• শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২৩ পূর্বাহ্ন

বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশ

Reporter Name / ১২২ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২১ অক্টোবর, ২০২১

আরবিসি ডেস্ক : প্রত্যাশা নিয়ে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গেছে বাংলাদেশ। তবে বিশ্বমঞ্চে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় টাইগাররা। টানা দুই প্রস্তুতি ম্যাচ হারের পর বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৬ রানে হার। এতে গেল গেল রব উঠল চারিদিকে। প্রত্যাশার সেই চাপ পাহাড় হয়ে চাপল বাংলাদেশ দলের প্রতিটি সদস্যের কাঁধে। প্রথম পর্ব থেকেই বিদায়ের শঙ্কা জাগল তাতে। সে শঙ্কা উড়িয়ে মাসকাটের আল আমেরাত স্টেডিয়ামের বাইরে ছুড়ে ফেলেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।

আজ (বৃহস্পতিবার) পাপুয়ানিউগিনির বিপক্ষে আগে ব্যাট করে স্কোর বোর্ডে ১৮১ রানের বিশাল পুঁজি পায় বাংলাদেশ। সমীকরণ অনুযায়ী ৩ রানের ব্যবধানে জিতলেই নিশ্চিত হতো সুপার টুয়েলভ। তবে দুই দলের ব্যবধান মাঠেই স্পষ্ট করলেন টাইগার ক্রিকেটাররা। পিএনজিকে ৯৭ রানে অলআউট করে ৮৪ রানের রেকর্ড ব্যবধানে জয় টাইগারদের। নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে এর আগে বাংলাদেশ দলের সর্বোচ্চ রানের জয়ের রেকর্ড ছিল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে, ৭১ রানে। ২০১২ সালে।

এতে ৩ ম্যাচে ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ ‘বি’ থেকে সবার আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের টিকিট নিশ্চিত করল বাংলাদেশ দল। সুপার টুয়েলভের লড়াইয়ে অবশ্য কোন গ্রুপে পড়বে বাংলাদেশ, সেটি চূড়ান্ত হয়নি এখনো। দিনের অপর ম্যাচে রাত ৮টায় মুখোমুখি হবে স্বাগতিক ওমান ও স্কটল্যান্ড। এ ম্যাচের ফলের উপর নির্ভর করবে ‘বি’ গ্রুপ থেকে বাংলাদেশ দলের সঙ্গী হচ্ছে কে, আর সুপার টুয়েলভের কোন গ্রুপে যাচ্ছে টাইগাররা।

তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ পেয়ে নিজেদের স্বরূপের প্রতিচ্ছবি পুনরায় ফুটিয়ে তুলল বাংলাদেশ দল। ব্যাট হাতে অনবদ্য পারফরম্যান্স মাহমুদউল্লাহ, সাকিব, সাইফউদ্দিনদের। বোলাররা দেখালেন দাপট।

এদিন আগে ব্যাট করে স্কোর বোর্ডে ১৮১ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। জবাব দিতে নেমে রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রা ভূমিকম্পের প্রকোপই যেন টের পেল পাপুয়া নিউ গিনি। গুটিয়ে গেল মাত্র ৯৭ রানে। পিএনজির এই ধ্বসের শুরুটা হয় সাইফউদ্দিনের হাত ধরে। নিজের দ্বিতীয় ও ইনিংসের তৃতীয় ওভারে এই অলরাউন্ডার ফেরান লেগা সিয়াকাকে (৫)।

এরপর পিএনজি অধিনায়ক আসাদ ভালার (৬) উইকেট তুলে নেন তাসকিন। তবে এতে তাসকিনের যতটা না অবদান, তার থেকে ঢের বেশি সোহানের। চোখ ধাঁধানো এক ক্যাচ নেন এই উইকেটরক্ষক। পরের ওভারে দৃশ্যপটে সাকিব। জোড়া আঘাতে বিদায় করেন চার্লস আমিনি (১), সেসে বাউকে (৭)। পাওয়ার-প্লের ৬ ওভারে ১৭ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে পাপুয়ানিউগিনি। সাকিব নিজের তৃতীয় শিকার বানান সিমন আতাইকে (০)।

সতীর্থদের সফলতার ভিড়ে শেখ মেহেদী হাসান উদযাপনের উপলক্ষ পান নরম্যান ভানুয়াকে (০) তুলে নিয়ে। এতে ২৪ রানের মধ্যেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে পাপুয়া নিউ গিনি। সাকিবের চতুর্থ শিকার হিরি হিরি। নিজের কোটার ৪ ওভার শেষে মাত্র ৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন টাইগার অলরাউন্ডার। অষ্টম উইকেট জুটিতে লড়াইয়ের চেষ্টা চালান কিপলিন ডোরিগা আর চাদ সোপার। দুজনের ২৫ রানের পার্টনারশিপের মাথায় সোপান ১১ রান করে ফেরেন সাইফদ্দিনের বলে বোল্ড হয়ে।

শেষদিকেও ডোরিগা ৪৬ রান ছাড়া পাপুয়ানিউগিনির আর কোন ব্যাটসম্যান প্রতিরোধ গড়তে না পারলে তারা গুটিয়ে যায় মাত্র ৯৭ রানে। এতে ৮৪ রানের রেকর্ডগড়া জয় পায় বাংলাদেশ। টাইগারদের হয়ে সাকিব আল হাসান সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন। ২ উইকেট মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের।

এর আগে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে শুরুটা ভালো হয়নি। ওমানের বিপক্ষে ম্যাচে একাদশে ফিরেই অর্ধশতকের স্বাদ পাওয়া নাঈম শেখ এ ম্যাচে রানের খাতা খুলতে পারেননি। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই সাজঘরে ফেরেন নাঈম। দ্বিতীয় উইকেটে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন লিটন আর সাকিব। গড়েন ৫০ রানের পার্টনারশিপ। ইনিংসের অষ্টম ওভারে পিএনজির অধিনায়ক আসাদ ভালার প্রথম বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন লিটন। ফেরেন ২৩ বলে ২৯ রান করে।

টানা ব্যর্থ মুশফিকুর রহিম। এ ম্যাচেও বৃত্ত ভাঙতে পারলেন না। সাইমন আতাইকে উইকেট দিয়ে বিদায় নেন ৫ রান করে। একপ্রান্ত আগলে রেখে রানের গতি সচল রাখেন সাকিব। ছুটছিলেন ফিফটির দিকে। কিন্তু আগে ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও আক্ষেপ সঙ্গী তার। আসাদ ভালাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে চার্লস আমিনির হাতে ধরে পড়েন। ৩ ছয়ে ৩৭ বলে ৪৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

এদিন ব্যাট হাতে নেমে জমানো খেদ মেটাতে চাইলেন মাহমুদউল্লাহ। তাতে সফলই বলতে হবে তাকে। মাত্র ২৭ বলে নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ফিফটি তুলে নেন। তবে পরেই বলেই সাজঘরের পথে হাঁটেন ২৮ বলে ৫০ রানের ইনিংস খেলে। যেখানে সমান ৩টি করে চার-ছক্কা মারেন তিনি। নুরুল হাসান সোহান নিজের মান রাখতে পারছেন না। শূন্য হাতেই ধরলেন সাজঘরের পথ।

শেষদিকে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ব্যাটে ঝড়। তার ৬ বলে অপরাজিত ১৯ রানের সঙ্গে তরুণ আফিফ হোসেনের ১৪ বলে ২১ রানের সুবাদে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ দল সংগ্রহ পায় ১৮১ রানের। পাপুয়া নিউ গিনির হয়ে অধিনায়ক ভালা, কবুয়া মোরিয়া ও দামিয়েন রাভু প্রাত্যেকে ৩টি করে উইকেট নেন।

আরবিসি/২১ অক্টোবর/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category