স্টাফ রিপোর্টার : কৌশলে ডেকে নিয়ে নারীর সঙ্গে অশ্লীল ছবি তুলে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল রাজশাহীর একটি সংঘবদ্ধ চক্র। অভিযান চালিয়ে নারীসহ চক্রটির চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি)। সোমবার (১ নভেম্বর) রাতে নগরীর বহরমপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- নগরীর কাটাখালী থানার সমসাধীপুর পশ্চিমপাড়ার সায়েম উদ্দিন শ্যাম (৩৫), বোয়ালিয়া মডেল থানার হাদির মোড় নদীর ধার এলাকার মো. পারভেজ (৩২), এয়ারপোর্ট থানার বায়া তেরিপাড়া এলাকার গৃহবধূ রাজিয়া সুলতানা সুমা (৩০) এবং রাজপাড়া থানার বহরমপুর এলাকার গৃহবধূ শরিফা আক্তার সাথী (২৭)।
তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া ৪৫ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই কাণ্ডে ব্যবহৃত ৪টি মোবাইল ফোনও জব্দ করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত একজন ল্যান্স কর্পোরালকে জিম্মি করে এই টাকা আদায় করে চক্রটি।
মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) দুপুরের দিকে নগর পুলিশ সদর দফতরে অভিযানের আদ্যপ্রাপ্ত সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক।
তিনি জানান, গত ৩১ অক্টোবর শিরোইল বাস টার্মিনাল থেকে অটোরিকশায় ওঠেন পঞ্চাশোর্ধ্ব ওই অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য। ওই সময় অটোরিকশায় ওঠেন আরও দুইজন নারী। তারা রাজশাহীতে নতুন এসেছেন জানিয়ে ঠিকানা লেখা চিরকুট অবসরপ্রাপ্ত ওই সেনা সদস্যের হাতে ধরিয়ে দেন। সরল বিশ্বাসে তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছিলেন তিনি।
পথে নগরীর সিটি বাইপাশ ঐতিহ্য চত্বরে পূর্বকল্পনা মাফিক আরও দুই যাত্রী ওঠেন অটোরিকশায়। ওই সেনা সদস্যকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তারা বহরমপুরের শরিফা আক্তার সাথীর বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে ওই সেনা সদস্যকে জোর করে শরিফার সঙ্গে অশ্লীল ছবি তোলেন। তাকে জিম্মি করে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। অন্যথায় এসব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।
বাধ্য হয়ে স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য সঙ্গে রাখা ৫০ হাজার টাকা অপহরণকারীদের হাতে তুলে দেন ওই সেনা সদস্য। একদিনের মধ্যে আরও এক লাখ টাকা পৌঁছে দেওয়ার শর্তে ছাড়া পান তিনি। সেই টাকা না পেলে অশ্লীল ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানোর হুমকি দেন অপহরণকারীরা। শেষে বাধ্য হয়ে নগর গোয়েন্দা পুলিশে অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী। ভুক্তভোগীকে নিয়েই জড়িতদের গ্রেফতারে দ্রুত অভিযানে নামে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। বহমরপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় দুই নারীসহ চক্রের চার সদস্যকে।
আরএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে দীর্ঘদিন ধরে এই কাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন গ্রেফতাররা। পরে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
আরবিসি/০২ নভেম্বর/ রোজি