• বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১১ পূর্বাহ্ন

আমন মৌসুমে খরা মোকাবেলায় সেচ সুবিধা দেবে বিএমডিএ

Reporter Name / ৯৮ Time View
Update : বুধবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় আমন মৌসুমে প্রায় ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়। আমন ধান মূলত বৃষ্টি নির্ভর ধান। কৃষকগণ বৃষ্টির উপর নির্ভর করে আমন চাষাবাদ করেন কিন্তু চলতি আমন মৌসুমে হঠাৎ করে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ হতে প্রচন্ড খরা শুরু হওয়ায় কৃষকগন দিশেহারা হয়ে পড়ে। কৃষকগনের এই সংকট মুহুর্তে কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রায় চার হাজার সরকারী খাস পুকুর থাকলেও পুকুরগুলি লীজ দেওয়ার ফলে কৃষকগণ তথা হতে সেচ গ্রহণ করতে পারে না।

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গোদাগাড়ী উপজেলার বালিয়াঘাট্টা নামক স্থানে মহানন্দা নদীতে পন্টুন স্থাপন করে সাড়ে ৬ কি. মি. পাইপ লাইন নির্মাণ করে। পাশাপাশি ১০ টি পুকুরসহ মির্জাপুর খাড়ীতে পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে। মির্জাপুর খাড়ী হতে ১৩ টি এলএলপি এর মাধ্যমে প্রায় ৯শো’ হেক্টর জমিতে সম্পূরক সেচ প্রদান করছে এবং তা চলমান রয়েছে। এছাড়াও বিএমডিএ ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে গোদাগাড়ী উপজেলায় পদ্মা নদীর সুলতানগঞ্জ, সারেংপুর ও হাটপাড়া নামক স্থানে পন্টুন স্থাপন করেছে এবং স্থাপিত পন্টুন হতে পানি উত্তোলন করে ১০ টি পুকুর ও প্রায় ৪০ কি. মি. খালে পানি সংরক্ষনের ব্যবস্থা করেছে। সংরক্ষিত পানি হতে ৬০ টি এলএলপি এর মাধ্যমে প্রায় সাড়ে চার হাজার হেক্টর জমিতে সেচ প্রদান করে ভূ-পরিস্থ পানি ব্যবহারের একটি বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

ফরিদপুর গ্রামের কৃষক মো. হাবিবুর রহমান বলেন তার প্রায় ৬৫ বিঘা জমিতে সেচের অভাবে শুধুমাত্র একটিমাত্র ফসল হতো, এ বছরের মত আমন মৌসুমে খরা হলে মাত্র ১ টি সেচের জন্য আমন ধান মরে যেতো। তার জমিতে এখন তিনটি করে ফসল উৎপাদন হয়। যা তিনি কল্পনা করতে পারেননি। এ ধরনের আরো প্রকল্প তৈরী করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। মির্জাপুর এলাকার কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন যে, তার জমির পাশে খাড়ীতে বিএমডিএ এর একটি সোলার চালিত এলএলপি আছে। মহানন্দা নদী হতে এই খাড়ীতে পানি আসে। চলতি আমন মৌসুমে প্রথম ২ দিন খাড়ীতে বৃষ্টির পানি ছিল তা শেষ হয়ে যায়। পরবর্তীতে নদী হতে পানি এনে আমনে জরুরী সেচ প্রদান করা হচ্ছে। চলতি মৌসুমে এমন খরা যে বিগত ১০ বৎসরে দেখা যায় নাই। সোলার এলএলপি না থাকলে একটি সেচের জন্য প্রায় ১৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান মরে যেতো। সরকারী ভাবে নিষেধাজ্ঞার কারনে গোদাগাড়ী উপজেলায় গভীর নলকূপ খনন করা হচ্ছে না। পূর্বে খননকৃত ৭১৪ টি গভীর নলকুপের মধ্যে ৬১৯ টি গভীর নলকুপ মাধ্যমে আমন মৌসুমে খরা মোকাবেলায় ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে সম্পূরক সেচ প্রদান করা হচ্ছে।

গোদাগাড়ী বরেন্দ্র অফিসের সহকারী প্রকৌশলী মো. রফিকুল হাসান বলেন যে, গোদাগাড়ী উপজেলায় ৭১৪ টি গভীর নলকুপ এবং ৬০ টি এলএলপি আছে। বিগত বৎসরগুলিতে আমন মৌসুমে খুব একটা সেচের প্রয়োজন হতো না। আমন ধান মূলতঃ বৃষ্টি নির্ভর ফসল। হঠাৎ করে এ বৎসর খরা হওয়ায় কৃষকগন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সবগুলি এলএলপি ও গভীর নলকুপ জরুরী ভাবে চালু করে কৃষকদের আমন ধান চাষাবাদের চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করছি সেচের কারনে কোন আমন ফসলের ক্ষতি হবে না। তবে সরকারী খাস পুকুরগুলি হতে যদি জরুরী সেচের ব্যবস্থা করা যেতো তাহলে আমাদের উপর চাপ কমে যেতো এবং যে সমস্ত এলাকায় সেচের কোন ব্যবস্থা নেই, সেইসব এলাকার খাস পুকুরগুলি সেচের জন্য উন্মুক্ত করে দিলে অসহায় কৃষকদের আমন ধান খরার কারণে নষ্ট হওয়ার আশংকা থাকতো না।

আরবিসি/২৭ অক্টোবর/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category