আরবিসি ডেস্ক : ঘরের মাঠে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠা বাংলাদেশ অবশেষে হার মেনেছে। পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের চতুর্থটিতে ৩ উইকেটের সান্ত্বনার জয় পায় অজিরা।
এদিন স্বাগতিক ব্যাটসম্যানদের চূড়ান্ত ব্যর্থতা ও সাকিব আল হাসানের এক ওভারে ৫ ছক্কা হজমের কারণেই মূলত হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে। প্রথম ৩ ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত করা বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্যবধান ৩-১ করল অস্ট্রেলিয়া।
তবে শেষ পর্যন্ত ছেড়ে কথা বলেনি বাংলাদেশ। মোস্তাফিজরা স্বল্প পুঁজি নিয়েও লড়াই করে যান ১৯তম ওভার পর্যন্ত।
শনিবার (০৭ আগস্ট) মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৬টায় ম্যাচটি মাঠে গড়ায়। তবে ব্যাটিং ব্যর্থতায় প্রথমে ব্যাট করা বাংলাদেশ নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১০৪ রান করতে পারে। জবাবে ৭ উইকেট হারিয়ে ও ৬ বল বাকি থাকতে জয় তুলে নেয় সফরকারীরা।
ফিল্ডিংয়ে নেমে সাকিবের একটি ওভার ছাড়া এখন পুরো ম্যাচের নিয়ন্ত্রণই ছিল বাংলাদেশ। ১০৫ রানের লক্ষ্যে নেমে এদিনও শুরুতে উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। মাহেদী হাসান বোল্ড করেন অজি অধিনায়ক ম্যাথিউ ওয়েডকে। এরপর নাসুম আহমেদ আরেক ওপেনার বেন ম্যাকডারমোটকে এলবির ফাঁদে ফেলেন।
কিন্তু প্রথম ওভারে মাত্র ৫ রান দেন সাকিব। তবে দলীয় চতুর্থ ও নিজের চতুর্থ ওভারে বল করতে এসে দিশেহারা হয়ে পড়লেন সাকিব আল হাসান। অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ান ৫টি বিশাল ছক্কা হাঁকালেন। ওভারের শুধু চতুর্থ বলটি ডট দেন তিনি।
পরে অবশ্য ১৫ বলে ৩৯ রান করা ক্রিস্টয়ানকে বিদায় করেন মোস্তাফিজুর রহমান। রান আউট হয়ে ফিরে যান মইসেস হেনরিকেস। আর দ্রুতই মোস্তাফিজের বলে এলবি হয়ে ফেরেন অ্যালেক্স ক্যারি। মূলত ১১ রান করা মিচেল মার্শকে বোল্ড করে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন মাহেদী। শেষদিকে অ্যাশটন অ্যাগার শরিফুলের বলে আউট হলেও কার্যকরী ২৭ বলে ২৭ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যান।
আগের ম্যাচের মতো এদিনও ৪ ওভারে মাত্র ৯ রান খরচা করেন মোস্তাফিজ। তবে এদিন একটি মেডেন নেওয়ার পাশাপাশি ২টি উইকেট তুলে নেন। ৪ ওভারে ১৭ রানে ২ উইকেট পান মাহেদীও। একটি করে উইকেট পান নাসুম ও শরিফুল। তবে সাকিব ৪ ওভারে ৫০ রান দিয়ে উইকেট শূন্য থাকেন।
টস জিতে এর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে প্রথমে ব্যাট করা বাংলাদেশ বিপর্যয়ে পড়ে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। উদ্বোধনী জুটিতে মোহাম্মদ নাঈম ও সৌম্য সরকার মিলে ৩.৩ ওভারে ২৪ রান তুলে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দেন। তবে হ্যাজেলউডের শিকার হয়ে ব্যক্তিগত ৮ রান করে আউট হওয়া ওপেনার সৌম্য সরকার ফের ব্যর্থতার পরিচয় দেন।
৪ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। দলীয় ৪৮ রানে সাকিব আল হাসান জস হ্যাজেলউডের বলে উইকেটরক্ষক ম্যাথিউ ওয়েডকে ক্যাচ দেন। ২৬ বলে ১৫ রান করেন তিনি। আর ১১তম ওভারের শেষ দুই বলে দলীয় ৫১ রানের মাথায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও নুরুল হাসান সোহানকে হারায় বাংলাদেশ। দুজনকেই শূন্য রানে এলবি করে পরের হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান স্পিনার মিচেল সোয়েপসন। তবে নিজের পরের ওভারে প্রথম বলে কোনো উইকেট না পাওয়ায় তা আর হয়নি।
পর পর দুই ওভারে নাঈম ও আফিফ হোসেনকে হারিয়ে আরও বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ১৫তম ওভারে সোয়েপসনের তৃতীয় শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর করা নাঈম। ৩৬ বলে ২টি চারে ২৮ করেন তিনি। আর পরের ওভারে ১৭ বলে ২০ রান করা আফিফ অ্যাশটন অ্যাগারকে উইকেট দিয়ে আসেন। তরুণ প্রতিভাবান শামীম হোসেনও কিছু করতে পারেননি। ব্যক্তিগত ৩ রানে অ্যান্ড্রু টাইয়ের বলে অ্যালেক্স ক্যারিকে ক্যাচ দেন।
তবে শেষদিকে এসে টাইগারদের ১০০ রানের কোটা পূরণ করতে সাহায্য করেন মেহেদী হাসান। তিনি ১৬ বলে একটি চার ও একটি ছক্কায় ২৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে টাইয়ের শিকার হন তিনি। ইনিংসের শেষ বলে টাইয়ের তৃতীয় শিকার হন শরিফুল ইসলাম।
আরবিসি/০৭ আগস্ট/ রোজি