সোহেল রানা, স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোড়া প্রতিকে আফজাল হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোটরসাইকেল প্রতিকে মুঞ্জুর মোর্শেদ। হুজুরীপাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী মোটরসাইকেল প্রতিকে দেওয়ান মো. রেজাউল করিম, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ নৌকা প্রতিক গোলাম মোস্তফা।

দর্শনপাড়া ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ নৌকা প্রতিক কামরুল হাসান রাজ, স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতিকে শাহাদাৎ হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোড়া প্রতিকে বাবলুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোটরসাইকেল প্রতিকে রমজান আলী, বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পাটির হাতুড়ি প্রতিকে মাইনুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অটোরিক্সা প্রতিকে আম্মাতুন নেশা। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৮ নভেম্বর।

আরবিসি/১৬ নভেম্বর/ রোজি

 

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category