• রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৭ পূর্বাহ্ন

কাবুলে তালেবানের শত্রু আইএসের ভয়াবহ হামলার শঙ্কা

Reporter Name / ৮৭ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট, ২০২১

আরবিসি ডেস্ক : পশ্চিমা সৈন্য-নাগরিক ও আফগান সহযোগীদের সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপক তোড়জোড়ের মাঝে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের বিমানবন্দরে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হামলার তীব্র আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা। আইএসের হামলার আশঙ্কায় বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দর থেকে লোকজনকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সৈন্য, আফগান নাগরিক এবং সহযোগিদের সরিয়ে নিতে ব্যাপক বেগ পোহাতে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্রদের। নির্ধারিত সময়ের পর আর সময়সীমা বাড়ানো হবে না বলে আফগানিস্তানের নতুন শাসকগোষ্ঠী তালেবান সতর্ক করে দেওয়ার পর হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে পশ্চিমারা। আগামী সপ্তাহে কাবুল বিমানবন্দর আনুষ্ঠানিকভাবে ছাড়ার কথা রয়েছে তাদের।

বুধবার সন্ধ্যার দিকে জারিকৃত এক সতর্কবার্তায় কাবুলে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস মার্কিন নাগরিকদের কাবুল বিমানবন্দর এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়। অজ্ঞাত ‘নিরাপত্তা হুমকি’ উল্লেখ করে যারা ইতোমধ্যে বিমানবন্দরের প্রবেশদ্বারে আছেন, তাদের অবিলম্বে সেখান থেকে নিরাপদ এলাকায় চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

একই ধরনের সতর্কবার্তায় ব্রিটেন কাবুল বিমানবন্দর এলাকা থেকে লোকজনকে অন্যত্র চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ব্রিটেনে সশস্ত্র বাহিনীবিষয়ক মন্ত্রী জেমস হিপ্পি বলেছেন, আইএস জঙ্গিদের সম্ভাব্য আত্মঘাতী বোমা হামলার প্রবল হুমকি আছে।

বিবিসি রেডিওকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমরা পরিস্থিতিকে অস্বীকার করতে পারি না। কাবুলে হামলার এই হুমকি বিশ্বাসযোগ্য এবং এটি আসন্ন। একই সঙ্গে তা ভয়াবহ প্রাণঘাতী হতে পারে। আমরা যদি আসলেই উদ্বিগ্ন না হই তাহলে ইসলামিক স্টেটটে একটি লক্ষ্য নির্ধারণে সুযোগ দেওয়া হবে। যার ভয়াবহতা অকল্পনীয় হতে পারে।

অস্ট্রেলিয়াও নিজ নাগরিক ও ভিসাধারীদের ওই এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সেখানে একটি বড় ধরনের হামলার হুমকির বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছে অস্ট্রেলীয় দূতাবাস। কাবুলে পশ্চিমা এক কূটনীতিক বলেছেন, সতর্কতা সত্ত্বেও বিমানবন্দরের গেটের বাইরের এলাকায় অবিশ্বাস্য রকমের ভিড় অব্যাহত আছে।

তালেবানের যোদ্ধারা কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন। জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের স্থানীয় অনুসারী ইসলামিক স্টেট খোরাসান (আইএসআইএস-কে)। আইএসআইএস-কে ওই অঞ্চলের পুরোনো নামে পরিচিত এবং আফগান তালেবানের দীর্ঘদিনের শত্রু। যে কারণে ওই এলাকায় তালেবানের এই বিরোধীগোষ্ঠীর হামলার শঙ্কা তীব্র হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তালেবানের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমাদের রক্ষীরাও কাবুল বিমানবন্দরে তাদের জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছে, তারাও ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর হুমকির মুখোমুখি হয়েছেন।’

তালেবান গত ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুলের দখল নেওয়ার পর আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে দেশটির রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দেশ ছাড়তে মরিয়া হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেন। আগামী ৩১ আগস্টের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা সৈন্য-নাগরিক এবং আফগান সহযোগীদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করে পশ্চিমা সামরিক বাহিনী।

তালেবান ইতোমধ্যে হুমকি দিয়ে বলেছে, নির্ধারিত সময়ের পর পশ্চিমারা আফগানিস্তানে অবস্থান করলে সেজন্য পরিণতি ভোগ করতে হবে। তালেবানের এই হুমকির পর লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ ব্যাপক দ্রুতগতিতে সম্পন্ন হচ্ছে। যদিও পশ্চিমা কয়েকটি দেশ বলেছে, এই সময়ের মধ্যে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শেষ করা সম্ভব নয়।

আরবিসি/২৬ আগস্ট/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category