• রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৮ পূর্বাহ্ন

প্রাণোচ্ছ্বল শিক্ষার্থী, মুখরিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

Reporter Name / ১২৫ Time View
Update : রবিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : দীর্ঘ দেড় বছর পর স্কুলমুখী হয়েছে শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ বিরতি কাটিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসা অনেক শিক্ষার্থী স্কুলড্রেস ছাড়াই এসেছে। তবে স্বাস্থ্যবিধির দিকে নজর দিচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। রবিবার সকালে রাজশাহী নগরীর বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

নগরীর শিরোইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি পিএন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মসজিদ মিশন অ্যাকাডেমি (বালিকা), বিবি হিন্দু অ্যাকাডেমি, বরেন্দ্র মহাবিদ্যালয়, শাহমখদুম কলেজ ঘুরে দেখা যায়, সকালে নির্ধারিত সময়ের আগে থেকেই শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে আসতে শুরু করেন।

এ সময় শতভাগ শিক্ষার্থীর মুখেই মাস্ক দেখা গেছে। শিক্ষকরাও রয়েছেন মাস্ক ও এপ্রোন পরিহিত অবস্থায়।

সরকারি পিএন বালিকা বিদ্যালয়ের ফটকে দেখা যায়, তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্র ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা মেপে প্রবেশ করানো হচ্ছে। কোনো শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুলের প্রধানশিক্ষক তৌহিদ আরা বলেন, সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ প্রতিপালনের জন্য আমরা বদ্ধপরিকর। পুরো স্কুল পরিষ্কার করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য শতভাগ উপযোগী পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। শ্রেণিকক্ষ প্রস্তুত আছে। সেখানে সামাজিক দূরত্ব মেনে যেন শিক্ষার্থীরা বসতে পারে এবং বসে আমরা সেটি নিশ্চিত করছি।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধির প্রতি খেয়াল রাখতে স্কুলগেটের ভেতরে কোনো অভিভাবককে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। পাশাপাশি গেটের সামনেও কোনো হকারকে দাড়াতে দেওয়া হচ্ছে না।

রাজশাহী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (মাধ্যমিক) নাসির উদ্দিন বলেন, জেলায় উচ্চবিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫৪৪টি। মহানগরীসহ জেলার বেশকিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছি। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পাঠদানের উপযোগী। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরপরেও এ ব্যাপারে আমাদের নজরদারি থাকবে।

রাজশাহী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুস সালাম জানান, বিদ্যালয়ের পরিবেশ ঠিক আছে। শিক্ষার্থীর উপস্থিতিও ভালো। অনেক শিক্ষার্থীর সাথে অভিভাবকও এসেছেন। তারা দেখছে- তাদের ছেলে-মেয়েরা কেমন পরিবেশে ক্লাসে বসছে। অভিভাবকরা সন্তোষ প্রকাশ করেছে।

যে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এত দিন ধরে বন্ধ ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সেই অদৃশ্য ভাইরাস যে দূর হয়ে গেছে তা নয়। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।

গত ছয় মাসের অনুসন্ধান বলছে, গত দেড় বছরে প্রাথমিকের অনেক দরিদ্র শিক্ষার্থী দিনমজুর ও হকার বনে গেছে। মাধ্যমিকের অনেক মেয়ে শিক্ষার্থীর এরই মধ্যে বিয়ে হয়ে গেছে। সংসারের পাশাপাশি তারা আবারও শ্রেণিকক্ষে বসবে এমন ভাবনা নেই অধিকাংশের মধ্যে। ফলে আজ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও পুরনো শিক্ষার্থীর অনেকেরই দেখা নেই।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে প্রতি বেঞ্চে একজন শিক্ষার্থীর বেশি বসা যাবে না বলে নির্দেশনা দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা জিগজ্যাগ তথা জেড বিন্যাসে বসবে। শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে একই শ্রেণিকে একাধিক গ্রুপে ভাগ করে একাধিক কক্ষে ও একাধিক শিক্ষকের সহায়তায় পাঠদান চালাতে হবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত প্রাক-প্রাথমিকের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এ রকম মোট ১৬টি নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

এর আগে সার্ভ-কোভ-২ বা কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। বেশ কয়েক বার উদ্যোগ নিলেও কোভিড-১৯ এর উচ্চ সংক্রমণের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে সংক্রমণ কম থাকায় ১৬টি নির্দেশনা দিয়ে খুলে দেওয়া হলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

আরবিসি/১২ সেপ্টেম্বর/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category