• মঙ্গলবার, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ০১:২৪ পূর্বাহ্ন

উত্তরে হুমকিতে আলুর ব্যবসা

Reporter Name / ১১৯ Time View
Update : বুধবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১

জয়পুরহাট প্রতিনিধি : জয়পুরহাটের কালাইয়ে আলুর দরপতনে বিপাকে পড়েছেন প্রান্তিক কৃষক, ব্যবসায়ী ও হিমাগারের মালিকরা। এ অবস্থায় দ্রুত সময়ের মধ্যে, দেশের বাইরে আলু রপ্তানির উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যথায়, আলু চাষাবাদে কৃষকরা হারাবেন উৎসাহ; ব্যবসা পড়বে হুমকির মুখে।

সরেজমিন উপজেলার হিমাগারগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের এ সময়ে ভাল দাম থাকায়, প্রতিটি হিমাগারেই সংরক্ষণকৃত আলু বিক্রি করতে, রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছিল, শ্রমিক ও কর্মচারিদের। অথচ এবার একই সময়ে আলু সংরক্ষণকারিদের উপস্থিতি একেবারেই নেই বললেই চলে।

এলাকার বিভিন্ন হিমাগারগুলোতে এখন পর্যন্ত সংরক্ষিত আলুর তিন ভাগের এক ভাগ পরিমাণও বিক্রি হয়নি। কাথাইল গোপিনাথপুর পল্লী হিমাগারে সংরক্ষণকৃত ১ লাখ ১৮ হাজার বস্তা আলুর মধ্যে বিক্রি হয়েছে, ৩০ হাজার বস্তা।

এছাড়াও উপজেলার- মোলামগাড়ীহাট নর্থপোল, বৈরাগীরহাট সাউথপোল, বালাইট সালামিন ফুড্স, সড়াইল নরওয়েস্ট, আর বি স্পেশালাইস্ট, সড়াইল এম ইসরাতসহ ১১টি হিমাগারের চিত্র একই। গত মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং আলুর উৎপাদন ও দাম ভাল পাওয়ায় এবার মৌসুমের শুরুতেই আলু বিক্রি না করে, ফের অধিক মুনাফা লাভের আশায়, কৃষক ও ব্যবসায়ীরা হিমাগারে বেশি বেশি আলু মজুদ করেন।

ফলে, হিমাগারের খরচসহ প্রকার ভেদে ৬০ কেজি ওজনের প্রতি বস্তা আলুর খরচ পড়েছে ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা পর্যন্ত। বর্তমান বাজারে প্রতি বস্তা আলু গড়ে বিক্রি হচ্ছে- ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকায়। ফলে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের বস্তা প্রতি গড়ে লোকসান গুণতে হচ্ছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা।

কৃষকরা ক্ষোভের সাথে জানান, গত বছর আলুর দাম বেশি থাকায়- সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন। কিন্তু এবার লোকসান ঠেকাতে সরকারের কোন নজরদারি নেই। তারা আরও জানান, সরকার যদি এ সময় দ্রুত গতিতে দেশের বাহিরে আলু রপ্তানির উদ্যোগ না নেন অথবা টিসিবি কিংবা টি.আর, কাবিখার মতন সরকারী প্রকল্প অথবা সরকারি রেশন হিসেবে হিমাগার থেকে আলু ক্রয় না করেন; তাহলে এ পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। অনেকে মূলধন হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পরবেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, বেশি লাভের আশায় সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে আলু কিনে নিয়ে বিভিন্ন হিমাগারে সংরক্ষণ করেছিলেন তারা। ইতিমধ্যে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে চাপে থাকার কারণে দাম কম হওয়ায় সত্বেও ইতোমধ্যে কিছু আলু বিক্রি করেছেন তারা। আর বাঁকিগুলোও লোকসানে বিক্রি করলে, তাদের পথে বসতে হবে। এ অবস্থায় সরকারের কাছে তাদের দাবি, সরকারিভাবে হিমাগার থেকে আলু কিনে বিদেশে রপ্তানির উদ্যোগ নিলে নিঃস্ব হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবেন তারা।

হিমাগার সংশ্লিষ্টরা জানান, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে, সরকারিভাবে আলু কিনে, তা বিদেশে রপ্তানির উদ্যোগ গ্রহণের দাবিতে- গত ৫ সেপ্টম্বর কোল্ড স্টোর অনার্স এ্যসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বগুড়া জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। কারণ, এখন বাজারে যে দামে আলু বিক্রি হচ্ছে, তাতে অনেক কৃষক এবং ব্যবসায়ীরা হিমাগারের ভাড়া আর ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারবেন না।

ঋণের টাকার সুদ মওকুফের ঘোষণা দিয়েও সাড়া মিলছে না ব্যবসায়ীদের। আগামী ১৫ নভেম্বর মধ্যেই আলু সংরক্ষণের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। অথচ হিমাগারে সংরক্ষিত আলু উত্তোলনের আগ্রহ নেই কৃষক ও ব্যবসায়ীদের। এতে হিমাগার মালিকরাও আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়বে, তাতে সন্দেহ নাই।

আরবিসি/২২ সেপ্টেম্বর/ রোজি

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category