• মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৪ পূর্বাহ্ন

 ভাসছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২৩০০ হেক্টর ফসলি জমি

Reporter Name / ১০১ Time View
Update : রবিবার, ২২ আগস্ট, ২০২১

আরবিসি ডেস্ক : চাঁপাইনবাবগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে রয়েছে। একদিন অপরিবর্তিত থাকার পর শনিবার সকাল থেকে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে বন্যাকবলিত এলাকায় ফুটে উঠছে ক্ষয়-ক্ষতির চিত্র। এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রন্তিক কৃষকরা। মাঠের ফসল, ঘরবাড়ি-রাস্তাঘাট ব্যাপকভাবে ক্ষয়-ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুর ও শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়ন পদ্মা নদী-তীরবর্তী চরাঞ্চল। এ কারণে ক্ষতিও বেশি। তবে দুই উপজেলার অন্য ইউনিয়নের কৃষকরাও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, বন্যার পানিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ দুই উপজেলায় এবার বন্যায় আনুমানিক ২ হাজার ৩০০ হেক্টর ফসলের ক্ষতি হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ১ হাজার ৮৮ হেক্টর এবং শিবগঞ্জ উপজেলার ১ হাজার ২০০ হেক্টর ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে আউশ ধান, শাকসবজি ও মসলাজাতীয় ফসল রয়েছে। পুরোপুরি ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ এখনও নিরুপণ করা যায়নি। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার শাজাহানপুর, আলাতুলি, চড়বাগডাঙ্গা, চরঅনুপনগর, দেবিনগর ও ইসলামপুর এবং শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর ও উজিরপুর ইউনিয়নের কৃষকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস ও কৃষি কর্মকর্তারা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য দিয়েছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ভারতের দিক থেকে নেমে আসা ঢলে ১১ আগস্ট থেকে পদ্মা-মহানন্দা নদীতে পানি বাড়তে থাকে। এর ফলে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ও মহানন্দায় ৩২ সেন্টিমিটার নিচে থাকলেও জেলার দুই লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। ওইসব এলাকার নিম্নাঞ্চলগুলো পানিতে তলিয়ে রয়েছে। ইতিমধ্যে বন্যায় ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ অনেক গ্রামীণ সড়ক নষ্ট হয়ে গেছে। শনিবার সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের কাজিপাড়ায় শুক্রবার বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকায় মাঝে মধ্যে কোথাও ধানের পাতা ও শীষ দেখা যাচ্ছে। কোথাও পুরোপুর তলিয়ে গেছে। ওই এলাকার কৃষক মতিউর রহমান বলেন, এবার ৬ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলেন। কয়েক দিন আগেও ভালো ফলনের স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। কিন্তু মহানন্দা নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় তলিয়ে গেছে ধান। ধানের জমি তলিয়ে যাওয়ায় তিনি ব্যাপক ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন তিনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কানিজ তাসনোভা জানান, এবারে বন্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় ১ হাজার ৮৮ হেক্টর ফসলি জমি নিমজ্জিত হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ১২ হেক্টর আউশ ধান, ৭১ হেক্টর সবজি ও ৫ হেক্টর অন্যান্য ফসল রয়েছে। এর মধ্যে বেশি ক্ষতি হয়েছে নারায়ণপুর ইউনিয়নে।

শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, শিবগঞ্জ উপজেলায় আনুমানিক ১ হাজার ২০০ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে পাঁকা ইউনিয়নে বেশি ক্ষতি হয়েছে। আর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুর্লভপুর ও উজিরপুর ইউনিয়নে। এসব এলাকায় আউশ ধান, শাকসবজি আর মসলাজাতীয় ফসলের জমি বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।

শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাকিব আল রাব্বি বলেন, শিবগঞ্জে বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে মানুষের ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রান্তিক কৃষকরা। বন্যাকবলিত এলাকায় উপজেলা প্রশাসন থেকে তাৎক্ষণিক সহায়তা দেয়া হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ময়েজউদ্দীন বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে রয়েছে। একদিন অপরিবর্তিত থাকার পর শনিবার সকাল থেকে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। বিকেল পর্যন্ত পদ্মায়-মহানন্দায় ২ সেন্টিমিটার পানি কমেছে। ভারতের দিক থেকে নেমে আসা ঢলে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ও মহানন্দায় ৩২ সেন্টিমিটার নিচে থাকলেও জেলার দুই লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ওইসব এলাকার নিম্নাঞ্চলগুলো এখনও পানিতে তলিয়ে রয়েছে।

আরবিসি/২২ মার্চ/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category