স্টাফ রিপোর্টার : ১৫০ টাকা খরচায় রাজশাহীতে পুলিশের কনস্টেবল পদের চাকরি পেয়ে গেলেন ৫৪ জন। মৌখিক পরীক্ষা শেষে সোমবার রাতে তাঁদের প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে।
এখন সরকারি খরচে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উতরে গেলেই তাঁদের ব্যবস্থা করা হবে প্রশিক্ষণের। পেশাদারিত্বের প্রশিক্ষণ শেষে তাঁরা যোগ দেবেন কর্মস্থলে।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, পুলিশের নিয়োগ নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে একটা ধারণা ছিলো যে তদবির আর ঘুষ ছাড়া চাকরি মেলে না। কিন্তু এই ধারণা এবার মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁরাও বলছেন একই কথা। তাঁদের ভাষ্য, শুধু নিজের যোগ্যতায় তাঁরা ধরতে পেরেছেন চাকরি নামের সোনার হরিণ। শুধু ১০০ টাকার ট্রেজারি চালান আর আবেদনের খরচ মিলে ১৫০ টাকায় সরকারি চাকরি পেয়েছেন তারা।
সারাদেশে প্রায় তিন হাজার কনস্টেবল নিয়োগের জন্য গত সেপ্টেম্বরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। রাজশাহী জেলায় নিয়োগ দেওয়ার কথা ছিলো ৫৪ জন।
এরমধ্যে ৪৬ জন পুরুষ ও ৮ জন নারী। তবে অনলাইনে আবেদন করেন ৯ হাজার ৬৫৬ জন। পুলিশ সদর দপ্তর চাকরিপ্রার্থীদের আবেদনে দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে।
এতে বাদ পড়েন ৭ হাজার ৪৯৬ জন। বাকি ২ হাজার ১৬০ জন ডাক পান শারীরীক পরীক্ষার জন্য। ২৯ অক্টোবর শুরু হয় এ পরীক্ষা। নতুন নিয়মে কয়েকটি ধাপে শারীরীক পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হন ৬২২ জন। তাঁরা লিখিত পরীক্ষা দেন। এ পরীক্ষায় পাস করেন ১৫২ জন। সোমবার তাঁদের নেওয়া হয় মৌখিক পরীক্ষা।
তারপর রাত ১২টার দিকে সবার উপস্থিতিতেই প্রাথমিকভাবে নির্বাচিতদের নাম ঘোষণা করেন জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন।
প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ৫৪ জনের পাশাপাশি অপেক্ষমান তালিকাও প্রকাশ করা হয়। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় কেউ বাদ পড়লে অপেক্ষামান তালিকা থেকে নেওয়া হবে।
রাতেই এসপি এবিএম মাসুদ হোসেন নির্বাচিতদের ফুল দিয়ে বরণ করে মিষ্টিমুখ করান। তিনি বলেন, নতুন নিয়মে এবার পুলিশে নিয়োগ হচ্ছে। অনলাইনে আবেদন করার পর তথ্য-যাচাই বাছাই করে শারীরীক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিতদের তালিকা করেছে পুলিশ সদর দপ্তর।
তারপর রাজশাহীতে শারীরীক পরীক্ষা নেওয়া হয়। এতে উত্তীর্ণদের লিখিত পরীক্ষার খাতা দেখা হয়েছে সদর দপ্তরে। শুধু কোড নম্বরে পাঠানো খাতা দেখে বোঝার উপায় ছিল না এটা কার খাতা। তাই এ নিয়োগে কোন প্রার্থীর পক্ষে কেউ কাজ করবে, এ রকম কোন সুযোগই ছিলো না।
যাঁরা চাকরি পেয়েছেন তাঁরা ঘুষ-তদবির ছাড়াই পেয়েছেন। কোন দালাল যদি চাকরিপ্রাপ্তদের বলে যে চাকরি আমি করে দিয়েছি, তাহলে এটা এ শতাব্দির সেরা মিথ্যা কথা।
আরবিসি/১০ নভেম্বর/ রোজি