স্টাফ রিপোর্টার : ভাতের পরিমান কমিয়ে প্রোটিনের পরিমান বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন পুষ্টি ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সোমবার রাজশাহীতে ‘প্রোটিন ফর অল’ শীর্ষক সেমিনারে তাঁরা বলেন, ভাতের প্রতি নির্ভরশীলতা স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি গঠনের পথে অন্তরায়। বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি), ইউএস সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিল এবং রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এ সেমিনারের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাজশাহীর সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, শিশু ও প্রবীণদের জন্য প্রোটিন খুবই দরকারি। তিনি বলেন, সর্বসাধারনের জন্য, বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠী যেন স্বল্পমূল্যে ডিম, দুধ, মাছ, মাংস কিনতে পারে সে বিষয়ে কাজ করছে সরকার। লিটন বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার “ভিশন ২০৪১” বাঙালী জাতিকে প্রথমবারের মত উন্নত দেশের স্বপ্ন দেখিয়েছে। আর এ ভিশন্রে মূলেই আছে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ এবং স্বাস্থ্যবান ও মেধাবি জাতি গড়ার স্বপ্ন।
রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, রাজশাহীতে বিগত বছরগুলোর তুলনায় ডিম, দুধ, মাছ, মাংস খাওয়ার পরিমান বেড়েছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে। তাই আগামীতে পুষ্টিসূচকে আরও উন্নতি লাভ করবে বাংলাদেশ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. খালেদা ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে প্রোটিন খাদ্যের ভালো উৎস থাকা সত্ত্বেও মানসম্পন্ন প্রোটিন গ্রহণে ঘাটতি রয়েছে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে খাদ্যে আমিষের ঘাটতি থাকলে কোয়াশিয়রকর রোগ হয়। দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা, মেধা ও বুদ্ধি কমে যায়। তাই আমিষ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। করোনার বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে প্রোটিন জাতীয় খাদ্য গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন এই পুষ্টিবিদ।
সাজেদা ফাউন্ডেশনের পুষ্টিবিদ, ইশরাত জাহান বলেন, শতকরা ৬০ ভাগেরও অধিক আমিষ আমরা গ্রহণ করে থাকি বিভিন্ন প্রকার শর্করাজাতীয় খাবার থেকে। ঐ ধরনের আমিষে অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো এসিডের ঘাটতি থাকায় সুষম আমিষ গ্রহণ থেকেও অনেকে বঞ্চিত হন।
বিপিআইসিসি’র সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, উন্নত বিশ্বের মানুষ বছরে মাথাপিছু যেখানে ৪০-৪৫ কেজি মুরগির মাংস খায়, সেখানে আমরা খাই মাত্র ৭ কেজির মত। এ পরিমান অন্তত: দ্বিগুণ করার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে।
বিশিষ্ট রন্ধন শিল্পী রাহিমা সুলতানা রীতা বলেন, প্রোটিন খাদ্যের সবচেয়ে ভাল ও নিরাপদ উৎস্য হচ্ছে ডিম ও মুরগির মাংস।
‘প্রোটিন ফর অল’ সেমিনারে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, মসজিদের ইমাম, পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন ও হোটেল-রেস্তোঁরা মালিক সমিতির প্রতিনিধি, গণমাধ্যমের সাংবাদিকসহ মোট প্রায় ১৪০ জন অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠান শেষে পোল্ট্রি কুকিং কনটেস্টের বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
আরবিসি/২০ সেপ্টেম্বর/ রোজি