রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো ক্যাম্পাস। শুধু শিক্ষার্থী নন, তাদের সঙ্গে এসেছেন অভিভাবকরাও। দীর্ঘদিন ধরে স্তব্ধ ক্যাম্পাসে যেন প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। তাদের কোলাহলে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো রাজশাহী শহরও।
সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শুরু হবে ভর্তি পরীক্ষা। তাই সকাল ৭টা থেকেই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে শুরু করেন। সকালেই ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষার্থীরা নিচ্ছিলেন শেষ সময়ের প্রস্তুতি। সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনগুলো খুলে দেওয়া হয়। এরপর ভবনগুলোর সামনে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অপেক্ষা করতে দেখা যায়। আবার অনেকে নিজের পরীক্ষার কেন্দ্র খুঁজতে শুরু করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আজিজুর রহমান জানান, সকাল সাড়ে ৯টায় পরীক্ষা শুরুর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. চৌধুরী মো. জাকারিয়া ও অধ্যাপক ড. সুলতান উল ইসলামসহ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘জালিয়াতি ঠেকাতে গত কয়েক বছর ধরে আমাদের যেই প্রস্তুতি ছিল এ বছরও সেই প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। সবকিছুই আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।’
এদিকে ভর্তিচ্ছুদের নিরাপত্তায় রাজশাহী মহানগর পুলিশ তিনস্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে। বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের এলাকায় এরই মধ্যে সিসিটিভির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। নিরাপত্তাজনিত যেকোনো প্রয়োজনে দ্রুত সারা দেবে পুলিশ।
দুপুরে ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায় যেন দীর্ঘদিনের সব নিস্তব্ধতা ভেঙে প্রাণের উচ্ছাস বইছে সবখানে। ভর্তিচ্ছুদের সুবিধার্থে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা এলাকা, বিনোদপুর ও মেইন গেট থেকে বিভিন্ন একাডেমি ভবন সহজে চেনার জন্য নির্দেশক বসানো হয়েছে।
একাডেমিক ভবনগুলোর সামনে অভিভাবকদের বসার জন্য নির্দিষ্ট স্থান প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া ক্যাম্পাসে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটে ময়মনসিংহ থেকে পরীক্ষা দিতে এসেছেন আরিফ রহমান নামের এক ভর্তিচ্ছু।
তিনি বলেন, পরীক্ষার একদিন আগেই রাজশাহী চলে এসেছি। আমি ‘সি’ ইউনিটের দ্বিতীয় শিফটে পরীক্ষা দেবো। আমার সিট পড়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমি ভবনে। ক্যাম্পাস ঘুরে ভবন দেখে নিয়েছি। এছাড়া এই ক্যাম্পাস বেশ পছন্দ হয়েছে।
ক্যাম্পাসের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে আরো এক ভর্তিচ্ছুর সঙ্গে দেখা হয়। তিনি বলেন, আমার সিট পড়েছে শহীদুল্লাহ্ হক কলা ভবনে। এই ভবন দেখার জন্য আগেই ক্যাম্পাসে এসেছি। গেট থেকে ভবন নির্দেশক থাকায় কারো সাহায্য ছাড়াই চিনতে পেরেছি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়ে এখন চলছে ভর্তিচ্ছু ও তাদের অভিভবাবকদের কোলাহল। অভিভাবকরা জানান, শুনেছি রাবির ক্যাম্পাস অনেক সুন্দর। এখন নিজ চোখে দেখে প্রাণ জুড়িয়েছে। রাজশাহী নগর আরও সুন্দর লেগেছে বলে জানান অভিভবাকরা।
আরবিসি/০৪ অক্টোবর/ রোজি