জয়পুরহাট প্রতিনিধি : জয়পুরহাটের কালাইয়ে এক বর্গা চাষীর ৫৫শতক জমির ধানের গাছ গত সোমবার রাতের আঁধারে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আগাছা নাশক বিষাক্ত কীটনাশক স্প্রে করে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের রাঘবপুর গ্রামের ভুতগারি মাঠের জমিতে। ক্ষতিগ্রস্থ অসহায় বর্গাচাষী মো.ভুন্ডুল মন্ডল এর প্রতিকার চেয়ে কালাই থানা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
অভিযোগ সূত্রে সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের রাঘবপুর গ্রামের ভুতগারি মাঠে আমন ধানের গাছ চারদিকে সবুজ আর সবুজ। মাঝখানে বর্গা চাষী মো.ভুন্ডুল মন্ডলের পুড়ে যাওয়া বিবর্ণ ধান ক্ষেত। তিনি ৫৫শতক জমি বর্গা নিয়ে মামুন জাতের ধান রোপন করেছেন। ক্ষেতের ধান গাছ বাড়তে শুরু করেছে। আর কিছু দিন পরই ধান গাছে শীষ বেড় হবে। এ পর্যন্ত তার এই ক্ষেতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১০ হাজার টাকা।
যার বেশির ভাগ তার ধারদেনা করে জোগাড় করেছেন। গত মঙ্গলবার বিকেলে তিনি ক্ষেতে পরিচর্যা করতে গিয়ে দেখেন ধান গাছগুলো পুড়ে বিবর্ণ হয়ে গেছে। এই অবস্থা দেখে তিনি চিৎকার করে উঠেন। তার ক্ষেতে এই অবস্থা যিনিই দেখেছেন, তিনিই হতবাক হয়ে পড়ছেন। সেসময় ক্ষতিগ্রস্থ বর্গা চাষীর ক্ষেতে এমন দৃশ্য দেখে তার সঙ্গে অনেকেই তাদের চোখের জল ধরে রাখতে পাড়েননি। তার এই ক্ষতি কোনভাবেই এলাকার কৃষকেরা মেনে নিতে পাড়ছেন না।
ক্ষতিগ্রস্থ অসহায় বর্গাচাষী মো.ভুন্ডুল মন্ডল বলেন, ৫৫শতক জমি বর্গা নিয়ে মামুন জাতের ধান রোপন করেছি। কিছু দিন পরই ধান গাছের শীষ বেড় হবে। এ পর্যন্ত আমার এই ক্ষেতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১০ হাজার টাকা। আমার স্বপ্ন ছিল ওই জমির ধান বিক্রি করে ধার-দেনা শোধ করার পর আলু রোপোন করব। কিন্তু পূর্বের শত্রুতায় কারনে কে বা কারা গত সোমবার রাতের আঁধারে আগাছা নাশক কীটনাশক স্প্রে করে আমার ক্ষেতের সব ধানের গাছগুলো পুড়িয়ে দিয়েছে। তবে এর প্রতিকার চেয়ে কালাই থানা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। স্থানীয় কৃষক মো. গফুর ও আমিনুল সহ অনেকেই জানান, ভুন্ডুল মন্ডলের মতো নিরীহ মানুষের এ ধরনের ক্ষতি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না।
ফসলের সঙ্গে এভাবে কেউ শত্রুতা করতে পারে না। এ দৃশ্য দেখে আমাদের বিশ্বাস হচ্ছেনা। এই মাঠে আমার মতো অনেক কৃষকের ধানের ক্ষেত আছে। ভুন্ডুল মন্ডলের ক্ষেতে রাতের আঁধারে আগাছা নাশক কীটনাশক স্প্রে করে ধানের গাছগুলো পুড়িয়ে দিওয়াতে আমরা এখন অনেক চিন্তায় আছি। কি জানি তার মতো অন্য কারও এমন ক্ষতি আর না হয়। তাই এর সঠিক বিচার হওয়া প্রয়োজন।
উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.আলী আকবর বলেন, এই বিষয়ে আমাকে কেউ জানায়নি, তাছাড়া আমি জানিনা।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোছা, নীলিমা জাহান বলেন, ভুন্ডুল মন্ডলের নষ্ট হওয়ার ক্ষেতের ধান গাছে উপরে প্রথমিক ভাবে পরিস্কার পানি দিয়ে স্প্রে করে দিতে বলা হয়েছে। তবে সরকারের কোন প্রণোদনা মাধ্যমে তাকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হবে, যাতে তিনি কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারেন। কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম মালিক বলেন, ঐ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ ওই ঘটনায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলেই তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরবিসি/২৫ আগস্ট/ রোজি