স্টাফ রিপোর্টার : ‘আমি এই বাংলার পাড়াগাঁয়ে বাঁধিয়াছি ঘর’ স্লোগানে রাজশাহীতে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী নবম জীবনানন্দ কবিতামেলা। শুক্রবার বেলা ১১টায় নগরীর বরেন্দ্র কলেজ প্রাঙ্গনে কবিকুঞ্জ আয়োজিত এ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ছিলেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। উদ্বোধক ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা।
কবিকুঞ্জ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামানিকের সভাপতিত্বে শুরুতে জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা ও কবিকুঞ্জ পতাকা উত্তোলন করেন প্রধান অতিথি ও উদ্বোধক। এসময় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন রাজশাহী জয় বাংলা সাংস্কৃতিক জোটের শিল্পরা। এরপর মেলার ভাবকবিতা, আবৃত্তি, দেশাত্মবোধক সঙ্গীত পরিবেশনা, স্বাগত সম্ভাষণ, শোক প্রস্তাব পাঠ ও এক মিনিট নীরবতা পালন, মোড়ক উন্মোচন ও শুভেচ্ছা বক্তৃতা প্রদান পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, এক সময় রাজশাহীতে ব্যাপক সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চা হতো। ১৯৭৫‘র পরবর্তী সেই ধারা থমকে যায়। তখন সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চা নিয়ে নানা অপপ্রচার করা হয় এবং ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার অপপ্রয়াস চালানো হয়। বর্তমানে এই অপচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে সুখের বিষয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়েছেন। সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক পরিবেশ বজায় রাখতে কবিকুঞ্জের এই কবিতা মেলাসহ বিভিন্ন আয়োজন কার্যকর ভুমিকা পালন করছে। আগামীতে এমন আয়োজন আরো বৃহৎ পরিসরে হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা বলেন, কবিরা কখনো চলে যায় না। কবিরা অনন্ত-জীবন্ত। তাঁরা এক খন্ড জীবনের পর অনন্ত জীবনে চলে যায়। তেমনি এক খন্ড জীবন থেকে অনন্ত জীবনে চলে গেছেন কবি জীবনানন্দ। তিনি বেঁচে আছেন তাঁর অনবদ্য কবিতায়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জীব কুমার ভাটি এবং কবি ও গবেষক অধ্যক্ষ ড. তসিকুল ইসলাম রাজা। স্বাগত বক্তব্য দেন কবিকুঞ্জের সাধারণ সম্পাদক কবি আরিফুল হক কুমার।
উদ্বোধনী অধিবেশনে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার, বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের সদস্য কবি আসাদ মান্নান, কবি মাকিদ হায়দারসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা, কবি ও লেখকবৃন্দ, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন কবিকুঞ্জের কোষাধ্যক্ষ আলমগীর মালেক। অনুষ্ঠানে কবিকুঞ্জ মুজিব সংকলন ও কবিকুঞ্জ সংকলন-২০২১ বই এর মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিবৃন্দ।
কবিতামেলার দ্বিতীয় দিন শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কবিতা ভ্রমন, বিকেল ৪টায় ১ম অধিবেশনে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কথাসাহিত্যিক জাকির তালকুদারের বক্তৃতা, আমন্ত্রিত বাচিকশিল্পীদের কণ্ঠে কবিতা আবৃত্তি অনুষ্ঠিত হবে। এদিন দ্বিতীয় অধিবেশনে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কবিকুঞ্জ পদক ও সম্মাননা প্রদান করা হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বরেণ্য অর্থনীতিবিদ ও রবীন্দ্র গবেষক প্রফেসর সনৎকুমার সাহা। এ বছর কবিকুঞ্জ পদক-২০২১ পেয়েছেন কবি আমিনুল ইসলাম।
আরবিসি/১২ নভেম্বর/ রোজি