স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. নাইমুল হকের বিরুদ্ধে রোগীর চোখে ইনজেকনের পরিবর্তে স্যালাইন পানি পুশ তিন দফায় ৪৬ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তিনি ইনজেকশনের বদলে চোখে স্যালাইন পানি পুশ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন রোগীর স্বামী। ভুক্তভোগী রোগীর নাম লায়লা রশীদ ( ৬৮)।
শনিবার সকালে রাজশাহী চেম্বার ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন রোগীর স্বামী হারুনুর রশীদ। সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী ব্যবসায়ী এক্য পরিষদের সভাপতি হারুনুর রশীদ বলেন, চোখ রক্ষার জন্য আমার স্ত্রীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছি। হঠাৎ করেই আমার স্ত্রী ডান চোখে সমস্যা দেখা দেয়। তখন ঢাকায় আই কেয়ার হাসপতালে একজন বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাই।
সেই ডাক্তার জানান, তিন ডোজ ইনজেকশন দিতে হবে এবং এতে খরচ পরবে ৯০ হাজার টাকা। এরপরেই ঢাকা থেকে আমার স্ত্রীকে নিয়ে এসে রাজশাহীতে চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা.নাইমুল হককে দেখাই। তিনি বিভিন্ন পরীক্ষার পরে জানান ইনজেকশন পুশ করতে হবে। তখন আমরা রাজি হয়ে যায়।
এরপর পর তিন ডোজ ইনজেকশন দেওয়া হয়। তিনি ইনজেকশন বাবদই ৪৬ হাজার টাকা নিয়েছেন। এরপর তৃতীয় ডোজ শেষ হবার ১৫ দিন পর আবার পুরোনো সমস্যা ফিরে আসে। তখন আমরা আবার ঢাকায় হারুন আই ফাউন্ডেশনে নিয়ে যায়।
সেখানকার চিকিৎসক বলেন চোখে ইনজেকশন দিতে হবে। তখন আমরা আগের তিন ডোজ ইনজেকশন দেবার এবং পরীক্ষার রির্পোট দেখাই। তখন সেই ডাক্তার নতুন করে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানান, চোখে কোন ইনজেকশন দেওয়া হয়নি বরং ডিস্টিল ওয়াটার বা স্যালাইন পানি দেওয়া হয়েছে।
ডাক্তারের বিরুদ্ধে তিনি কোন আইনি পদক্ষেপ নেবেন কিনা জানতে চাইলে রাজশাহী চেম্বারের সাবেক পরিচালক হারুনুর রশীদ বলেন, নাইমুল হক আমার পূর্ব পরিচিত। তিনি আমার সঙ্গেই যে আচরন করেছেন তাতে বোঝা যায় সাধারণ রোগীরা কতটা অনিরাপদ। তিনি চিকিৎসার মত মহান পেশাকে কলুষিত করেছে। এ বিষয়ে তিনি আইনি পদক্ষেপ নেবেন বলেও জানান।
তবে এই বিষয়ে জানতে চাইলে চক্ষু বিশেষজ্ঞ নাইমুল হক বলেন, রাজশাহীতে চোখের রেটিনা নিয়ে মূলত আমিই কাজ করে আসছি। রোগীর পরিবার যে অভিযোগ করছেন সেটা ভিত্তিহীন। রোগীর চোখের যে অবস্থা ছিল তাতে তিনটি ইনজেকশন দেবার প্রয়োজন ছিল। আমি তিনটি ডোজই সম্পূর্ণভাবে দিয়েছিলাম। রোগীর ইমপ্রুভ হয়েছিল। ইনজেকশনের বদলে স্যালাইন পানি দিলে ইমপ্রুভ কিভাবে হতো।
এর আগেও ২০১৪ সালের নাটোর সদর হাসপাতালে থাকাকালীন এই চিকিৎসকের করা অপারেশনের পর ৭ জন রোগীর দৃিষ্টশক্তি হারিয়ে ফেলার অভিযোগ ওঠে। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নাটোর সদর হাসপাতালে থাকার সময় ৭ জন রোগী ছানি নিয়ে এসেছিলেন এবং তাদের অপারেশন করা হয়েছিল। তবে সেখানে সরকারী যে ফ্রুইড ব্যবহার করা হয়েছিল সেই ফ্রুইডে ইনফেকশান ছিল । যার কারনে এই ঘটনা ঘটে। সরকারী ফ্রুইডে সমস্যা থাকলে এটা সার্জনের দোষ না।
আরবিসি/০২ অক্টোবর/ রোজি