আরবিসি ডেস্ক : ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের (প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান) বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে গুলশান থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক অনিন্দ তালুকদার। মামলার বাদী আরিফ বাকের, তিনি ইভ্যালির গ্রাহক।
তিনি বলেন, মামলা হয়েছে। মামলার নাম্বার-১৯।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আরিফ বাকের গত ২৯ মে থেকে জুন মাস পর্যন্ত মোটরসাইকেলসহ বেশ কয়েকটি পণ্য অর্ডার করেন। এগুলো ৭ থেকে ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে দেওয়ার কথা থাকলেও তারা দেয়নি। কাস্টমার কেয়ারে ফোন দিয়ে সমাধান পাওয়া যায়নি। অফিসে গিয়ে তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বললে খারাপ ব্যবহার করেছে। সিইও রাসেলের সঙ্গেও দেখা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন তিনি। তার সঙ্গে ইভ্যালি চরম দুর্ব্যবহার করেছে।
মামলার বাদী আরিফ বাকের বলেন, দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে থানা থেকে জানানো হয় আমার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি হয়েছে। তবে মামলার কপি আমি এখনও হাতে পাইনি। আর মামলাটি ঠিক কখন হয়েছে এ বিষয়ে পুলিশ আমাকে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
এদিকে গত মঙ্গলবার ইভ্যালির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বাধীন আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি। এদিন সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, যেহেতু আইন লঙ্ঘন হয়েছে, তাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দায়িত্ব না নিয়ে তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে দেবে। তার আগে কমিটির সুপারিশ বাণিজ্যমন্ত্রী ও বাণিজ্য সচিবকে জানানো হবে।
হাফিজুর রহমান আরও বলেন, ১০টি ই–কমার্স প্রতিষ্ঠানের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে চাওয়া হয়েছিল। একটি পাওয়া গেছে। বাকিগুলোর তথ্যও আসবে। বৈঠকে ধামাকা, ই–অরেঞ্জ ইত্যাদির কর্মকাণ্ড নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে গত সপ্তাহে সম্পদ ও দায়ের হিসাব দাখিল করে ইভ্যালি। সেখানে উল্লেখ করা হয়, তাদের মোট দায় ৫৪৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে এক কোটি টাকা শেয়ারহোল্ডার হিসেবে কোম্পানির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. রাসেল কোম্পানিকে দিয়েছেন। বাকি ৫৪৩ কোটি টাকাই কোম্পানিটির চলতি দায়।
ইভ্যালির হিসাব অনুযায়ী, দায়ের বিপরীতে এর চলতি সম্পদ রয়েছে ৯০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। আর সম্পত্তি, স্থাপনা ও যন্ত্রপাতি মিলিয়ে রয়েছে ১৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। মোট ১০৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকার এ দুটির যোগফলকে দেখানো হচ্ছে স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে।
মোট দায় ৫৪৩ কোটি টাকা থেকে ওই অঙ্ক বাদ দিলে বাকি থাকে ৪৩৮ কোটি টাকা। যাকে ইভ্যালি বলছে তার অস্থাবর সম্পত্তি। বিবরণী মেলাতে ইভ্যালি দেখিয়েছে, অস্থাবর সম্পত্তি ৪৩৮ কোটি টাকার মধ্যে ৪২৩ কোটি টাকা হচ্ছে ইভ্যালির ব্র্যান্ড মূল্য, আর ১৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা হচ্ছে অদৃশ্যমান সম্পত্তি। কোম্পানিটি নিজের ব্র্যান্ড মূল্য নিজেই নির্ধারণ করেছে।
শুধু গ্রাহকদের কাছে ইভ্যালির দেনার পরিমাণ ৩১১ কোটি টাকা। এ দেনা আছে মোট ২ লাখ ৭ হাজার ৭৪১ গ্রাহকের বিপরীতে। এ হিসাব গত ১৫ জুলাই পর্যন্ত।
আরবিসি/১৬ সেপ্টেম্বর/ রোজি