• সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৩ অপরাহ্ন

মান্দায় অবশেষে মুক্ত সেই তিন পরিবার

Reporter Name / ৯৬ Time View
Update : শুক্রবার, ৬ আগস্ট, ২০২১

মান্দা প্রতিনিধি: অবশেষে মুক্ত হলেন নওগাঁর মান্দায় একঘরে হয়ে থাকা তিন পরিবার। তাদের ওপর থেকে আরোপিত সকল বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছেন সমাজপতিরা। সহাবস্থানে থেকে সৌহার্দ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করতে একমত হয়েছেন হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের লোকজন। এতে আবারো সুবাতাস বইতে শুরু করেছে উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকা ভাতহন্ডা গ্রামে।

শুক্রবার সকালে মর্ডাণ ক্লাব চত্বরে গ্রামবাসীর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করেন দুই কমিউনিটির সমাজপতিরা। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ব্রজেন্দ্রনাথ সাহা, সমাজপতি সামসুল আলম মন্ডল ও ধীরেন্দ্রনাথ সাহা এবং গ্রামবাসীর পক্ষে রহিদুল ইসলাম ও সুরুজ আলী। অন্যদিকে একঘরে হয়ে থাকা পরিবারের পক্ষে বক্তব্য দেন শ্রীকৃষ্ণ প্রামানিক, রামকৃষ্ণ প্রামানিক ও বিউটি রানী।

সমাজপতি সামসুল আলম মন্ডল বলেন, তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে গ্রামের তিন পরিবারকে একঘরে করে রাখা হয়েছিল। যা কারোর জন্যই কাম্য ছিল না। ভুলটি বুঝতে পেরে পরিবারগুলোর ওপর থেকে সকল প্রকার বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয়েছে। সাবেক চেয়ারম্যান ব্রজেন্দ্রনাথ সাহার নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার রাতে সমঝোতা বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেন গ্রামবাসী।

আরেক সমাজপতি ধীরেন্দ্রনাথ সাহা বলেন, ভাতহন্ডা গ্রামে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে স্বহাবস্থানে বসবাস করে আসছে। এ গ্রামে দুই সম্প্রদায়ের মধ্য অতীতে কোন ভেদাভেদ ছিল না। সামান্য ভুল বোঝাবুঝির কারণে গ্রামে অশান্তির সৃষ্টি হয়। বিষয়টি অনুধাবন করে সকল বিরোধের নিরসন করে নেওয়া হয়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবারের রামকৃষ্ণ প্রামানিক জানান, ‘গ্রামের লোকজন আগের মতই চলাফেরা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইতোমধ্যে প্রতিবেশিরা আমাদের বাড়িতে যাওয়া-আসা করছেন। দেখা হলে গ্রামের অন্যরাও কথা বলছেন। এখন খুব ভাল লাগছে। এ অবস্থা যেন অটুট থাকে সেই প্রত্যাশা করছি।’

সাবেক চেয়ারম্যান ব্রজেন্দ্রনাথ সাহা বলেন, ভাতহন্ডা গ্রামে দুই সম্প্রদায়ের লোকজনের মাঝে অতীতে কোন বিরোধ ছিল না। অনাকাঙ্খিভাবে একটা জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিল। বিষযটি নিয়ে ইউএনও আবু বাক্কার সিদ্দিক ও মান্দা থানার ওসি শাহিনুর রহমানের পরামর্শে ভুল বোঝাবুঝির অবসান করে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার যেন আর অবতারনা না হয় সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকবে গ্রামবাসী।

মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, একঘরে করে রাখার বিষয়টি আগে জানা ছিল না। সংবাদ প্রকাশের পর ভাতহন্ডা গ্রামে পুলিশ পাঠিয়ে অবস্থা পর্যবেক্ষণসহ ইউএনওকে নিয়ে সমঝোতা বৈঠক করা হয়েছে। নিজেরাই বিরোধ নিরসন করে নেওয়া একটা ভালো সংবাদ।

এ প্রসঙ্গে ইউএনও আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, ‘বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মান্দা থানার ওসিকে নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে গ্রামবাসীর সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। গ্রামবাসী ভুল বুঝতে পেরে নিজেরাই বিরোধ নিষ্পত্তি করে নিয়েছেন এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে সে বিষয়ে সবসময় নজরদারী থাকবে।

আরবিসি/০৬ আগস্ট/ রোজি

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category