স্টাফ রিপোর্টার : করোনা মহামারীর মত দুর্নীতি মোকাবেলার জন্য রাজশাহীতে গঠিত স্বেচ্চাসেবী সংগঠন জামিল বিগ্রেডের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাজশাহী সদর আসনের এমপি ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। করোনার ভারতীয় ধরনে যখন টালমাটাল রাজশাহী, তখন মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবতার সেবা দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘শহীদ জামিল ব্রিগেড’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সংগঠনটির সেবাদানের ১০০তম দিন উপলক্ষে বুধবার রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার বড় মসজিদের সামনে আয়োজিত ‘ব্রিগেড সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাদশা এসব কথা বলেন। সমাবেশে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি নিয়ন্ত্রিত এই ব্রিগেডের সদস্যরা অংশ নেন।
বাদশা বলেন, শহীদ জামিল ব্রিগেড করোনা ঠেকাতে পারে, এই বিশ্বাস আমাদের আছে। এখন মুক্তিযুদ্ধের সফলতাকে গ্রাস করছে দুর্নীতি। এটি করোনার চেয়েও খারাপ। পুরো জাতিকে শেষ করে দিচ্ছে। রাজশাহীতে করোনা মোকাবিলায় জামিল ব্রিগেড যেমন সফল হয়েছে, তেমনি দুর্নীতির বিরুদ্ধেও ব্রিগেডের সদস্যদের কাজ করতে হবে।
স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় জামায়াত-শিবিরের হাতে নিহত রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী ডা. জামিল আক্তার রতনের নামানুসারে গঠন করা হয় শহীদ জামিল ব্রিগেড। ছাত্রমৈত্রীর ওই নেতাকে স্মরণ করে রাকসুর সাবেক ভিপি ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ৩১ জন শিক্ষকের সামনে প্রকাশ্যে জামাত-শিবির ডা. জামিল আক্তার রতনকে হত্যা করেছিল। সেই জামিলের কবরে প্রথম ফুল দিয়েছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শহীদ জামিলের মতো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সৈনিকরা না থাকলে জামায়াত-বিএনপিকে উৎখাত করে এই সরকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হতো না। তাই মনে রাখতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীদের সঙ্গে কোন আপস করা যাবে না। চক্রান্তকারীদের সঙ্গে কোন আপস নেই।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর ওয়ার্কার্স পটির সভাপতি লিয়াকত আলী লিকু। জামিল ব্রিগেডের প্রধান সমন্বয়ক দেবাশিষ প্রমানিক দেবুর পরিচালনায় বক্তব্য দেন- শহীদ রাসেল বিগ্রেড, ঢাকার প্রধান সমন্বয়ক সাদাকাত হোসেন বাবুল, নাট্যকার অধ্যাপক মলয় ভৌমিক, কবিকুঞ্জের সাধারণ সম্পাদক ও জামিল ফাউন্ডেশনের সভাপতি আরিফুল হক কুমার।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নারী মুক্তি সংসদের জেলার সভাপতি অধ্যাপিকা তসলিমা খাতুন, সাংষ্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামার উল্লাহ সরকার কামাল, সাবেক ছাত্রনেতা সালাউদ্দীন জেমস, শহীদ জামিল ব্রিগেডের জেলা মনিটরিং কমিটির সমন্বয়ক আশরাফুল হক তোতা, মনিটরিং সেলের সদস্য আবু সাঈদ, আবদুল মতিন, নাজমুল করিম অপু, মনিরুদ্দীন পান্না, কামরুল হাসান সুমন, নগরীর মতিহার থানার সমন্বয়ক আলমগীর হোসেন প্রমুখ।
সমাবেশে জানানো হয়, করোনা সচেতনতায় জামিল ব্রিগেডের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত দুই লাখ মাস্ক ও আড়াই লাখ লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। করোনা রোগীদের ২৪ ঘণ্টা সেবা দিচ্ছে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স। ৫০টি সিলিন্ডারের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা। এ পর্যন্ত ৭ হাজার ৭০০ মানুষকে বিনামূল্যে করোনার টিকার জন্য অনলাইনে নাম নিবন্ধন করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চারজন চিকিৎসকের মাধ্যমে টেলিমেডিসিন সেবা দেওয়া হচ্ছে। ব্রিগেডের সদস্যরা দাফন এবং সৎকারেও সহায়তা করে আসছেন। এসব কার্যক্রম চলবে।
আরবিসি/১৫ সেপ্টেম্বর/ রোজি