আরবিসি ডেস্ক : সাম্প্রতিক ফর্ম কিংবা দলীয় শক্তি বিবেচনায় বাংলাদেশের চেয়ে পরিষ্কারভাবেই এগিয়ে ভারতীয় ফুটবল দল। তবু প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারানোর আত্মবিশ্বাস নিয়েই ভারতের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জ জয়ের প্রত্যয় জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া।
সেই চ্যালেঞ্জে শতভাগ সফল না হলেও, মূল্যবান এক পয়েন্ট ঠিকই আদায় করে নিয়েছে বাংলাদেশ। তারকা ফুটবলার সুনীল ছেত্রীর গোলে পিছিয়ে পড়লেও দ্বিতীয়ার্ধে ইয়াসিন আরাফাতের সমতাসূচক গোলে ড্র নিয়েই মাঠ ছেড়েছে অস্কার ব্রুজনের শিষ্যরা।
ম্যাচের ২৬ মিনিটের সময় উদান্ত সিংয়ের এসিস্টে গোল করেন সুনীল ছেত্রী। প্রথমার্ধেই সমতা ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু তা কাজে লাগানো যায়নি। দ্বিতীয়ার্ধেও মিস হয় সহজ এক সুযোগ। তবে ৭৪ মিনিটে জামাল ভূঁইয়ার কর্নার থেকে রাকিবের হেডের পর ইয়াসিনের দ্বিতীয় হেডে সমতাসূচক গোল পায় বাংলাদেশ।
ম্যাচের ৫৪ মিনিটের সময় লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন বিশ্বনাথ ঘোষ। ফলে অতিরিক্ত যোগ করা চার মিনিটসহ শেষের ৪০ মিনিট একজন কম নিয়েই খেলতে হয়েছে। এতেও দমে যাননি জামাল ভূঁইয়া, সাদ উদ্দিনরা। প্রায় সমানে সমান লড়ে সমতাসূচক গোল আদায় করে নিয়েছেন তারা।
দুই ম্যাচে এক জয় ও এক ড্রয়ে চার পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে এখন বাংলাদেশ। আগামী বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) তৃতীয় ম্যাচে স্বাগতিক মালদ্বীপের মুখোমুখি হবে তারা। প্রথম রাউন্ডের শেষ ম্যাচ ১৩ অক্টোবর, প্রতিপক্ষ নেপাল।
মালদ্বীপের জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধের পুরোটা সময় আধিপত্য বিস্তার করেছে ভারতই। বল দখলের লড়াইয়ে অন্তত ৬৫ শতাংশ সময় তারাই ছিল নিয়ন্ত্রণে। এ সময়ের মধ্যে লক্ষ্য বরাবর চারটি শট করে তারা। যেখানে বাংলাদেশের অন টার্গেট শট ছিল মাত্র একটি।
ম্যাচের প্রথম সুযোগটা এসেছিল বাংলাদেশের সামনেই। ষষ্ঠ মিনিটে জামালের পাস থেকে বাম পায়ের লং রেঞ্জ শট নিয়েছিলেন ইয়াসিন আরাফাত। কিন্তু সেটি পোস্টের বাম পাস দিয়ে চলে যায় বাইরে। ম্যাচের ২১ মিনিটে কর্নার থেকেও কিছু করতে পারেনি বাংলাদেশ।
পরে ম্যাচের ২৫ মিনিটের সময় বিপলু আহমেদের ক্রস থেকে পাওয়া বলে ডি-বক্সের মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে ডান পায়ের শট নেন জামাল। কিন্তু সেটিও ছিল লক্ষ্যভ্রষ্ট। ঠিক পরের মিনিটেই গোল হজম করে বাংলাদেশ। গতিময় আক্রমণে বাংলাদেশের রক্ষণকে বোকা বানায় ভারত।
ডান পাশ থেকে বল পেয়ে দ্রুততার সঙ্গে বাংলাদেশের ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন উদান্ত সিং। তার পাস নেয়ার জন্য ডি-বক্সের মাঝে অপেক্ষায় ছিলেন সুনীল ছেত্রী ও মানভির সিং। সুনীলের কাছেই পাস দেন উদান্ত। প্রথম ছোঁয়ায় নিখুঁত শটে জাল কাঁপান সুনীল। আন্তর্জাতিক ফুটবলে এটি তার ৭৬তম গোল।
বিরতির আগে সমতা ফেরানোর দুর্দান্ত সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশ দলের সামনে। সাদ উদ্দিনের পাস ডি-বক্সের মধ্যে ফাঁকায় পেয়েছিলেন বিপলু। কিন্তু তার গোলরক্ষক বরাবর নেয়া শটে কাজের কাজ কিছুই হয়নি, বেড়েছে হতাশা। ফলে পিছিয়েই থেকেই যেতে হয়েছে বিরতিতে।
দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে ৫২ মিনিটের সময় ডি-বক্সের মাঝে দারুণ জায়গায় বল পেয়েছিলেন রাকিব। কিন্তু তার ডান পায়ের শট গোল বারের ডান দিক দিয়ে বাইরে চলে যায়। এর দুই মিনিট পর লিস্টন কোলাকোকে পেছন থেকে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন বিশ্বনাথ।
ফলে ১০ জনের দল নিয়ে খানিক বিপদেই পড়ে বাংলাদেশ। একজন কম থাকা প্রতিপক্ষের ওপর চড়াও হতে শুরু করে ভারত। তবে কাজের কাজ হয়নি। উল্টো ৭৪ মিনিটের সময় জামালের নেয়া কর্নার থেকে প্রথমে হেড করেন রাকিব, সেই বল ইয়াসিনের কাছে গেলে আরেক হেডে জালে জড়ান এ ডিফেন্ডার।
ম্যাচে সমতা ফেরার পর পুনরায় লিড নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে ভারত। কিন্তু তাদের কোনো প্রচেষ্টাই কাজে লাগেনি। বাংলাদেশ দলও বল নিয়ে আক্রমণে ওঠে কয়েকবার। কিন্তু ভারতের রক্ষণে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে যাওয়ায় মেলেনি জয়সূচক গোল। তাই ড্র নিয়েই সন্তষ্ট থাকতে হয়েছে।
আরবিসি/০৪ অক্টোবর/ রোজি