স্টাফ রিপোর্টার : কীট সংকটে রাজশাহীতে দুই দিন ধরে বন্ধ আছে করোনার রাপিড এন্টিজেন টেস্ট। সবশেষ রবিবার রাজশাহীতে ৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এই পদ্ধতিতে। তারপর সোমবার থেকে আর কোথাও টেস্ট করা হয়নি। রাজশাহী নগরীর ১৩টি পয়েন্টে অস্থায়ী বুথে এই টেস্ট করা হচ্ছিল।
এদিকে রাজশাহীতে র্যাপিড টেস্টের সরকারি উদ্যোগ বন্ধ হয়ে গেলেও বেসরকারি কোন রোগ নির্ণয় কেন্দ্র টেস্ট করার জন্য সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের অনুমতি পায়নি। ফলে আগ্রহ থাকলেও বেসরকারি রোগ নির্ণয় কেন্দ্রগুলো র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট করাতে পারছে না।
ক্লিনিক-ডায়গনসিস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজশাহী জেলার সভাপতি ডা. আবদুল মান্নান বলেন, ‘রাজশাহীর প্রথম সারির অন্তত ১৫টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার করোনার র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট করাতে আগ্রহী। কিন্তু সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে অনুমতি পাওয়া যায়নি।’
তিনি জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট শুরু হয়েছে। শুধু রাজশাহীতেই হয়নি। দেশে পপুলার ডায়গনস্টিক সেন্টারের শাখা ২৬টি। এর মধ্যে ২৫টি শাখাতেই র্যাপিড টেস্ট হচ্ছে। শুধু রাজশাহীর শাখাতেই হচ্ছে না।
রাজশাহীতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে টেস্ট না হওয়ার কারণও জানালেন ডা. আবদুল মান্নান। তিনি বলেন, রাজশাহীর সব বেসরকারি ডায়গনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। লাইসেন্স নবায়নের জন্য মালিকেরা আবেদনও করে রেখেছেন। সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের একটি বিশেষজ্ঞ টিম এখন সরেজমিনে পরিদর্শন করবেন। তারপর লাইসেন্স নবায়ন করা হবে। কিন্তু দু’বছর ধরে এই পরিদর্শন হয়নি। বর্তমান সিভিল সার্জন, আগের সিভিল সার্জন- কেউই সময় পাননি।
রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, ‘আমরা টিম গঠনের চেষ্টা করছি। তারপর ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো পরিদর্শন করা হবে। লাইসেন্স নবায়ন হলে করোনার টেস্ট করারও অনুমতি দেওয়া হবে। এখন আমাদের কীট সংকট বলে র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট করাতে পারছি না বলে জানান তিনি।’
গত জুনে রাজশাহীতে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে করোনার সংক্রমণের হার উঠে যায় ৫০ শতাংশের উপরে। তখন অধিক সংখ্যক আক্রান্ত মানুষকে দ্রুত সময়ে শনাক্ত করতে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ৬ জুন থেকে নগরীতে র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট শুরু হয়। প্রথমে পাঁচটি বুথ থাকলেও পরে বাড়িয়ে ১৩টি করা হয়। এতে রোববার পর্যন্ত ৫৬ হাজার ৭৩১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শনাক্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৫৪৯ জন।
প্রথম দিকে যিনিই যেতেন, তাঁরই নমুনা পরীক্ষা করে ১০ মিনিটের মধ্যে ফল জানানো হতো। সম্প্রতি কীটের সংকট দেখা দিলে শুধু উপসর্গ থাকলে এবং বয়োজ্যষ্ঠ মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা হতো। কমবয়সী এবং উপসর্গ না থাকলে অনেককেই ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ গত রবিবার র্যাপিড এন্টিজেন পদ্ধতিতে ৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে পাঁচজন শনাক্ত হয়েছেন। সোমবার থেকে এই টেস্ট পুরোপুরি বন্ধই করে দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এফএএম আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, ‘সিভিল সার্জন অফিস থেকে আমরা ৭০০-৮০০ করে কীট পেতাম। সেটা দিয়ে কয়েকদিন করে পরীক্ষা করতাম। সবশেষ ৭৫০ কীট পেয়েছিলাম। সেটাও শেষ হয়ে গেছে। তাই টেস্ট বন্ধ করে দিতে হয়েছে। কীট আসলে আবার কার্যক্রম শুরু হবে।’
আরবিসি/৩১ আগস্ট/ রোজি