আরবিসি ডেস্ক : নতুন ভাড়ায় নির্ধারণের পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন বাস মালিক-শ্রমিকরা। সোমবার (৮ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যাচ্ছে, রাজধানীর অভ্যন্তরেও চলছে বাস।
তবে বাড়তি ভাড়া গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের। ভাড়া বাড়ায় সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, তেলের দাম বাড়ায় ভাড়া ঠিকই বৃদ্ধি পেলো কিন্তু তেলের দাম কমানোর উদ্যোগ নেই কারো।
এদিকে, গতকাল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এবং বাসমালিকদের সভায় ডিজেলের দাম বাড়ায় বাস ভাড়া ২৭ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরিবহন ধর্মঘট তুলে নেওয়ার পর রোববার সন্ধ্যা থেকেই রাজধানীতে বাস চলাচল শুরু হয়। রাতেই ঢাকা থেকে দূরপাল্লার বাস ছাড়তে দেখা গেছে।
সোমবার সকালে গাবতলীতে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দূরপাল্লার বাস এসে রাজধানীতে পৌঁছেছে। তারা নতুন নির্ধারিত ভাড়া আদায় করছে। কোনো কোনো পরিবহন নতুন নির্ধারিত ভাড়ার চেয়েও বাড়তি ভাড়া আদায় করছে বলে অভিযোগ অনেক যাত্রীর। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ যাত্রীরা। তবে বাসের সুপারভাইজররা বলছেন, কোন ধরনের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে না। হঠাৎ করে ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় কেউ কেউ এমন মনে করছেন।
এদিকে, মিরপুর-১ থেকে গুলিস্তান যাবেন মোহাম্মদ ইউসুফ হোসেন। তিনি দিশারী পরিবহনের একটি বাসে ওঠার সময় হেলপারের মুখে ভাড়ার কথা শুনে প্রায় মাথায় হাত দেওয়ার পালা।
তিনি বলেন, আগে মিরপুর-১ নম্বর থেকে গুলিস্তান যেতাম ২৫ টাকা। কিন্তু এখন সেখানে চাওয়া হচ্ছে ৩৫ টাকা। জনপ্রতি ১০ টাকা করে বাড়িয়েছে। এটা নৈরাজ্য। এটা হতে পারেনা। সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি ভাড়া কমাতে।
যাত্রী সাহনাজ আক্তার বলেন, তেলের দাম লিটারে ১৫টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার। এটি অযৌক্তিক। লিটারে ৫ টাকা করে বাড়ালে সাধারণ মানুষের জন্য ভালো হতো। সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর ভয়াবহ চাপ তৈরি হয়েছে।
বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন আরিফুল ইসলাম। তিনি উত্তরা থেকে মিরপুর-১০ নম্বর এসেছেন। ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উত্তরা থেকে মিরপুর আসতে আগে ভাড়া ছিল ৩০ টাকা। এখন সেখানে নিচ্ছে ৪০ টাকা। আমাদের বেতন তো আগের মতোই আছে। তবে নতুন বাড়তি ভাড়ার টাকা আসবে কোত্থেকে।
তিনি বলেন, চাকরিজীবী মানুষের যে বেতন বাড়ছে না, সেটি নিয়ে কেউ কথা বলে না।এমনিতেই নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। তার ওপর আবার যানবাহনের ভাড়া বৃদ্ধি ২৭ শতাংশ।
এ বিষয়ে যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, বাস ও লঞ্চযাত্রীদের ওপর জুলুম করা হয়েছে। ধর্মঘটের মধ্য দিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলে কৌশলে ভাড়া বাড়িয়ে নিলেন মালিকরা। অযৌক্তিক পদ্ধতিতে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। রেওয়াজ অনুযায়ী, তেলের দাম বাড়লে দূরপাল্লার বাস এবং সিএনজির দাম বাড়লে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর বাসের ভাড়া বাড়ানো হয়। এবার তেলের দাম বাড়ার অজুহাতে সব বাসের ভাড়া বাড়ানো হলো।
এর আগে ভাড়া বাড়ানো বা তেলের বাড়তি দাম প্রত্যাহারের দাবিতে শুক্রবার সকাল থেকে বাস ও ট্রাক এবং শনিবার বিকাল থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ছিল।
আরবিসি/০৮ নভেম্বর/ রোজি