স্টাফ রিপোর্টার : বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার ভবানীগঞ্জ নিউমার্কেটের তৃতীয় তলায় সোনার বাংলা নামক এক এনজিও বিরুদ্ধে কিস্তির টাকা আদায় নিয়ে এক গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূকে স্থানীয় ইউপি সদস্য ফাতেমা বেগম ও বাজারের লোকজন উদ্ধার করে বাগমারা মেডিকেলে ভর্তি করেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে বাগমারা থানায় একটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশের নিকট অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সকালে বাসুপাড়া ইউনিয়নের নন্দনপুর গ্রামের আক্কাস আলীর স্ত্রী বানু বিবি কিস্তির টাকা দিতে ভবানীগঞ্জ নিউমার্কেটের তৃতীয়তলায় সোনার বাংলা এনজিও কার্যালয়ে যান। এ সময় বানু বিবি তিরিশ হাজার টাকা কিস্তি পরিশোধ করে এ টাকার রশিদ দাবী করেন। তবে টাকা কম হওয়ায় এনজিও কর্তৃপক্ষ বানু বিবির উপর চাপ প্রয়োগ করে। তারা আরো টাকা আদায়ের জন্য বানু বিবিকে একটি ঘরে দিনভর আটকিয়ে ও নির্যাতন করেন।
থানায় অভিযোগকারী বানু বিবির পুত্র রুবেল জানান, গত দুই বছর আগে তার মা ওই এনজিও থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়েছিল। সে সময় আমার বাবা অসুস্থ ও পুঙ্গত্ববরণ করায় আর কিস্তি চালানো সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে তারা কিস্তির জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। আমরা অনেক কষ্ট করে তিরিশ হাজার টাকা জোগাড় করে মায়ের হাতে দিয়ে পাঠিয়েছিলার। কথা ছিল বাকি টাকার জন্য তারা ভেঙ্গে ভেঙ্গে কিস্তি পরিশোধের সুযোগ করে দিবে। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর তারা কথা রাখেনি। তারা ত্রিশ হাজার টাকার নিয়ে কোন রশিদ দেয়নি। উল্টো আমার মায়ের কাছে সাদা কাগজে জোর করে স্বাক্ষর নিয়েছে।
এ সময় আমার মা প্রতিবাদ করলে এনজিও’র পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ও মাঠকর্মী আশরাফুর আমার মাকে একটি ঘরে আটকিয়ে রেখে শারিরীক ভাবে নির্যাতন চালায়। তারা তাকে কিল ঘুষি মারে এবং সিড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এতে আমার পড়ে গিয়ে তার হাঁটু থেতলে যায়। আমি এ নির্যাতনের বিচার চাই।
নির্যাতনের খবর পেয়ে বানু বিবিকে উদ্ধার করে বাগমারা মেডিকেলে নিয়ে যান বাসুপাড়ার ইউপি সদস্য ফাতেমা বেগম। তিনি জানান, ঘটনাটি খুবই অমানবিক। ঘটনা জানতে পেরে দ্রুত নিউমার্কেটে যাই। সেখানে নিচতলায় বানু বিবির কান্নাকাটি দেখে তাকে নিয়ে বাগমারা মেডিকেলে ভর্তি করে দেই।
তবে এসব নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বানু বিবি ৫০ হাজার টাকা লোন নেন। সবশেষ তার কাছে ১৯ হাজার টাকা পাওয়া রয়েছে।
এ টাকা পরিশোধের জন্য তাকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে কোন নির্যাতন বা চাপ প্রয়োগ করা হয়নি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাগমারা থানার এসআই ইমরান জানান, ওই সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
আরবিসি/২৩ সেপ্টেম্ব্র/ রোজি