মান্দা প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পানি নিষ্কাশনের কাজে ব্যবহৃত সরকারি দুইটি কালভার্ট। এতে উপজেলার মৈনম ইউনিয়নের রামপুর মৌজার দুইটি ফসলের মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে পাঁচশ বিঘা জমির আমন আবাদ।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষা মৌসুমে মৈনম ইউনিয়নের বর্দ্দপুর, মৈনম, ইটাখইর রামপুর, ফকিরপাড়া, মোল্লাপাড়া, সরকারপাড়া, মৈনম বাজারসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের বৃষ্টির পানি রামপুর ফসলের মাঠ হয়ে নওগাঁর বলিহার ইউনিয়ের দুইটি কালভার্ট দিয়ে নিষ্কাশন হয়। হঠাৎ করেই কালভার্ট দুইটি বন্ধ করে দেন বলিহার গ্রামের লোকজন। এতে করে রামপুর ফসলের মাঠজুড়ে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নওগাঁর বলিহার ইউনিয়নের পয়না গ্রামের খাদেমের বাড়ির পাশে সরকারি ক্যানেলের মুখ বন্ধ করে বাড়ি নির্মাণ করেন একই গ্রামের দেলোয়ার হোসেন। অন্যদিকে বলিহার ইউনিয়ন পরিষদের পশ্চিমপাশে পানি নিষ্কাশনের আরেকটি কালভার্টের মুখ ভরাট করে দিয়েছেন আক্কাস আলী মাষ্টারের ছেলে বাবু। এতে করে মান্দার মৈনম ইউনিয়নের অন্তত ১০ গ্রামের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
মৈনম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আফাজ উদ্দিন মন্ডল জানান, বিষয়টি নিরসনের জন্য দুই সপ্তাহ আগে মৈনম উচ্চ বিদ্যালয়ে এলাকাবাসিদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছিল। বৈঠকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ, মৈনম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইয়াছিন আলী রাজাসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
তিনি আরো বলেন, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল বলিহার ইউনিয়ন পরিষদের পশ্চিশপাশে রিং পাইপ স্থাপন করে এ মৌসুমের পানি নিষ্কাশন করা হবে। পরবর্তীতে সেটি আর বাস্তবায়ন হয়নি।
মৈনম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, পানি নিষ্কাশনের পথ দুইটি বন্ধ করে দেওয়ায় মাঠজুড়ে জলাবন্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জেনেশুনে এ সমস্যার সৃষ্টি করেছেন নওগাঁর বলিহার ইউনিয়নের লোকজন। যুগযুগ ধরে উল্লেখিত স্থান দিয়েই এ এলাকার পানি নেমে যেত।
মৈনম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইয়াছিন আলী রাজা বলেন, রামপুর ফসলের মাঠটি মান্দা ও নওগাঁ সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী একটি মাঠ। সমস্যাটি দুই উপজেলা কেন্দ্রিক হওয়ায় জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। ফসল বাঁচাতে দ্রুত এ সমস্যার নিরসন হওয়া দরকার।
নওগাঁ সদর উপজেলার বলিহার ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি অমানবিক। এটি নিরসনের জন্য একাধিকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও কিছু লোকজনের কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে সকলের ঐক্যবদ্ধ চেষ্টায় এটার সমাধান করা সম্ভব।
মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়লা শারমিন বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এ ধরণের ঘটনা ঘটে থাকলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
আরবিসি/২৫ আগস্ট/ রোজি