স্টাফ রিপোর্টার : দীর্ঘ দেড় বছর পরে খুলেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীরা আনন্দ উচ্ছাসের সঙ্গে বিদ্যালয়গুলোতে প্রবেশ করলেও শেষ পর্যন্ত তা ভোগান্তিতে রুপ নিয়েছে। তেমনই একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণী কক্ষ সংকটে খোলা আকাশের নিচে গাছতলায় ক্লাস করেছে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার পিরোজপুর-১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মাটিতে বসে অনেকটা কষ্টের মধ্যে ক্লাস করতে হয়েছে কমলমতি শিক্ষার্থীদের। রোববার কাঁকরামারী বাজার সংলগ্ন পিরোজপুর (১) সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, তৃতীয় শ্রেণীর ক্লাস চলছে গাছের নিচে ইটের খোয়া স্তুপ করে রাখা উঁচু জায়গায়। আর পঞ্চম শ্রেণীর ক্লাস চলছে পাশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটা ক্লাসরুমে। এ অবস্থা রোদ ও গরমে চরম ভোগান্তিতে থাকতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
পিরোজপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ে অফিস, স্টোররুম ও শ্রেণিকক্ষ মিলে মোট ৯টি রুম ছিল। তার মধ্যে মাত্র দুটি ছিল ছাদ দেয়া রুম। নতুন ভবনের কাজ চলায় টিনশেডের রুম গুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে ছাদ দেয়া দুই রুমের একটি অফিস রুম হিসাবে ব্যবহার হয়। অন্যটিতে করা হয়েছে ঠিকাদারের স্টোররুম। এতে রাখা হয়েছে রড, সিমেন্টসহ অন্যান্য নির্মাণসামগ্রী। এছাড়া বিদ্যালয়ের মাঠ জুড়ে পড়ে রয়েছে ইট, বালু ও মাটির স্তূপ।
বিদ্যালয়ের মোট ২৯২ শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে গতকাল স্কুল খোলার প্রথম দিনে পঞ্চম শ্রেণির ৬২ জনের মধ্যে উপস্থিত ছিল ৫০। তৃতীয় শ্রেণির ৭৬ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫৩ জন উপস্থিত ছিল। তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম বলেন, অনেকদিন পর স্কুল খুলেছে। ৮ টার সময় থেকে এসে বসে আছি। কিন্তু রুমে বসে ক্লাস করতে পারিনি। রোদের মধ্যে গাছতলায় ইটে বসে ক্লাস করেছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুরাদ আলী বলেন, করোনার শুরুতে দোতলা ভবন নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। কথা ছিল ছয় মাসের মধ্যেই কাজ শেষ হবে। কিন্তু দেড় বছরের বেশি সময়েও কাজ শেষ হয়নি। আবার স্কুলের দুইটা রুমের একটা রুম দখল করে রাখা হয়েছে নির্মান সামগ্রী। ফলে বাধ্য হয়েই তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের গাছ তলায় ক্লাস করাতে হয়েছে। পাশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে রুম চেয়ে নিয়ে পঞ্চম শ্রেণীর ক্লাস নিয়েছি।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ভবন নির্মাণের সামগ্রী বিদ্যালয় রাখার কোনো নিয়ম নেই। আমরা প্রতিটা ঠিকাদারকে বিষয়টা জানিয়েছি। তবুও কিছু প্রতিষ্ঠানে নির্মাণ সামগ্রী রাখা আছে। নির্মাণকাজের ধীরগতি ও ভবন নির্মাণের সমস্যা নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টা জানানো হয়েছে।
আরবিসি/১২ সেপ্টেম্বর/ রোজি