স্টাফ রিপোর্টার : দীর্ঘদিন ধরে করোনার প্রথম ডোজের টিকা বন্ধ থাকার পরে হঠাত করে ম্যাসেজ পেয়ে টিকা নিতে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।
হাসপাতাল চত্তর পেরিয়ে চারঘাট-বাঘা মহাসড়কে লাইনে দাড়িয়েও টিকা না পাওয়ার আশঙ্কা করছেন টিকা নিতে আসা লোকজন। লোকে লোকারন্য হাসপাতাল চত্তরসহ মহাসড়কে মানষের ঢলে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো প্রবণতা দেখা যায়নি। মানুষের গাদাগাদিতে অনেকেই কভিড-১৯ টিকা নিতে না পেরে বাড়ি ফিরে গেছেন বলে জানান স্থানীয়রা। এভাবে অপরিকল্পিত ভাবে এক দিনের ব্যবধানে প্রায় ১৫ হাজার টিকা গ্রহিতাকে ম্যাসেজ প্রদানের কারনে এমন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন স্থানীয়রা। এ দায় শিকারও করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: শহীদুল ইসলাম রবিন।
সরজমিনে হাসপাতাল চত্তরে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পরেও চারঘাটের সাধারন মানুষের মাঝে করোনার টিকা নেবার আগ্রহ তেমনটি ছিল না। তবে করোনা শেষ সময়ে এসে ব্যাপক লোকজন টিকা গ্রহনের জন্য রেজিষ্ট্রেশন শুরু করে। এক পর্যায়ে হঠাত করেই প্রথম ডোজের টিকা প্রদান বন্ধ ঘোষনা করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্র্তৃপক্ষ। রেজিষ্ট্রেশন করেও অনেকেই টিকা প্রদানের ম্যাসেজ না পেয়ে অনেকটা হতাশায় ছিলেন। কিন্তু গত ২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বর এক যোগে প্রায় ১৫ হাজার টিকা রেজিষ্ট্রেশনকারী লোকজনের মোবাইলে ম্যাসেজ পেয়ে শুরু হয় টিকা দেয়ার ভিড়। ম্যাসেজ পেয়ে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে হাসপাতাল চত্তরে জড়ো হতে থাকেন টিকার ম্যাসেজ পাওয়া মানুষ। লোকে লোকারন্য হয়ে পড়ে হাসপাতাল চত্তর। এক পর্যায়ে লাইনে দাড়িয়ে সেই লাইন হাসপাতাল চত্তর পেরিয়ে মহাসড়কের চলে যায়। শুরু হয় ব্যাপক যানজট।
এদিন সকাল সাড়ে নয়টায় টিকা নিতে এসেছেন উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের কালুহাটি গ্রামের বাবু আলী। তিনি ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ১০ টা ১০ মিনিটের সময় মোবাইলে একটি ম্যাসেজ পান। সেখানে লেখা রয়েছে প্রথম ডোজের টিকা দেবার তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর। কেন্দ্র চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ২৮ তারিখের টিকা ২৯ তারিখ রাতে ম্যাসেজ পেয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখি বিশাল লম্বা লাইন।
দুপুর বারোটা পেরিয়ে গেছে। এখনও টিকা পায়নি। আমি অটো চালক তাই ফিরে যাচ্ছি। ভিড় কমলে আবার আসবো। উপজেলার রায়পুর গ্রারে রাহেলা বেগম, সারদা গৌড়শহর পুর গ্রামের কদভানু খাতুন, মেরামতপুর এগ্রামের আকাশ সরকার মানিক জানান, টিকা নিতে এসেছি সকাল ৯টায় এখন বাজে ১২টা। তখন থেকে দেখছি এখানে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো প্রবণতা নেই। ফলে এখান থেকেই করোনা ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি।
অতিদ্রুত বুথ বা কেন্দ্র বাড়ানো উচিত। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: শহীদুল ইসলাম রবিন হাসপাতালের অব্যবস্থাপনার কথা শিকার করে জানান, এক যোগে প্রায় ১৫ হাজার মানুষকে ম্যাসেজ না দিলেই ভালো হতো। এতো গুলো মানুষ এক যোগে ম্যাসেজ পেয়ে টিকা নিতে এসে এমন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তার পরেও ২টি বুথের মাধ্যমে ৬ জন টিকা প্রদান করছেন। এতে ১২ হাজার টিকা গ্রহিতাকে টিকা দেয়া সম্ভব হবে। বাকী ৩ হাজার টিকা এখনও কম রয়েছে। টিকা আসলে আবারও ওই ৩ হাজার মানুষকে টিকা দেয়া হবে।
আরবিসি/৩০ সেপ্টেম্বর/ রোজি